নিউইয়র্ক ০২:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আলজাজিরার রিপোর্ট প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান : সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচার চলছে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৪৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ১৫৭ বার পঠিত

ঢাকা ডেস্ক: সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, জাতির গর্ব, দেশের গর্ব সেনাবাহিনীকে নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চলছে; যাতে একটি বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। কিন্তু সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য ঘৃণাভরে এ ধরনের অপচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেছেন। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আর্মি এভিয়েশন গ্রæপের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আলজাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমাদের চেইন অব কমান্ডে যারা আছেন, সবাই এ ব্যাপারে সতর্ক। সেনাবাহিনীতে এ ধরনের অপপ্রচার বিন্দুমাত্র আঁচ ফেলতে পারবে না। সেনাবাহিনী দেশের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সংবিধানকে সমুন্নত রাখার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ, বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুগত। বর্তমান সরকারের যে কোনো আদেশ-নির্দেশ পালনে সদাপ্রস্তুত। দেশের অভ্যন্তরীণ, বহির্বিশ্বে যে কোনো সমস্যা মোকাবিলার জন্য সাংবিধানিকভাবে আমরা শপথবদ্ধ।’
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় প্রকাশিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি নিয়ে প্রথমবারের মত সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। ছবি: নিউজ ২৪ চ্যানেলের সৌজন্যে
জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে মামলা আছে, সাজা আছে; কিন্তু গতকাল যদি আপনার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকে, তাহলে আপনাকে কি আজ ফিউজিটিভ (পলাতক) বলা যাবে? আপনাকে কি সাজাপ্রাপ্ত বলা যাবে? যখনই আপনি অব্যাহতি পেয়ে যান কোনো একটা চার্জ থেকে, তার পরের দিন থেকে আপনি যে কোনো মুক্ত নাগরিকের মতো।’
তিনি বলেন, ‘আমার ভাইদের সম্পর্কে যে অপপ্রচারগুলো এসেছে, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া আছে। খুব শিগগির আমার পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেনাপ্রধান হিসাবে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি, আমার অবস্থান ও দায়িত্ব সম্পর্কে আমি সম্পূর্ণ সচেতন। কী করলে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে, আমার দায়িত্ববোধ খর্ব হতে পারে-এ বিষয়ে আমি সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল।’
মালয়েশিয়ায় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করা প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সঙ্গে আমি মালয়েশিয়ায় যখন দেখা করেছি, তখন তার নামে কোনো মামলা ছিল না। ষড়যন্ত্রমূলক যে মামলাটা ছিল, সেটিও অব্যাহতিপ্রাপ্ত ছিল। সে অব্যাহতি মার্চ মাসে হয়েছিল, এপ্রিলে আমি গিয়েছিলাম।’
জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘এখানে আলজাজিরা যে স্টেটমেন্ট দিয়েছে, সেটি সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে দিয়েছে। কারণ, সেদিন আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে না কোনো সাজা ছিল, না তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল। তার আগেই মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
আলজাজিরার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের সময় আমার যে চিত্র ধারণ করা হয়েছে, সেনাপ্রধান হিসাবে আমি মনে করি, যখন আমি অফিশিয়াল ক্যাপাসিটিতে কোথাও থাকব, তখন আমার নিরাপত্তা অফিশিয়ালি নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। যেখানেই যাই, হোস্ট কান্ট্রি তা করে থাকে এবং সেখানে আমার অতিরিক্ত কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু যখন আমি কোথাও আমার ব্যক্তিগত সফরে থাকি, হয়তো আসার সময় কোনো ট্রানজিটে
আত্মীয়স্বজনের কাছে যাই, সে সময় অফিশিয়াল কোনো প্রটোকল ব্যবহার করা আমি সমীচীন মনে করি না। আমি মনে করি সেটা অপচয়। সেটা আমার জন্য উচিত নয়। সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে যদি কেউ কিছু করে থাকে, তাদের উদ্দেশ্য অসৎ। আপনারা তো এখন ভালো করে জানেন। আমাদের রিজয়েন্ডার পাওয়ার পর আপনারা বুঝতে পারছেন, যারা এই কাজগুলো করেছে, কেন করেছে, তাদের উদ্দেশ্য কী হতে পারে।’
বারবার কেন আপনাকে টার্গেট করা হয়-এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, ‘সেটার দায়িত্ব আপনাদের (সাংবাদিকদের) ওপর ছেড়ে দিলাম। আপনারা বুঝে নেন, খুঁজে নেন কেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানকে টার্গেট করা হচ্ছে। কারণ, সেনাপ্রধানকে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন। সেনাপ্রধানকে হেয়প্রতিপন্ন করা মানে প্রধানমন্ত্রীকে হেয়প্রতিপন্ন করা।’
জেনারেল আজিজ আহমেদ আরও বলেন, ‘আমার কারণে যেন সেনাবাহিনী, সরকার বিব্রত না হয়, বিতর্কিত না হয়-সে ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ সচেতন। যা কিছু আপনারা শুনছেন, এগুলোর কোনো প্রমাণ নেই। বিভিন্ন জায়গা থেকে কাটপিস সন্নিবেশ করে তারা (আলজাজিরা) এগুলো করতে পারবে; কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য হাসিল হবে না। সেটি আপনারা আপনাদের কলমের মাধ্যমে জবাব দিয়েছেন। সে জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
আলজাজিরার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, ‘এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের (আলজাজিরা) বিরুদ্ধে কিছু করার থাকবে না। আমি নিশ্চিত, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সংস্থা হয়তো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’ (দৈনিক যুগান্তর)

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আলজাজিরার রিপোর্ট প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান : সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপপ্রচার চলছে

প্রকাশের সময় : ০৯:৪৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ঢাকা ডেস্ক: সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, জাতির গর্ব, দেশের গর্ব সেনাবাহিনীকে নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চলছে; যাতে একটি বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। কিন্তু সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য ঘৃণাভরে এ ধরনের অপচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেছেন। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আর্মি এভিয়েশন গ্রæপের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আলজাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমাদের চেইন অব কমান্ডে যারা আছেন, সবাই এ ব্যাপারে সতর্ক। সেনাবাহিনীতে এ ধরনের অপপ্রচার বিন্দুমাত্র আঁচ ফেলতে পারবে না। সেনাবাহিনী দেশের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সংবিধানকে সমুন্নত রাখার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ, বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুগত। বর্তমান সরকারের যে কোনো আদেশ-নির্দেশ পালনে সদাপ্রস্তুত। দেশের অভ্যন্তরীণ, বহির্বিশ্বে যে কোনো সমস্যা মোকাবিলার জন্য সাংবিধানিকভাবে আমরা শপথবদ্ধ।’
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় প্রকাশিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি নিয়ে প্রথমবারের মত সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। ছবি: নিউজ ২৪ চ্যানেলের সৌজন্যে
জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে মামলা আছে, সাজা আছে; কিন্তু গতকাল যদি আপনার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকে, তাহলে আপনাকে কি আজ ফিউজিটিভ (পলাতক) বলা যাবে? আপনাকে কি সাজাপ্রাপ্ত বলা যাবে? যখনই আপনি অব্যাহতি পেয়ে যান কোনো একটা চার্জ থেকে, তার পরের দিন থেকে আপনি যে কোনো মুক্ত নাগরিকের মতো।’
তিনি বলেন, ‘আমার ভাইদের সম্পর্কে যে অপপ্রচারগুলো এসেছে, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া আছে। খুব শিগগির আমার পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেনাপ্রধান হিসাবে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি, আমার অবস্থান ও দায়িত্ব সম্পর্কে আমি সম্পূর্ণ সচেতন। কী করলে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে, আমার দায়িত্ববোধ খর্ব হতে পারে-এ বিষয়ে আমি সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল।’
মালয়েশিয়ায় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করা প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সঙ্গে আমি মালয়েশিয়ায় যখন দেখা করেছি, তখন তার নামে কোনো মামলা ছিল না। ষড়যন্ত্রমূলক যে মামলাটা ছিল, সেটিও অব্যাহতিপ্রাপ্ত ছিল। সে অব্যাহতি মার্চ মাসে হয়েছিল, এপ্রিলে আমি গিয়েছিলাম।’
জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘এখানে আলজাজিরা যে স্টেটমেন্ট দিয়েছে, সেটি সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে দিয়েছে। কারণ, সেদিন আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে না কোনো সাজা ছিল, না তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল। তার আগেই মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
আলজাজিরার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের সময় আমার যে চিত্র ধারণ করা হয়েছে, সেনাপ্রধান হিসাবে আমি মনে করি, যখন আমি অফিশিয়াল ক্যাপাসিটিতে কোথাও থাকব, তখন আমার নিরাপত্তা অফিশিয়ালি নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। যেখানেই যাই, হোস্ট কান্ট্রি তা করে থাকে এবং সেখানে আমার অতিরিক্ত কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু যখন আমি কোথাও আমার ব্যক্তিগত সফরে থাকি, হয়তো আসার সময় কোনো ট্রানজিটে
আত্মীয়স্বজনের কাছে যাই, সে সময় অফিশিয়াল কোনো প্রটোকল ব্যবহার করা আমি সমীচীন মনে করি না। আমি মনে করি সেটা অপচয়। সেটা আমার জন্য উচিত নয়। সেই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে যদি কেউ কিছু করে থাকে, তাদের উদ্দেশ্য অসৎ। আপনারা তো এখন ভালো করে জানেন। আমাদের রিজয়েন্ডার পাওয়ার পর আপনারা বুঝতে পারছেন, যারা এই কাজগুলো করেছে, কেন করেছে, তাদের উদ্দেশ্য কী হতে পারে।’
বারবার কেন আপনাকে টার্গেট করা হয়-এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, ‘সেটার দায়িত্ব আপনাদের (সাংবাদিকদের) ওপর ছেড়ে দিলাম। আপনারা বুঝে নেন, খুঁজে নেন কেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানকে টার্গেট করা হচ্ছে। কারণ, সেনাপ্রধানকে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন। সেনাপ্রধানকে হেয়প্রতিপন্ন করা মানে প্রধানমন্ত্রীকে হেয়প্রতিপন্ন করা।’
জেনারেল আজিজ আহমেদ আরও বলেন, ‘আমার কারণে যেন সেনাবাহিনী, সরকার বিব্রত না হয়, বিতর্কিত না হয়-সে ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ সচেতন। যা কিছু আপনারা শুনছেন, এগুলোর কোনো প্রমাণ নেই। বিভিন্ন জায়গা থেকে কাটপিস সন্নিবেশ করে তারা (আলজাজিরা) এগুলো করতে পারবে; কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য হাসিল হবে না। সেটি আপনারা আপনাদের কলমের মাধ্যমে জবাব দিয়েছেন। সে জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
আলজাজিরার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, ‘এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের (আলজাজিরা) বিরুদ্ধে কিছু করার থাকবে না। আমি নিশ্চিত, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সংস্থা হয়তো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’ (দৈনিক যুগান্তর)