নিউইয়র্ক ১২:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আদালতে যা বললেন মান্না : ১০ দিনের রিমান্ডে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৫১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
  • / ৭০৩ বার পঠিত

ঢাকা: ডাকসু’র সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না আদালাতে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আমি বলতে চাই, আমার বক্তব্য একপেশে করা হয়েছে। আমি গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করি। তবে সহিংসতা পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা সমর্থন করি না। অপরদিকে মান্নাকে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
দৈনিক নয়া দিগন্তের খবরে বলা হয়েছে: আদালতে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আমি অসুস্থ ব্যক্তি। আমার বয়স ৬৪ বছর। যে অভিযোগে আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি বলতে চাই, আমার বক্তব্য একপেশে করা হয়েছে। বাকি অংশটুকু বাদ দেয়া হয়েছে। বাকি অংশ পেলে বুঝতে পারবো, আসলে সরকার আমার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ এনেছে। আমাকে যদি জিজ্ঞাসাবাদই করতে হয় তবে যেন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আদালত যদি আমাকে ১/২ ঘণ্টা টিভিতে বলার সুযোগ দেন তবে আমি বলতে পারব আমি কি বলেছি। একজন পুলিশ কর্মকর্তা তা বুঝতে পারেন না। সেজন্য দেশবাসীর জানা উচিত আমি কি বলেছি।
মান্না বলেন, আমি গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করি। তবে সহিংসতা পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা সমর্থন করি না। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের কথা বলেছি তবে হত্যা বা সহিংসতার কথা বলেনি। গণতান্ত্রিক আন্দোলন বলতে যা বুঝায় তাই আমি সমর্থন করি।
যে প্রবাসীর ব্যক্তির কথা বলা হচ্ছে, সেই প্রবাসী ব্যক্তি কে সরকার তার নাম সংগ্রহ করেনি। যা একপেশে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী বা বিমানবাহিনীর যে কর্মকর্তাদের কথা বলা হয়েছে তাদের নামও সরকার উল্লেখ করেনি। আসলে সবকিছুই একপেশে হয়েছে। আমি কোনো সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনীর কর্মকর্তার সাথে কথা বলিনি।
তিনি বলেন, তবে গত ৫ জানুয়ারী নির্বাচন অগণতান্ত্রিক। যা দেশী-বিদেশী সবাই জানে। এ বক্তব্য দেয়ায় ক্ষোভে দু:খে ফেটে পড়েন সরকার দলীয় আইনজীবীরা। সেজন্য তারা তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারপরও মান্না তার কথা বলা বন্ধ করেননি।
মান্না আরো বলেন, আমি সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র লিপ্ত নই। কোনো বাহিনীকে উস্কানী দেইনি। আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ, শান্তির কথা বলি।
মাহমুদুর রহমান মান্নকে বেলা ৩টা ১৫ মিনিটের সময় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী আদালতে গারদখানায় নিয়ে আসে। তখন আদালতে ব্যাপক সংখ্যক আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা তাকে করতালির মাধ্যমে অভিবাদন জানান। তারা বলতে থাকেন, ‘মান্না তোমার ভয় নাই, আমরা আছি তোমার সাথে’।
বেলা ৩ টা ১৮ মিনিটের সময কোর্ট গারদ (হাজত) থেকে আদালতে হাজির করা হলে সরকারপন্থী আইনজীবীরা তাকে বসতে দিতে রাজি ছিল না। তখন আইনজীবীরা আদালতে তার বসার বিষয়ে অনুমতি চাইলে আদালত বেঞ্চ থেকে কাঠগড়ার একটি টুল দেন বসার জন্য। তখন মান্না ওই টুলে আর বসেননি। সার্বক্ষণিক মান্না কাঠগড়ায় পাঞ্জাবী পরিহিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকেন।
দৈনিক যুগান্তরের খবরে বলা হয়: নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে আদালতে হাজির করে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমানের আদালত বিকালে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মান্নার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২৫ ফেব্রুয়ারী বুধবার মামলার তদন্তের জন্য গুলশান থানার এসআই আব্দুল বারী আদালতে এ আবেদন জানান।
বুধবার দুপুরে ডিবি কার্যালয় থেকে মান্নাকে আদালতে হাজির করার জন্য নেয়া হয়। তাকে রাষ্ট্রদোহ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এটি জামিন অযোগ্য মামলা। এর আগে সকালে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন সরকার উৎখাতের বিষয়ে মান্নাকে জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পেলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হবে। বুধবার সকাল ১১টা দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি যুগ্ম কমিশনার এ কথা জানান।
২৩ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাত ৩টার দিকে বনানীর একটি বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ২১ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা তাকে গুলশান থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিদ্রোহে প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ মামলায় মান্না ছাড়াও অজ্ঞাতনামা একজনকে আসামী করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মান্নার বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ১৩১ ধারায় মামলা করা হয়েছে। এসআই সোহেল রানা মামলাটির বাদী। মামলায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মান্নাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
বিভিন্ন মিডিয়ায় ওই টেলিফোন আলাপ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশের পর সমালোচনার মুখে পড়েন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। ওই ফোনালাপের একটিতে সরকার উৎখাতে সামরিক হস্তক্ষেপে আগ্রহ প্রকাশ করেন নাগরিক ঐক্যজোটের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

আদালতে যা বললেন মান্না : ১০ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশের সময় : ১১:৫১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৫

ঢাকা: ডাকসু’র সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না আদালাতে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আমি বলতে চাই, আমার বক্তব্য একপেশে করা হয়েছে। আমি গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করি। তবে সহিংসতা পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা সমর্থন করি না। অপরদিকে মান্নাকে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
দৈনিক নয়া দিগন্তের খবরে বলা হয়েছে: আদালতে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আমি অসুস্থ ব্যক্তি। আমার বয়স ৬৪ বছর। যে অভিযোগে আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি বলতে চাই, আমার বক্তব্য একপেশে করা হয়েছে। বাকি অংশটুকু বাদ দেয়া হয়েছে। বাকি অংশ পেলে বুঝতে পারবো, আসলে সরকার আমার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ এনেছে। আমাকে যদি জিজ্ঞাসাবাদই করতে হয় তবে যেন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আদালত যদি আমাকে ১/২ ঘণ্টা টিভিতে বলার সুযোগ দেন তবে আমি বলতে পারব আমি কি বলেছি। একজন পুলিশ কর্মকর্তা তা বুঝতে পারেন না। সেজন্য দেশবাসীর জানা উচিত আমি কি বলেছি।
মান্না বলেন, আমি গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করি। তবে সহিংসতা পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা সমর্থন করি না। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের কথা বলেছি তবে হত্যা বা সহিংসতার কথা বলেনি। গণতান্ত্রিক আন্দোলন বলতে যা বুঝায় তাই আমি সমর্থন করি।
যে প্রবাসীর ব্যক্তির কথা বলা হচ্ছে, সেই প্রবাসী ব্যক্তি কে সরকার তার নাম সংগ্রহ করেনি। যা একপেশে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী বা বিমানবাহিনীর যে কর্মকর্তাদের কথা বলা হয়েছে তাদের নামও সরকার উল্লেখ করেনি। আসলে সবকিছুই একপেশে হয়েছে। আমি কোনো সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনীর কর্মকর্তার সাথে কথা বলিনি।
তিনি বলেন, তবে গত ৫ জানুয়ারী নির্বাচন অগণতান্ত্রিক। যা দেশী-বিদেশী সবাই জানে। এ বক্তব্য দেয়ায় ক্ষোভে দু:খে ফেটে পড়েন সরকার দলীয় আইনজীবীরা। সেজন্য তারা তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারপরও মান্না তার কথা বলা বন্ধ করেননি।
মান্না আরো বলেন, আমি সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র লিপ্ত নই। কোনো বাহিনীকে উস্কানী দেইনি। আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ, শান্তির কথা বলি।
মাহমুদুর রহমান মান্নকে বেলা ৩টা ১৫ মিনিটের সময় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী আদালতে গারদখানায় নিয়ে আসে। তখন আদালতে ব্যাপক সংখ্যক আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা তাকে করতালির মাধ্যমে অভিবাদন জানান। তারা বলতে থাকেন, ‘মান্না তোমার ভয় নাই, আমরা আছি তোমার সাথে’।
বেলা ৩ টা ১৮ মিনিটের সময কোর্ট গারদ (হাজত) থেকে আদালতে হাজির করা হলে সরকারপন্থী আইনজীবীরা তাকে বসতে দিতে রাজি ছিল না। তখন আইনজীবীরা আদালতে তার বসার বিষয়ে অনুমতি চাইলে আদালত বেঞ্চ থেকে কাঠগড়ার একটি টুল দেন বসার জন্য। তখন মান্না ওই টুলে আর বসেননি। সার্বক্ষণিক মান্না কাঠগড়ায় পাঞ্জাবী পরিহিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকেন।
দৈনিক যুগান্তরের খবরে বলা হয়: নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে আদালতে হাজির করে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমানের আদালত বিকালে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মান্নার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২৫ ফেব্রুয়ারী বুধবার মামলার তদন্তের জন্য গুলশান থানার এসআই আব্দুল বারী আদালতে এ আবেদন জানান।
বুধবার দুপুরে ডিবি কার্যালয় থেকে মান্নাকে আদালতে হাজির করার জন্য নেয়া হয়। তাকে রাষ্ট্রদোহ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এটি জামিন অযোগ্য মামলা। এর আগে সকালে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন সরকার উৎখাতের বিষয়ে মান্নাকে জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পেলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হবে। বুধবার সকাল ১১টা দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি যুগ্ম কমিশনার এ কথা জানান।
২৩ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাত ৩টার দিকে বনানীর একটি বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ২১ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা তাকে গুলশান থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিদ্রোহে প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ মামলায় মান্না ছাড়াও অজ্ঞাতনামা একজনকে আসামী করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মান্নার বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ১৩১ ধারায় মামলা করা হয়েছে। এসআই সোহেল রানা মামলাটির বাদী। মামলায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মান্নাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
বিভিন্ন মিডিয়ায় ওই টেলিফোন আলাপ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশের পর সমালোচনার মুখে পড়েন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। ওই ফোনালাপের একটিতে সরকার উৎখাতে সামরিক হস্তক্ষেপে আগ্রহ প্রকাশ করেন নাগরিক ঐক্যজোটের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।