আওয়ামী লীগের বডি কেমিস্ট্রিতে আছে চুরি আর সন্ত্রাস: ফখরুল
- প্রকাশের সময় : ০৯:১৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
- / ৪৭ বার পঠিত
আওয়ামী লীগের বডি কেমিস্ট্রিতে আছে চুরি আর সন্ত্রাস। ওখান থেকে তারা বের হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে ময়মনসিংহ শহরের সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট মাঠে দলটির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যের শুরুতে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমি যখন ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা দিলাম, গাজীপুর পার হওয়ার পর মনে হলো হরতাল চলছে নাকি কারফিউ চলছে। রাস্তায় কোনো গাড়ি নেই, ট্রাক নেই। কিছু ছোট ছোট ট্রাকে আমাদের কিছু নেতা-কর্মীরা আসছে। এরপরে শুনলাম মাঝখানে লাঠিসোঁটা নিয়ে নাকি ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা দাঁড়িয়ে আছে।
তিনি বলেন, তারপর যখন কাছে পৌঁছলাম দেখলাম সোনার ছেলেরা লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেছে। আমাদের ছেলেরা তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে। শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আজকের সভা প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের মানুষ তারা কোনো বাধা মানবে না। তারা অবশ্যই এই দেশকে মুক্ত করে ছাড়বে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দুইটা জিনিস আওয়ামী লীগের বডি কেমিস্ট্রিতে আছে। ওখান থেকে তারা বের হতে পারে না। একটা হচ্ছে চুরি, আরেকটা হচ্ছে সন্ত্রাস। দেখবেন, তারা কথায় কথায় লাঠি নিয়ে আসবে, কথায় কথায় লাঠি নিয়ে আসবে, ভয় দেখাবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ চোরের দল, আমার কথা না। কথাটা আমার না। কথাটা ওদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের। ১৯৭৪ সালে যখন আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে দুর্ভিক্ষ হলো, সেই দুর্ভিক্ষের সময় তিনি বললেন- আমার তো সব চোরের দল। কম্বল গুলো যে আসলো বিদেশ থেকে, আমার কম্বল কোথায় গেল। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগ
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। একটা তলাবিহীন ঝুড়িকে তিনি সম্ভাবনাময় রূপ দিয়েছিলেন। তিনি বিদেশে লোক পাঠিয়েছিলেন। তাদের রেমিট্যান্সের টাকাতেই দেশ চলে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমরা এখানে এসেছি আমাদের দেশকে আবার আমাদের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে। আমরা এসেছি এই যে চেয়ারটা খালি আছে। কার জন্য? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য। তিনি আমাদের মাঝে নেই। তিনি আমাদের দলের প্রধান। তিনি গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাকে এখন মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে অন্ত্যরীণ করে রাখা হয়েছে। সেজন্য আমরা এই চেয়ারটা খালি রেখেছি আমাদের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সম্মেলনে।’
তিনি আরো বলেন, আপনাদের অনুরোধ জানাতে চাই, এই তরুণদের, আমাদের দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ, যাকে নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখি যে, তিনি আমাদের মুক্তির পথ দেখাচ্ছেন ও দেখাবেন- সেই আমাদের তরুণ নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে যদি ফিরিয়ে আনতে চাই, দেশনেত্রীর যদি মুক্তি চাই, আমাদের লাখ লাখ মানুষের মিথ্যা মামলা যদি প্রত্যাহার করতে চাই- তাহলে আপনাদের আমি অনুরোধ করব দয়া করে একটু বসেন।
এ সময় গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১৩৮০টা সিসি ক্যামেরা ছিল, পর্যাপ্ত নাকি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল, পুলিশ-র্যাব পাহারায় ছিল, তারপর ওই নির্বাচন দুপুরের মধ্যে বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে। এ থেকেই প্রমাণ হয়, দলীয় সরকারের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ৫ জন বীর সেনা ছাত্রদলের নূরে আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম, যুবদলের নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের শাওন, যশোরের আব্দুল আলিম তারা প্রাণ দিয়েছেন। রক্ত ঢেলে দিয়েছেন, পুলিশের গুলির সামনে বুকে পেতে দিয়ে আওয়াজ তুলেছে যে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে। আপনারা তাদের সম্মান দেখাতে চান, তাদের শ্রদ্ধা করতে চান, তাদের রক্তদানকে বৃথা যেতে দেবেন না বলে শপথ নিয়েছেন। ওই শপথে আজকে আমাদের অটুট থাকতে হবে।
সমাবেশের প্রধান অতিথি দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপি চেয়ারপার্সনে উপদেষ্টা মশিউর রহমান। সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলাম। পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ সফল করতে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলার নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন।
সমাবেশকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা শুরু হয় ময়মনসিংহ শহরে। গতকাল শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) মহানগর আওয়ামী লীগ নগরীর রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। আজও জেলা আওয়ামী লীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগ মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দের বাসায় হামলার চেষ্টা করা হয়, ওই দিন দুপুরে নতুন বাজার এলাকার পার্টি অফিসকে ঘিরে যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতারা মোটরসাইকেল দিয়ে মহড়া দেয়। সন্ধ্যায় টাউনহল এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় অন্তত ৪ জন আহত হন। সূএ : সাম্প্রতিক দেশকাল