নিউইয়র্ক ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সখীপুর পোস্ট অফিসে গ্রাহক ভোগান্তি ও অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:১৯:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৬০ বার পঠিত

টাঙ্গাইলের সখীপুর পোস্ট অফিসে সঞ্চয়পত্রের টাকা উত্তোলনে গ্রাহক ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও পোস্টমাস্টারের অসৌজন্যমূলক আচরণেও ক্ষুব্ধ-বিরক্ত অধিকাংশ গ্রাহক বলেও জানা গেছে।

গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন সঞ্চয়পত্র গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। কয়েকজন গ্রাহক পোস্টমাস্টার জেনারেল কেন্দ্রীয় সার্কেল বরাবর লিখিত অভিযোগও করেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা বলছেন- এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন মৌখিক অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ হাতে পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিন পরিদর্শন ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় তিনমাস আগে সখীপুর পোস্টঅফিসে দেলোয়ার হোসেন পোস্টমাস্টার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও মেয়াদ শেষ (ম্যাচিউর) হওয়ার পর আসল টাকা উত্তোলনে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। নিয়ম বহির্ভূতভাবে মুনাফা থেকে টাকা কেটে রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া মেয়াদ শেষে আসল টাকা উত্তোলনেও প্রতিজন গ্রাহকের কাছ থেকে দুই থেকে চার হাজার টাকা করে রেখে দেওয়া হচ্ছে।

পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর উপজেলার বংশী নগর এলাকার রওশন আরা জানান, সখীপুর উপজেলা পোস্ট অফিসে তাঁর তিন বছর মেয়াদি পনেরো লাখ টাকার একটি সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ (ম্যাচিউর) হয়েছে। দুই মাস আগে টাকা উত্তোলনের জন্য বই জমা দিয়েছিলেন। পোস্টমাস্টার প্রথমে দুই হাজার, পরে টাকার অংক বেশি বলে চার হাজার টাকা দাবি করেন।

টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় টাঙ্গাইল পোস্ট অফিস থেকে বই নিয়ে আসতে হবে বলে জানান। পরে বইয়ের জন্য টাঙ্গাইল গিয়ে জানা যায়, ওই বইটি বেশ কয়েকদিন আগেই সখীপুরের পোস্টমাস্টার নিজে সই করে নিয়ে এসেছেন। রওশন আরা আরও বলেন, টাকার জন্য সখীপুর পোস্ট অফিসে গেলে পোস্টমাস্টার তাঁকে নানাভাবে কটূক্তি করেন।

উপজেলার তক্তারচালা গ্রামের পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক রেবেকা সুলতানা পোস্টমাস্টার জেনারেল কেন্দ্রীয় সার্কেল বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে তিনি প্রতিমাসে ১২ হাজার ৯৬ টাকা পান। নতুন পোস্টমাস্টার প্রতি মাসেই ওই ৯৬ টাকা হাতে কেটে রেখে দিচ্ছেন।

প্রতিবাদ করলেই তিনি গালিগালাজ শুরু করেন। একই রকম অভিযোগ করেন উপজেলার আড়াইপাড়া গ্রামের রোজিনা (৩২) নামের এক সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক। প্রতিমাসে পোস্ট অফিসের ৩ হাজার ৬৪৮ টাকায় তাঁর সংসার চলে। কিন্তু পোস্টমাস্টারের অসৌজন্যমূলক আচরণে কেঁদে কেঁদে বের হচ্ছিলেন রোজিনা।

উপজেলার বগা প্রতিমা গ্রামের শিউলী আক্তার ও বাঘেরবাড়ি গ্রামের নার্গিস আক্তারও ওই পোস্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সখীপুর ডাক ঘরের পোস্ট মাস্টার দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সত্য নয়। সারাদেশের পোস্ট অফিসগুলোতেই টাকার সঙ্কট রয়েছে। প্রতিদিন অনেক লোকজন এসে টাকার জন্য ভিড় করেন। অনেককেই সময়মত টাকা দিতে পারিনা। কেউ কেউ সময়মত টাকা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে থাকতে পারেন।

এ বিষয় জানতে চাইলে টাঙ্গাইলের ডিপুটি পোস্ট মাস্টার মো. ওমর ফারুক মোবাইল ফোনে বলেন, সখীপুর পোস্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে ওই পোস্টমাস্টারকে ডেকে এনে এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তবে লিখিত কোন অভিযোগ এখনো হাতে পাইনি। গ্রাহক হয়রানি ও গ্রাহকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে থাকলে সংশ্লিষ্ট পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সখীপুর পোস্ট অফিসে গ্রাহক ভোগান্তি ও অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ১০:১৯:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১

টাঙ্গাইলের সখীপুর পোস্ট অফিসে সঞ্চয়পত্রের টাকা উত্তোলনে গ্রাহক ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও পোস্টমাস্টারের অসৌজন্যমূলক আচরণেও ক্ষুব্ধ-বিরক্ত অধিকাংশ গ্রাহক বলেও জানা গেছে।

গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন সঞ্চয়পত্র গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। কয়েকজন গ্রাহক পোস্টমাস্টার জেনারেল কেন্দ্রীয় সার্কেল বরাবর লিখিত অভিযোগও করেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা বলছেন- এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন মৌখিক অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ হাতে পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিন পরিদর্শন ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় তিনমাস আগে সখীপুর পোস্টঅফিসে দেলোয়ার হোসেন পোস্টমাস্টার হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও মেয়াদ শেষ (ম্যাচিউর) হওয়ার পর আসল টাকা উত্তোলনে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। নিয়ম বহির্ভূতভাবে মুনাফা থেকে টাকা কেটে রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া মেয়াদ শেষে আসল টাকা উত্তোলনেও প্রতিজন গ্রাহকের কাছ থেকে দুই থেকে চার হাজার টাকা করে রেখে দেওয়া হচ্ছে।

পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর উপজেলার বংশী নগর এলাকার রওশন আরা জানান, সখীপুর উপজেলা পোস্ট অফিসে তাঁর তিন বছর মেয়াদি পনেরো লাখ টাকার একটি সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ (ম্যাচিউর) হয়েছে। দুই মাস আগে টাকা উত্তোলনের জন্য বই জমা দিয়েছিলেন। পোস্টমাস্টার প্রথমে দুই হাজার, পরে টাকার অংক বেশি বলে চার হাজার টাকা দাবি করেন।

টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় টাঙ্গাইল পোস্ট অফিস থেকে বই নিয়ে আসতে হবে বলে জানান। পরে বইয়ের জন্য টাঙ্গাইল গিয়ে জানা যায়, ওই বইটি বেশ কয়েকদিন আগেই সখীপুরের পোস্টমাস্টার নিজে সই করে নিয়ে এসেছেন। রওশন আরা আরও বলেন, টাকার জন্য সখীপুর পোস্ট অফিসে গেলে পোস্টমাস্টার তাঁকে নানাভাবে কটূক্তি করেন।

উপজেলার তক্তারচালা গ্রামের পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক রেবেকা সুলতানা পোস্টমাস্টার জেনারেল কেন্দ্রীয় সার্কেল বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে তিনি প্রতিমাসে ১২ হাজার ৯৬ টাকা পান। নতুন পোস্টমাস্টার প্রতি মাসেই ওই ৯৬ টাকা হাতে কেটে রেখে দিচ্ছেন।

প্রতিবাদ করলেই তিনি গালিগালাজ শুরু করেন। একই রকম অভিযোগ করেন উপজেলার আড়াইপাড়া গ্রামের রোজিনা (৩২) নামের এক সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক। প্রতিমাসে পোস্ট অফিসের ৩ হাজার ৬৪৮ টাকায় তাঁর সংসার চলে। কিন্তু পোস্টমাস্টারের অসৌজন্যমূলক আচরণে কেঁদে কেঁদে বের হচ্ছিলেন রোজিনা।

উপজেলার বগা প্রতিমা গ্রামের শিউলী আক্তার ও বাঘেরবাড়ি গ্রামের নার্গিস আক্তারও ওই পোস্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সখীপুর ডাক ঘরের পোস্ট মাস্টার দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সত্য নয়। সারাদেশের পোস্ট অফিসগুলোতেই টাকার সঙ্কট রয়েছে। প্রতিদিন অনেক লোকজন এসে টাকার জন্য ভিড় করেন। অনেককেই সময়মত টাকা দিতে পারিনা। কেউ কেউ সময়মত টাকা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে থাকতে পারেন।

এ বিষয় জানতে চাইলে টাঙ্গাইলের ডিপুটি পোস্ট মাস্টার মো. ওমর ফারুক মোবাইল ফোনে বলেন, সখীপুর পোস্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে ওই পোস্টমাস্টারকে ডেকে এনে এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তবে লিখিত কোন অভিযোগ এখনো হাতে পাইনি। গ্রাহক হয়রানি ও গ্রাহকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে থাকলে সংশ্লিষ্ট পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।