নিউইয়র্ক ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ২ বছরপূর্তি ২৪ এপ্রিল : ক্ষতিগ্রস্তদের ৩০ ভাগ ক্ষতিপূরণ পায়নি এখনও

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:২১:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল ২০১৫
  • / ৬৬৭ বার পঠিত

ঢাকা: রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ২ বছরপূর্তি হচ্ছে ২৪ এপ্রিল। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের সহায়তায় এগিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি ছিল অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানেরই। বিদেশী এসব নামি-দামি ব্র্যান্ডের ডোনার্স ট্রাস্ট ফান্ডে অর্থ দেয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান অর্থ না দেয়ায় এখনও ৩০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ বাকি রয়ে গেছে। দুর্ঘটনার সময় ওই ভবনে অবস্থিত ৫ কারখানায় মোট ২৯ ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরির কাজ চলছিল। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো শিগগিরই তাদের প্রতিশ্রুত অর্থ দেবে বলে আশা আইএলও’র। এর আগে দুই বারে ৭০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের। ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়া নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট পরিবারের সদস্যদের কাছে চিঠি দিয়েছিল আইএলও নেতৃত্বাধীন রানা প্লাজা সমন্বয় কমিটি।
এদিকে সোমবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা দিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে আদালতকে জানাতে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। আগামী ২৭ এপ্রিল তাদের এসব প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের করা রিট ও স্বপ্রণোদিত হয়ে হাইকোর্টের দেয়া অন্তর্র্বতীকালীন আদেশের শুনানিকালে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি আব্দুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন।
জানা গেছে, আইএলওসহ বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দাবি এবং অনুরোধের পরও ক্ষতিপূরণের অর্থ দেয়নি ১৫ ব্র্যান্ড। অথচ রানা প্লাজার সঙ্গে কোন রকম সম্পর্ক নেই এমন অনেক ব্র্যান্ডও এ তহবিলে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। নিহত এবং আহত শ্রমিকদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে আইএলওর নেতৃত্বে গত বছর ২৮ জানুয়ারি ‘রানা প্লাজা ডোনার্স ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করা হয়।
ক্ষতিপূরণ না দেয়া ব্র্যান্ডগুলো হচ্ছে- আডলার মোডমার্কেট, অ্যাসিনা রিটেইল, বেনেটন, ক্যার ফোর, ক্যাট ফ্যাশনস, গ্র্যাবালক, আইকোনিক্স, জেসি পেনি, ক্যানজি কিডস ফ্যাশন, এলসি ওয়াইকিকি, ম্যানিফাটুরা করোনা, এনকেডি, পিডব্লিউটি, রোব ডি ক্যাপা ও ইয়েস জি।
সূত্র জানায়, মোট ৩১ প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা এখন পর্যন্ত রানা প্লাজা ডোনার্স ফান্ডে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, তহবিলে ২ কোটি ১৫ লাখ ৭২ হাজার ডলার জমা পড়েছে। তহবিলে প্রয়োজন ৩ কোটি ডলার। এর মধ্যে ওয়ালমার্ট, প্রাইমার্কসহ ২০ ব্র্যান্ড তহবিলে সহায়তা দিলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এ পরিস্থিতিতে এসব ব্র্যান্ডকে তহবিলে অর্থ সহযোগিতা বাড়াতে অনুরোধ জানানো হয়েছে ক্লিন ক্লোথ ক্যাম্পেইনসহ (সিসিসি) বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে। তবে এসব নামি-দামি ব্র্যান্ডের মধ্যে ব্যতিক্রম হচ্ছে আয়ারল্যান্ডভিত্তিক ব্র্যান্ড প্রাইমার্ক। ক্ষতিপূরণ বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতির ৯৫ শতাংশ এ পর্যন্ত পরিশোধ করেছে কোম্পানিটি।
আইএলও’র প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তহবিলের অর্থ থেকে গত বছর ৫ কিস্তিতে আহত ও নিহত শ্রমিক পরিবারের ২,৭৭০ জন তাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের ৪০ শতাংশ পান। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২৯ কোটি ৩৯ লাখ ৬০ হাজার ৮৭২ টাকা। তবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের প্রাপ্ত সহায়তা ও এককালীন দেয়া ৫০ হাজার টাকা কর্তন করে রাখা হয়েছিল। আর এ বছর ৮ই এপ্রিল প্রথম কিস্তিতে ক্ষতিপূরণের বাকি ৬০ শতাংশের মধ্যে ৩০ শতাংশ অর্থ দেয়া হয় ২৯৬৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে। যার পরিমাণ ৩১ কোটি ২ লাখ ৩ হাজার ৮৪১ টাকা। মোট ৬ কিস্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রদান করা হয় ৭৫ কোটি ৮৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭১৩ টাকা। সমস্ত টাকা ডাচ-বাংলা ব্যাংক ও ‘বিকাশ’ একাউন্টের মাধ্যমে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ‘বিকাশ’ এর সার্ভিস চার্জ বাবদ ১ লাখ ৮২ হাজার ২৫০ টাকা ব্যয় হয়েছে। জানা গেছে, রানা প্লাজা সমন্বয় কমিটি গত বছর দাবিনামার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ধাপে ধাপে অর্থ দেয়া হয়েছিল। এ বছর সেটি সবাই একসঙ্গে পেয়েছে।
সমন্বয় কমিটির তথ্য অনুযায়ী, রানা প্লাজা ধসে ২,৮৩২ জন আহত, নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিক পরিবারের ৫,০২২ জন সদস্য দাবিনামা পূরণ করেন। তাদের মধ্যে নিখোঁজ শ্রমিক আছেন ১৪১ জন। তাদের সবার জন্য পৃথক ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। অবশ্য সবাই ক্ষতিপূরণ পাবেন না, কারণ অনেকেই কম আহত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ অনেক আগেই পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন। সব মিলিয়ে ৭০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলেও বাকি ৩০ শতাংশের অর্থ প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকছেই।
বিজিএমইএ সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে লেখা-পড়া ও চিকিৎসাসহ সবধরনের সাহয্য-সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়টা আইএলও দেখভাল করছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৭০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। আশা করি আইএলও বাকি অর্থও ব্যবস্থা করে দেবে।
একাধিক শ্রমিকসংগঠনের নেতারা বলছেন, রানা প্লাজা ধসের পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১২৭ কোটি টাকার মতো জমা পড়ে। সেখান থেকে চিকিৎসা, অনুদানসহ বিভিন্ন খাতে খরচ হয় মাত্র ২২ কোটি টাকা। সেই তহবিল থেকে এখন ৭২ কোটি টাকা দিলে সহজেই এ ক্ষতিপূরণের বিষয়টির সমাপ্তি টানা যায়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে ১,১৩৬ জন শ্রমিক নিহত হন। আহত হন আরও অনেকে। এ ঘটনার পর দেশে-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে আইএলওর নেতৃত্বে রানা প্লাজা সমন্বয় কমিটি গঠিত হয়। এতে বিদেশী ক্রেতা প্রতিষ্ঠান, দেশী-বিদেশী শ্রমিক সংগঠন ও সরকারের প্রতিনিধিরা আছেন। (দৈনিক মানবজমিন)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ২ বছরপূর্তি ২৪ এপ্রিল : ক্ষতিগ্রস্তদের ৩০ ভাগ ক্ষতিপূরণ পায়নি এখনও

প্রকাশের সময় : ১০:২১:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল ২০১৫

ঢাকা: রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ২ বছরপূর্তি হচ্ছে ২৪ এপ্রিল। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের সহায়তায় এগিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি ছিল অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানেরই। বিদেশী এসব নামি-দামি ব্র্যান্ডের ডোনার্স ট্রাস্ট ফান্ডে অর্থ দেয়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান অর্থ না দেয়ায় এখনও ৩০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ বাকি রয়ে গেছে। দুর্ঘটনার সময় ওই ভবনে অবস্থিত ৫ কারখানায় মোট ২৯ ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরির কাজ চলছিল। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো শিগগিরই তাদের প্রতিশ্রুত অর্থ দেবে বলে আশা আইএলও’র। এর আগে দুই বারে ৭০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের। ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়া নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট পরিবারের সদস্যদের কাছে চিঠি দিয়েছিল আইএলও নেতৃত্বাধীন রানা প্লাজা সমন্বয় কমিটি।
এদিকে সোমবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা দিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে আদালতকে জানাতে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। আগামী ২৭ এপ্রিল তাদের এসব প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের করা রিট ও স্বপ্রণোদিত হয়ে হাইকোর্টের দেয়া অন্তর্র্বতীকালীন আদেশের শুনানিকালে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি আব্দুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন।
জানা গেছে, আইএলওসহ বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দাবি এবং অনুরোধের পরও ক্ষতিপূরণের অর্থ দেয়নি ১৫ ব্র্যান্ড। অথচ রানা প্লাজার সঙ্গে কোন রকম সম্পর্ক নেই এমন অনেক ব্র্যান্ডও এ তহবিলে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। নিহত এবং আহত শ্রমিকদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে আইএলওর নেতৃত্বে গত বছর ২৮ জানুয়ারি ‘রানা প্লাজা ডোনার্স ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করা হয়।
ক্ষতিপূরণ না দেয়া ব্র্যান্ডগুলো হচ্ছে- আডলার মোডমার্কেট, অ্যাসিনা রিটেইল, বেনেটন, ক্যার ফোর, ক্যাট ফ্যাশনস, গ্র্যাবালক, আইকোনিক্স, জেসি পেনি, ক্যানজি কিডস ফ্যাশন, এলসি ওয়াইকিকি, ম্যানিফাটুরা করোনা, এনকেডি, পিডব্লিউটি, রোব ডি ক্যাপা ও ইয়েস জি।
সূত্র জানায়, মোট ৩১ প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা এখন পর্যন্ত রানা প্লাজা ডোনার্স ফান্ডে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, তহবিলে ২ কোটি ১৫ লাখ ৭২ হাজার ডলার জমা পড়েছে। তহবিলে প্রয়োজন ৩ কোটি ডলার। এর মধ্যে ওয়ালমার্ট, প্রাইমার্কসহ ২০ ব্র্যান্ড তহবিলে সহায়তা দিলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এ পরিস্থিতিতে এসব ব্র্যান্ডকে তহবিলে অর্থ সহযোগিতা বাড়াতে অনুরোধ জানানো হয়েছে ক্লিন ক্লোথ ক্যাম্পেইনসহ (সিসিসি) বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে। তবে এসব নামি-দামি ব্র্যান্ডের মধ্যে ব্যতিক্রম হচ্ছে আয়ারল্যান্ডভিত্তিক ব্র্যান্ড প্রাইমার্ক। ক্ষতিপূরণ বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতির ৯৫ শতাংশ এ পর্যন্ত পরিশোধ করেছে কোম্পানিটি।
আইএলও’র প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তহবিলের অর্থ থেকে গত বছর ৫ কিস্তিতে আহত ও নিহত শ্রমিক পরিবারের ২,৭৭০ জন তাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের ৪০ শতাংশ পান। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২৯ কোটি ৩৯ লাখ ৬০ হাজার ৮৭২ টাকা। তবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের প্রাপ্ত সহায়তা ও এককালীন দেয়া ৫০ হাজার টাকা কর্তন করে রাখা হয়েছিল। আর এ বছর ৮ই এপ্রিল প্রথম কিস্তিতে ক্ষতিপূরণের বাকি ৬০ শতাংশের মধ্যে ৩০ শতাংশ অর্থ দেয়া হয় ২৯৬৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে। যার পরিমাণ ৩১ কোটি ২ লাখ ৩ হাজার ৮৪১ টাকা। মোট ৬ কিস্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রদান করা হয় ৭৫ কোটি ৮৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭১৩ টাকা। সমস্ত টাকা ডাচ-বাংলা ব্যাংক ও ‘বিকাশ’ একাউন্টের মাধ্যমে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ‘বিকাশ’ এর সার্ভিস চার্জ বাবদ ১ লাখ ৮২ হাজার ২৫০ টাকা ব্যয় হয়েছে। জানা গেছে, রানা প্লাজা সমন্বয় কমিটি গত বছর দাবিনামার কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ধাপে ধাপে অর্থ দেয়া হয়েছিল। এ বছর সেটি সবাই একসঙ্গে পেয়েছে।
সমন্বয় কমিটির তথ্য অনুযায়ী, রানা প্লাজা ধসে ২,৮৩২ জন আহত, নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিক পরিবারের ৫,০২২ জন সদস্য দাবিনামা পূরণ করেন। তাদের মধ্যে নিখোঁজ শ্রমিক আছেন ১৪১ জন। তাদের সবার জন্য পৃথক ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। অবশ্য সবাই ক্ষতিপূরণ পাবেন না, কারণ অনেকেই কম আহত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ অনেক আগেই পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন। সব মিলিয়ে ৭০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলেও বাকি ৩০ শতাংশের অর্থ প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকছেই।
বিজিএমইএ সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে লেখা-পড়া ও চিকিৎসাসহ সবধরনের সাহয্য-সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়টা আইএলও দেখভাল করছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৭০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। আশা করি আইএলও বাকি অর্থও ব্যবস্থা করে দেবে।
একাধিক শ্রমিকসংগঠনের নেতারা বলছেন, রানা প্লাজা ধসের পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১২৭ কোটি টাকার মতো জমা পড়ে। সেখান থেকে চিকিৎসা, অনুদানসহ বিভিন্ন খাতে খরচ হয় মাত্র ২২ কোটি টাকা। সেই তহবিল থেকে এখন ৭২ কোটি টাকা দিলে সহজেই এ ক্ষতিপূরণের বিষয়টির সমাপ্তি টানা যায়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে ১,১৩৬ জন শ্রমিক নিহত হন। আহত হন আরও অনেকে। এ ঘটনার পর দেশে-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে আইএলওর নেতৃত্বে রানা প্লাজা সমন্বয় কমিটি গঠিত হয়। এতে বিদেশী ক্রেতা প্রতিষ্ঠান, দেশী-বিদেশী শ্রমিক সংগঠন ও সরকারের প্রতিনিধিরা আছেন। (দৈনিক মানবজমিন)