রাখাইনের বিস্ফোরণে কাঁপছে হ্নীলা থেকে সেন্ট মার্টিন সীমান্ত
- প্রকাশের সময় : ০১:৪৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪
- / ৮০ বার পঠিত
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে কেঁপে উঠছে টেকনাফ সীমান্ত। টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা থেকে শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্ট মার্টিন পর্যন্ত সীমান্তের এপারের বাসিন্দারা ওপারে রাখাইনে বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে বিস্ফোরণের জোরালো শব্দ শোনা যায়। সকালের কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ ও মর্টারের বিকট শব্দে এপারের মানুষের ঘরবাড়ি কেঁপে উঠেছে বলে জানায় সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা কৃষক আবুল কালাম বলেন, ‘আমি ফজরের নামাজের পর ক্ষেতে যাওয়ার জন্য বের হই। এ সময় মিয়ানমারের রাখাইনে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের ভারী শব্দ শুনতে পাই। এমন কয়েকটি বোমা বা মর্টারের শব্দে আমাদের ঘরবাড়ি কেঁপেছে। আমরা অনেক ভয় পেয়েছিলাম। এ ধরনের বিকট শব্দ সচরাচর শোনা যায় না।’
শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, ‘নাফ নদের সীমান্তে মঙ্গলবার সকাল থেকে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শুনেছি। মাস দেড়েক পর এমন বিকট শব্দ শুনেছি আমরা। রাখাইনের মংডুর দক্ষিণের এলাকাগুলোতে এখন আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে বলে জেনেছি। কত দিন ধরে এ সংঘাত চলে তা বলা যাচ্ছে না।’
টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘ভোরে মিয়ানমারের মর্টার শেল ও গুলির শব্দে আমার ঘুম ভাঙে। দিনের বিভিন্ন সময়ে এভাবে মর্টার ও বোমার শব্দ শোনা যায়। রাতেও বেশ কয়েকটি মর্টারের বিকট শব্দ শুনেছি। এলাকার লোকজন এতে ভয় পেয়েছে। এদিকে সেন্ট মার্টিন থেকেও গতকাল মঙ্গলবার দিনভর মিয়ানমারের ওপারের মর্টার ও গুলির শব্দ শোনা গেছে। এ সময় দ্বীপের সাধারণ মানুষ কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সকাল থেকে মর্টার ও গুলির শব্দ শোনা গেছে। মর্টার ও গুলির শব্দে দ্বীপবাসী ভয় পেয়েছিল।’
এদিকে মিয়ানমারের মংডু, বুথিডং ও রাথেডংয়ের কয়েকটি গ্রামে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। স্থলসীমান্তের পাশাপাশি টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন।
কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাত তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এর প্রভাব যাতে আমাদের ওপর দিয়ে না যায় সে জন্য টহল জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধেও সতর্ক রয়েছে কোস্ট গার্ড।’
এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারের ভেতরে সংঘাতময় পরিস্থিতির শুরু থেকেই বিজিবি সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নাফ নদেও টহল জোরদার করা হয়েছে।’ সূত্র : কালের কণ্ঠ।