ভাসানীর আদর্শে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো-সন্তোষে ড. কামাল
- প্রকাশের সময় : ১২:১৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৮
- / ৫৪৪ বার পঠিত
টাঙ্গাইল থেকে আতাউর রহমান আজাদ: ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে তার মূল নেতৃত্বে ছিলেন মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। তিনি আমাদের নেতা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গুরু। তার আত্মার মাগফেরাত কামনার জন্য আমরা মাজারে এসেছি। আমি মনে করি মওলানা ভাসানী আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে চিরদিন আমাদের মাঝে থাকবেন। আমরা যে কাজ করে যাচ্ছি তা হলো সাধারণ কৃষক, শ্রমিক ও অসহায় মানুষদের জন্য। তিনি যে শিক্ষা দিয়ে গেছেন, প্রেরণা দিয়ে গেছেন তা আমাদের চলার পথকে সহজ করে দিয়েছে। আমরা মনে করি টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানী মাজার থেকে সারা বাংলাদেশে এ প্রেরণার আলো ছড়িয়ে যাবে।
তিনি শনিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও সূরা ফাতেহা পাঠ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ঐক্যফ্রন্ট নেতা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম), মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুলতান মোহাম্মদ মনসুরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এরপর কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে মওলানা ভাসানীর মাজারে পূস্পস্তবক অর্পণ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। তিনি মাজার প্রাঙ্গণে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সরকার বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দুরে সরিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করছে। নির্বাচনে এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি হয়নি। আমরা নির্বাচন থেকে সরতে চাইনা। আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে সাথে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ যখন নতুন কোন সঙ্কটের সৃষ্টি করে তখন তা বিএনপির উপর চাপিয়ে দেয়। বিএনপি কার্যালয়ের সামনে যে ঘটনা ঘটেছে তা আপনারা দেখেছেন। পুলিশের গাড়ীতে আগুন কারা দিয়েছে তা টিভিতে দেখানো হয়েছে। তারপরও আমরা আবারও বলছি এটা আমরা করি নাই। জনগন সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছে। সরকার চায় নির্বাচনে ভোটাররা যেন ভোট কেন্দ্রে না যায়।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, জেলা বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম তোফা, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এদিন সকাল সাড়ে সাতটায় মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ভাসানীর মাজারে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন প্রথমে পুস্পস্তবক অর্পণ মধ্যদিয়ে দিনের কর্মসূচি হয়। পরে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, বিভিন্ন হল, জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব, ভাসানীর পরিবার বর্গ, ন্যাপ ভাসানী, খোদাই খেদমতগারসহ একে একে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় মাজার প্রাঙ্গণ।
ভাসানীর মাজার জিয়ারত শেষে ঐক্যফ্রন্ট নেতা ডা. জাফর উল্লাহ বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান ইতিহাসের যেমন কিংবদন্তী ঠিক একই ভাবে ওসমানি, জিয়াউর রহমান, তাজ উদ্দিন আহমেদকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস হবে না। মওলানা ভাসানী বাংলাদেশ। তিনি কার কথা বলেছেন। তিনি জনগণের, সাধারণ মানুষের কথা বলেছেন। তাই আজ আমরা এখানে এসেছি।
ঢাকা থেকে বিমেষ প্রতিনিধি জানান, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মওলানা ভাসানীর মত ত্যাগী, সৎ, সাহসী একজন নেতার অভাব জাতি ভীষণভাবে অনুভব করছে। বর্তমান সময়ে ভাসানীর মত নেতার বড়ই প্রয়োজন। দুঃখের বিষয় সকল শাসকগোষ্ঠিই মওলানা ভাসানীকে প্রতিপক্ষ মনে করেছে। তাকে যথাযথ মূল্যায়ন করেনি। তার জীবনদর্শন নতুন প্রজন্মের কাছে যাতে প্রচারিত না হয় কৌশলে সেই ব্যবস্থা করেছে।
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় তারা একথা বলেন। তারা মওলানা ভাসানীর জীবনাদর্শ অনুসরণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। এতে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক এম.এ সামাদ।
সভায় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, জাতীয় বিপ্লবী পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. সামছুল আলম, সোস্যালিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাহিদুর রহমান, সমতা পার্টির সভাপতি ফরহাদ চৌধুরী এবং শ্রমিক পার্টির সভাপতি ফেরদৌস আহমেদ, মোস্তফা আল খালিদ, আবদুল্লাহ আল মামুন, রফিকুল ইসলাম, কমরেড মাসুদ, জয় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।