নিউইয়র্ক ০১:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিবিসির চোখে : সরকার-ঐক্যফ্রন্ট সংলাপের ফলাফল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৫৬:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ নভেম্বর ২০১৮
  • / ৪০১ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: দ্বিতীয় দফায় বুধবার সরকারের সাথে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনার পর অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের নতুন তেমন কিছুই জানাতে পারেনি দু-পক্ষ। গণভবনে সংলাপের বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতার সাথে সাথেই কিছু বলতে চাননি। পরে নিজেদের মধ্যে কথা বলার পর যে সাংবাদিক সম্মেলন করেন, সেখানেও বেশ সতর্ক হয়ে কথা বলেছেন তারা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের তাদের মূল দাবিগুলোতে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দু-একজন বিরোধী নেতা বলেন, তারা এখন আন্দোলনের মাধ্যমে জনমত সৃষ্টি করে দাবি আদায় করবেন।
ছবি: বুধবার সংলাপ শুরুর আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ও ড. কামাল হোসেন
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, পরিস্থিতি সহিংসতার দিকে এগুলে তার দায় সরকারকে নিতে হবে। তবে কতটা গুরুত্বের সাথে এসব হুমকি তারা দিচ্ছেন, তা বোঝা যায়নি।
এটা কম-বেশি পরিষ্কার যে, সংলাপে বিরোধীদের সাত-দফার মূল দাবিগুলো -সরাসরি নাকচ হয়ে গেছে।
সংলাপে অংশ নিয়েছিলেন বিএনপির এমন একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেন, ঐক্যফ্রন্ট নেতারা নির্বাচন নিয়ে তাদের দাবি পূরণ নিয়ে একটি ‘রূপরেখ’’ সরকারের কাছে তুলে ধরেছিলেন।
২৮ জানুয়ারীতে বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ করে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার প্রস্তাব দেন তারা। একইসাথে, পুরনো তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আদলে একজন প্রধান উপদেষ্টা এবং জনা দশেক উপদেষ্টা নিয়োগ করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনেরও প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়।
জানা গেছে, এসব প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী সরাসরি নাকচ করে দেন। এমনকি খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে না পারলেও আইনের পথেই জামিন দেওয়ার প্রস্তাবেও সরকার কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার করে। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার দাবিও নাকচ হয়ে যায়।
মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন এমন বিরোধী নেতা-কর্মীদের একটি তালিকা গ্রহণ করেছে সরকার। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তদন্ত করে দেখা হবে। বিদেশী নির্বাচনী পর্যবেক্ষক নিয়ে সরকার আপত্তি করবে না বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সাত-দফা দাবির প্রাপ্তি এটুকুই।
ছবি: গণভবনে মুখোমুখি শেখ হাসিনা এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
সতর্ক বিরোধীরা: প্রশ্ন হচ্ছে এখন বিরোধীরা কি করবেন? আলোচনা ছেড়ে বড় ধরণের আন্দোলনের পথ ধরবেন? নির্বাচন বর্জন করবেন? এসব প্রশ্নে খুব সতর্ক উত্তর দিয়েছেন বিরোধী নেতারা।
আলোচনা কি ব্যর্থ হয়েছে- এ ধরণের প্রশ্নে সরাসরি উত্তর দিতে চাননি তারা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা সরকারের সাথে আরও আলোচনা করতে চান এবং আশা করেন সরকার রাজী হবে।
বিরোধীদের কথাবার্তায় ইঙ্গিত স্পষ্ট তারা এখনই চূড়ান্ত কোনো পথ নিতে চাইছেন না। সরকারের সাথে সংঘাতের কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। এমনকি শুক্রবার (৯ নভেম্বর) রাজশাহীতে তাদের জনসভার আগে ‘রোডমার্চে’র এক কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
সংলাপ নিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা ছিল। সেটি স্থগিত করা হয়েছে।
বিরোধীদের অনুরোধ উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবারই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হচ্ছে। এরপর শনিবার (১১ নভেম্বর) রাজশাহীর জনসভায় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা কি বলেন, তা থেকেই হয়তো ইঙ্গিত মিলবে নির্বাচনের অংশগ্রহণ নিয়ে তাদের অবস্থান কী হতে পারে। তবে সেখানে নির্বাচন বর্জনের মত কোনো চমক থাকবে সে সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী পরে সাংবাদিক সম্মেলনটি করেন কিনা এবং করলে সেখানে তিনি কি বলেন, সেটিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূত্র: বিবিসি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

বিবিসির চোখে : সরকার-ঐক্যফ্রন্ট সংলাপের ফলাফল

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৬:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ নভেম্বর ২০১৮

হককথা ডেস্ক: দ্বিতীয় দফায় বুধবার সরকারের সাথে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনার পর অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের নতুন তেমন কিছুই জানাতে পারেনি দু-পক্ষ। গণভবনে সংলাপের বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতার সাথে সাথেই কিছু বলতে চাননি। পরে নিজেদের মধ্যে কথা বলার পর যে সাংবাদিক সম্মেলন করেন, সেখানেও বেশ সতর্ক হয়ে কথা বলেছেন তারা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের তাদের মূল দাবিগুলোতে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দু-একজন বিরোধী নেতা বলেন, তারা এখন আন্দোলনের মাধ্যমে জনমত সৃষ্টি করে দাবি আদায় করবেন।
ছবি: বুধবার সংলাপ শুরুর আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ও ড. কামাল হোসেন
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, পরিস্থিতি সহিংসতার দিকে এগুলে তার দায় সরকারকে নিতে হবে। তবে কতটা গুরুত্বের সাথে এসব হুমকি তারা দিচ্ছেন, তা বোঝা যায়নি।
এটা কম-বেশি পরিষ্কার যে, সংলাপে বিরোধীদের সাত-দফার মূল দাবিগুলো -সরাসরি নাকচ হয়ে গেছে।
সংলাপে অংশ নিয়েছিলেন বিএনপির এমন একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেন, ঐক্যফ্রন্ট নেতারা নির্বাচন নিয়ে তাদের দাবি পূরণ নিয়ে একটি ‘রূপরেখ’’ সরকারের কাছে তুলে ধরেছিলেন।
২৮ জানুয়ারীতে বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ করে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার প্রস্তাব দেন তারা। একইসাথে, পুরনো তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আদলে একজন প্রধান উপদেষ্টা এবং জনা দশেক উপদেষ্টা নিয়োগ করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনেরও প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়।
জানা গেছে, এসব প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী সরাসরি নাকচ করে দেন। এমনকি খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে না পারলেও আইনের পথেই জামিন দেওয়ার প্রস্তাবেও সরকার কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার করে। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার দাবিও নাকচ হয়ে যায়।
মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন এমন বিরোধী নেতা-কর্মীদের একটি তালিকা গ্রহণ করেছে সরকার। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তদন্ত করে দেখা হবে। বিদেশী নির্বাচনী পর্যবেক্ষক নিয়ে সরকার আপত্তি করবে না বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সাত-দফা দাবির প্রাপ্তি এটুকুই।
ছবি: গণভবনে মুখোমুখি শেখ হাসিনা এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
সতর্ক বিরোধীরা: প্রশ্ন হচ্ছে এখন বিরোধীরা কি করবেন? আলোচনা ছেড়ে বড় ধরণের আন্দোলনের পথ ধরবেন? নির্বাচন বর্জন করবেন? এসব প্রশ্নে খুব সতর্ক উত্তর দিয়েছেন বিরোধী নেতারা।
আলোচনা কি ব্যর্থ হয়েছে- এ ধরণের প্রশ্নে সরাসরি উত্তর দিতে চাননি তারা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা সরকারের সাথে আরও আলোচনা করতে চান এবং আশা করেন সরকার রাজী হবে।
বিরোধীদের কথাবার্তায় ইঙ্গিত স্পষ্ট তারা এখনই চূড়ান্ত কোনো পথ নিতে চাইছেন না। সরকারের সাথে সংঘাতের কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। এমনকি শুক্রবার (৯ নভেম্বর) রাজশাহীতে তাদের জনসভার আগে ‘রোডমার্চে’র এক কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
সংলাপ নিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা ছিল। সেটি স্থগিত করা হয়েছে।
বিরোধীদের অনুরোধ উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবারই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হচ্ছে। এরপর শনিবার (১১ নভেম্বর) রাজশাহীর জনসভায় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা কি বলেন, তা থেকেই হয়তো ইঙ্গিত মিলবে নির্বাচনের অংশগ্রহণ নিয়ে তাদের অবস্থান কী হতে পারে। তবে সেখানে নির্বাচন বর্জনের মত কোনো চমক থাকবে সে সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী পরে সাংবাদিক সম্মেলনটি করেন কিনা এবং করলে সেখানে তিনি কি বলেন, সেটিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূত্র: বিবিসি।