বিদেশী স্ত্রী বা পোষ্যধারীদের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর নতুন নির্দেশনা

- প্রকাশের সময় : ১০:৩১:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
- / ৫৪৫ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: বাংলাদেশের সেনা কর্মকতাদের পোষ্যদের যারা অন্যদেশের নাগরিক তাদের ২৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে নাগরিকত্ব সারেন্ডার অথবা চাকুরী থেকে ইস্তেফা দিতে সার্কুলার দেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী থেকে এর স্বপক্ষে যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, যেহেতু বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে প্রস্তুত করতে গিয়ে দেশের অর্থ এবং উদ্যোগ বিনিয়োগ করতে হয়। সেজন্য ভবিষ্যতে কেউ যাতে নিজের সুবিধার জন্য অন্য দেশে বসতি না গড়েন সেজন্যই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে আকস্মিকভাবে দেয়া এই সার্কুলারের কারণে সেনাবাহিনীতে কর্মরত অনেককে হতভম্ভ করেছে বলে জানা গেছে। এবিষয়ে অভিজ্ঞ একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমার স্ত্রী হয়তো ব্রিটিশ বা আমেরিকান সিটিজেন। সেই হিসেবে সে দেশে জন্ম নেয়া সন্তান সন্ততি জন্মগতভাবেই ব্রিটিশ বা আমেরিকান নাগরিক। যারা অভিবাসন সূত্রে অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন তারা হয়তো দ্বৈত নাগরিকত্ব নিতে পারবেন। কিন্তু আমাদের পোষ্যদের মধ্যে যারা জন্মগত নাগরিক তারা কিভাবে তাদের নাগরিকত্ব সারেন্ডার করবে এটাই এখন মুখ্য প্রশ্ন। সেনাবাহিনীর সার্কুলারে বলা হয়েছে পোষ্যদের কেউ যদি বিদেশী নাগরিক হন তাহলে ২৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে সেটা সারেন্ডার করা না হলে চাকুরী থেকে অবসর নিতে হবে।
সূত্রমতে এর আগে কখনো এধরনের সিদ্ধান্ত হয়নি। সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান তোয়াবের স্ত্রী ছিলেন জার্মান। কমোডোর কুদ্দুসের স্ত্রীও বিদেশী শ্বেতাঙ্গ ছিলেন। তাদের ক্ষেত্রে এধরনের কোন আইনের প্রয়োগ হয়নি।
সূত্রমতে, যেহেতু বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে এধরনের কোন প্রেকটিস এর কখনো হয়নি সেজন্য অনেকেই তাদের আত্মীয় স্বজন বা প্রেমের কারণে এমন কাউকে বিয়ে করেছেন যিনি বিদেশী নাগরিক। বাংলাদেশী অনেকেই আছেন যারা আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়েছেন। যাদের বলা হয় বাংলাদেশী আমেরিকান। তাদের ঘরে জন্ম নেয়া সন্তান-সন্ততিদের অনেকেই জন্মগতভাবে আমেরিকা বা ইউরোপীয় কোন দেশের নাগরিক। এই অবস্থায় স্ত্রী বা সন্তান সন্ততিদের নাগরিকত্ব সারেন্ডারের বিষয়টি অনেকের মধ্যেই অস্পষ্টতা, ভীতি ও অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে।
প্রবাসীদের অনেকেই মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অনেকেই আছেন যারা দেশে তাদের সামরিক বাহিনীর সদস্য অনেকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এক্ষেত্রে এই আইন কার্যকর হলে এটা তাদের চাকুরী ভবিষ্যতের জন্ম বড় ধরনের অনিশ্চয়তার জন্ম দেবে।
‘কুল রাখি না, শ্যাম রাখি’ অবস্থায় নিপতিত হয়েছেন তারা। চাকুরী না স্ত্রী সন্তান এটাই এই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে বিবেচনায় নিয়ে এই অনিশ্চয়তা দুর করা হলে সেটা দেশের গর্বিত সেনা পরিবার সমূহের মধ্যে সৃষ্ঠ স্বস্থি ফিরিয়ে আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।(বাংলা পত্রিকা)