প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের রহস্যজনক মৃত্যু
- প্রকাশের সময় : ০১:১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬
- / ৭৫১ বার পঠিত
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…. ……….রাজিউন)। গত মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানের একটি রেস্তরাঁ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার মৃত্যু রহস্যজনক। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর। তিনি স্ত্রী ও এক কন্যাসন্তান রেখে গেছেন। তার মরদেহ মঙ্গলবার বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। ৭ ডিসেম্বর বুধবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ময়মনসিংহে। সেখানে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এদিকে মাহবুবুল হক শাকিলের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের নেতা ও মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা শোক প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে শাকিলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে গুলশানের ওই রেস্তরাঁয় ছুটে যান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ দলের নেতারা।
এদিকে পুলিশ মঙ্গলবার বিকাল থেকে রেস্তরাঁটি বন্ধ করে দেয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রেস্তোরার কয়েকজন কর্মীকে আটক করে। এছাড়া সেখানে সিআইডি’র ক্রাইম সিনের কর্মকর্তারাও যান আলামত সংগ্রহে।
গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাহউদ্দিন বলেন, তদন্তের স্বার্থে পুলিশ সন্ধ্যা থেকে রেস্টুরেন্টটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে রেস্টুরেন্টের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এদিকে শাকিলের মৃত্যুর খবর শুনে তার বাবা-মাকে সান্তনা জানাতে ময়মনসিংহ শহরের বাঘমারায় তার বাড়িতে ছুটে যান ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, বিভাগীয় কমিশনার জি এম সালেহ উদ্দিন, পুলিশের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা প্রশাসক খলিলুর রহমান, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, পৌর মেয়র ইকরামুল হক টিটু, জেলা নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি আনিসুর রহমান খান প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
জানা গেছে, মাহবুুবুল হক শাকিলের জন্ম ১৯৬৮ সালের ২০ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলে। তার পৈতৃক নিবাস ময়মনসিংহে। ময়মনসিংহ জিলা স্কুল ও আনন্দমোহন কলেজে পড়াশোনার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসেন শাকিল। প্রথমে সাংগঠনিক সম্পাদক ও পরে সিনিয়র সহ-সভাপতি হন তিনি। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সেল-সিআরআই গঠিত হলে তা পরিচালনার দায়িত্ব পান শাকিল। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিবের দায়িত্ব পান শাকিল। চার বছর পর তাকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) করা হয়। ২০১৪ সাল থেকে অতিরিক্ত সচিব মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। তার বাবা অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
রাজনীতি থেকে সরকারি দায়িত্বে আসা শাকিল লেখালেখিও করতেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থ ‘খেরোখাতার পাতা থেকে’ ও ‘মন খারাপের গাড়ী’। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পালনকালে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল এক সময়ের এই ছাত্রনেতার।