নিউইয়র্ক ১২:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদন্ড বহাল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:১০:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০১৭
  • / ৬৪৮ বার পঠিত

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আমৃত্যু কারাদন্ডৎুাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় পুনঃবিবেচনার (রিভিউ) জন্য আনা আবেদন সোমবার (১৫ পস) আপিল বিভাগ খারিজ করে দিয়েছে। এদিন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা ছিলেন বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহ্হাব মিয়া, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাছান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হুসেইন হায়দার। সাঈদীর খালাশের আর্জি জানিয়ে তার পক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতে বক্তব্য পেশ করেন। অপরদিকে সাঈদীর মৃত্যুদন্ডের আর্জি জানিয়ে শুনানী করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আইনজীবীরা জানায়, উভয় পক্ষের রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ায় সাঈদী আমৃত্যু কারদন্ডের রায় বহাল থাকলো।
গত ৪ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৪ সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ মামলাটি শুনানির জন্য গত রোববার (১৩ মে) ধার্য করে আদেশ দিয়েছিলো। সে অনুযায়ী রোববার শুনানি শুরু হয়ে সোমবার বিষটি নিষ্পত্তি হয়। আমৃত্যু কারাদন্ডের রায় পুনঃবিবেচনার (রিভিউ) করে মৃত্যুদন্ডের আর্জি জানিয়ে ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারী রাষ্ট্রপক্ষে আবেদন দায়ের করা হয়। রায় পুনঃবিবেচনার চেয়ে ৩০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনের সঙ্গে ৬শ ৫৩ পৃষ্ঠার নথিপত্র দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এডভোকেট অন রেকর্ড সৈয়দ মামুন মাহবুব সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে এ রিভিউ আবেদন দাখিল করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ কোনো আসামির সাজা বাড়ানোর জন্য প্রথম রায় রিভিউয়ের আবেদন করে। এর আগে জামায়াতের আরেক নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে ট্রাইব্যুনালে দেয়া যাবজ্জীবন রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছিল। আপিলে কাদের মোল্লার দন্ড বাড়িয়ে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। আপিলের রায়ের রিভিউ করেছিল আসামিপক্ষ। রিভিউতেও দন্ড বহাল রাখে আপিল বিভাগ। পরে সব আইনী প্রক্রিয়া শেষে কাদের মোল্লার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়ে আপিল বিভাগের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। ৬১৪ পৃষ্ঠার এ রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে সংক্ষুদ্ধরা রিভিউ দায়েরের সুযোগ পেয়ে থাকেন। সে অনুযায়ী রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামীপক্ষ রায় রিভিউর আবেদন দাখিল করে। গত বছরের ১৭ জানুয়ারী আপিলের রায় থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দায়ের করেন সাঈদী। মোট ৯০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে আমৃত্যু কারাদন্ড থেকে খালাস পেতে ১৬টি যুক্তি দেখানো হয়েছে। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ৩০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনে মৃত্যুদন্ড আর্জির পক্ষে পাঁচটি যুক্তি দেখানো হয়।
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়ে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষে আনা আপিলের সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেছিল সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মোহাম্সমদ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আপিল বিভাগের বিশেষ বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করা হয়। বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের মতে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের করা দুটি আপিল আংশিক মঞ্জুর করে এ রায় দেয়া হয়। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা ছিলেন- বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (বর্তমান প্রধান বিচারপতি), বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। রায় দেয়া বিচারপতিদের স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।
রায়ে বলা হয়, ১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগে সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ৬, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়। একই সঙ্গে ৮ নম্বর অভিযোগের অংশবিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে সাঈদীকে খালাস এবং এ অভিযোগের অংশবিশেষে তাকে ১২ বছর কারাদন্ডাদেশ দেয় হয়। এছাড়াও সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ৭ নম্বর অভিযোগে তাকে ১০ বছর কারাদন্ড দেয়া হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগে চার্জ গঠন করেছিল ট্রাইব্যুনাল। এরমধ্যে ৮টি অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং ১২টিতে তাকে খালাস দেয়া হয়। প্রমাণিত ৮টি অভিযোগ হচ্ছে ৬, ৭, ৮, ১০, ১১, ১৪, ১৬ এবং ১৯। এরমধ্যে ৮ এবং ১০ নং অভিযোগে সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। এ দু’টি হলো ইব্রাহিম কুট্টি হত্যা ও বিশাবালী হত্যার অভিযোগ। দু’টি অভিযোগে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় প্রমানিত অপর ছয় অভিযোগে সাজা প্রয়োজন নেই বলে ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করে।
সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত ৮ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ৭১’ সালের ৮ মে বেলা ৩টায় সাঈদীর নেতৃত্বে তার সহযোগীরা পাকিস্তানি বাহিনীর সহায়তায় সদর থানার চিতলিয়া গ্রামের মানিক পসারির বাড়িতে হানা দিয়ে তার ভাই মফিজ উদ্দিন পসারী এবং ইব্রাহিম কুট্টিকেসহ দুই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে পাঁচটি বাড়িতে কেরোসিন ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে পাড়েরহাট সেনা ক্যাম্পে নেয়ার পথে সাঈদীর প্ররোচণায় ইব্রাহিম কুট্টিকে হত্যা করে লাশ স্থানীয় একটি ব্রিজের কাছে ফেলে দেয়া হয়। মফিজ পসারীকে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।
অভিযোগ-১০ এ বলা হয়েছে, ’৭১-এর ২ জুন সকাল ১০টার দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে তার সশস্ত্র সহযোগীরা ইন্দুরকানি থানার উমেদপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ার হানা দিয়ে ২৫টি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এসব বাড়ির মালিকেরা হলেন- চিত্তরঞ্জন তালুকদার, হরেণ ঠাকুর, অনিল মন্ডল, বিশাবালী, সুকাবালি, সতিশ বালা প্রমুখ। সাঈদীর ইন্ধনে তার সহযোগীরা বিশাবালীকে তার বাড়ীর নারকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ২৮ মার্চ সাঈদী ও রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক দু’টি আপিল দাখিল করে। যে সব অভিযোগ থেকে সাঈদীকে খালাস দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল সে অভিযোগগুলোতে আপিলে দন্ডের আর্জি জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদন্ড বহাল

প্রকাশের সময় : ০১:১০:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০১৭

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আমৃত্যু কারাদন্ডৎুাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় পুনঃবিবেচনার (রিভিউ) জন্য আনা আবেদন সোমবার (১৫ পস) আপিল বিভাগ খারিজ করে দিয়েছে। এদিন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা ছিলেন বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহ্হাব মিয়া, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাছান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হুসেইন হায়দার। সাঈদীর খালাশের আর্জি জানিয়ে তার পক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতে বক্তব্য পেশ করেন। অপরদিকে সাঈদীর মৃত্যুদন্ডের আর্জি জানিয়ে শুনানী করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আইনজীবীরা জানায়, উভয় পক্ষের রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ায় সাঈদী আমৃত্যু কারদন্ডের রায় বহাল থাকলো।
গত ৪ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৪ সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ মামলাটি শুনানির জন্য গত রোববার (১৩ মে) ধার্য করে আদেশ দিয়েছিলো। সে অনুযায়ী রোববার শুনানি শুরু হয়ে সোমবার বিষটি নিষ্পত্তি হয়। আমৃত্যু কারাদন্ডের রায় পুনঃবিবেচনার (রিভিউ) করে মৃত্যুদন্ডের আর্জি জানিয়ে ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারী রাষ্ট্রপক্ষে আবেদন দায়ের করা হয়। রায় পুনঃবিবেচনার চেয়ে ৩০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনের সঙ্গে ৬শ ৫৩ পৃষ্ঠার নথিপত্র দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এডভোকেট অন রেকর্ড সৈয়দ মামুন মাহবুব সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে এ রিভিউ আবেদন দাখিল করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ কোনো আসামির সাজা বাড়ানোর জন্য প্রথম রায় রিভিউয়ের আবেদন করে। এর আগে জামায়াতের আরেক নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে ট্রাইব্যুনালে দেয়া যাবজ্জীবন রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছিল। আপিলে কাদের মোল্লার দন্ড বাড়িয়ে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। আপিলের রায়ের রিভিউ করেছিল আসামিপক্ষ। রিভিউতেও দন্ড বহাল রাখে আপিল বিভাগ। পরে সব আইনী প্রক্রিয়া শেষে কাদের মোল্লার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়ে আপিল বিভাগের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। ৬১৪ পৃষ্ঠার এ রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে সংক্ষুদ্ধরা রিভিউ দায়েরের সুযোগ পেয়ে থাকেন। সে অনুযায়ী রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামীপক্ষ রায় রিভিউর আবেদন দাখিল করে। গত বছরের ১৭ জানুয়ারী আপিলের রায় থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দায়ের করেন সাঈদী। মোট ৯০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে আমৃত্যু কারাদন্ড থেকে খালাস পেতে ১৬টি যুক্তি দেখানো হয়েছে। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ৩০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনে মৃত্যুদন্ড আর্জির পক্ষে পাঁচটি যুক্তি দেখানো হয়।
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়ে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষে আনা আপিলের সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেছিল সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মোহাম্সমদ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আপিল বিভাগের বিশেষ বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করা হয়। বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের মতে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের করা দুটি আপিল আংশিক মঞ্জুর করে এ রায় দেয়া হয়। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা ছিলেন- বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (বর্তমান প্রধান বিচারপতি), বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। রায় দেয়া বিচারপতিদের স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।
রায়ে বলা হয়, ১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগে সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ৬, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়। একই সঙ্গে ৮ নম্বর অভিযোগের অংশবিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে সাঈদীকে খালাস এবং এ অভিযোগের অংশবিশেষে তাকে ১২ বছর কারাদন্ডাদেশ দেয় হয়। এছাড়াও সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ৭ নম্বর অভিযোগে তাকে ১০ বছর কারাদন্ড দেয়া হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগে চার্জ গঠন করেছিল ট্রাইব্যুনাল। এরমধ্যে ৮টি অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং ১২টিতে তাকে খালাস দেয়া হয়। প্রমাণিত ৮টি অভিযোগ হচ্ছে ৬, ৭, ৮, ১০, ১১, ১৪, ১৬ এবং ১৯। এরমধ্যে ৮ এবং ১০ নং অভিযোগে সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। এ দু’টি হলো ইব্রাহিম কুট্টি হত্যা ও বিশাবালী হত্যার অভিযোগ। দু’টি অভিযোগে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় প্রমানিত অপর ছয় অভিযোগে সাজা প্রয়োজন নেই বলে ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করে।
সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত ৮ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ৭১’ সালের ৮ মে বেলা ৩টায় সাঈদীর নেতৃত্বে তার সহযোগীরা পাকিস্তানি বাহিনীর সহায়তায় সদর থানার চিতলিয়া গ্রামের মানিক পসারির বাড়িতে হানা দিয়ে তার ভাই মফিজ উদ্দিন পসারী এবং ইব্রাহিম কুট্টিকেসহ দুই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে পাঁচটি বাড়িতে কেরোসিন ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে পাড়েরহাট সেনা ক্যাম্পে নেয়ার পথে সাঈদীর প্ররোচণায় ইব্রাহিম কুট্টিকে হত্যা করে লাশ স্থানীয় একটি ব্রিজের কাছে ফেলে দেয়া হয়। মফিজ পসারীকে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।
অভিযোগ-১০ এ বলা হয়েছে, ’৭১-এর ২ জুন সকাল ১০টার দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে তার সশস্ত্র সহযোগীরা ইন্দুরকানি থানার উমেদপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ার হানা দিয়ে ২৫টি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এসব বাড়ির মালিকেরা হলেন- চিত্তরঞ্জন তালুকদার, হরেণ ঠাকুর, অনিল মন্ডল, বিশাবালী, সুকাবালি, সতিশ বালা প্রমুখ। সাঈদীর ইন্ধনে তার সহযোগীরা বিশাবালীকে তার বাড়ীর নারকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ২৮ মার্চ সাঈদী ও রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক দু’টি আপিল দাখিল করে। যে সব অভিযোগ থেকে সাঈদীকে খালাস দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল সে অভিযোগগুলোতে আপিলে দন্ডের আর্জি জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।