ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটে শুটিং!
- প্রকাশের সময় : ০৮:৩৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
- / ২৩৭৬ বার পঠিত
ঢাকা: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) বার্ন ইউনিট এখন রোগীতে কানায় কানায় ভরা। বিশেষ করে সম্প্রতি পেট্রলবোমায় দগ্ধ রোগীরা প্রতিনিয়ত মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এরই মধ্যে ৪ ফেব্রুয়ারী বুধবার দুপুরের দিকে হঠাৎ করেই বার্ন ইউনিটের ভেতর শুটিং শুরু হয়। শুটিংটি শুরু হয় নিচতলার অবজারভেশন রুমটিতে। তখনও ওই রুমটিতে গাজীপুর বাসে পেট্রলবোমায় দগ্ধ ৩ জন রোগী কাতরাচ্ছিল।
ক্যামেরা তাক করে যখন সুর-চিৎকার করে বলছিল, অ্যাই গ্লিসারিন কই, নায়িকাকে তারাতাড়ি গ্লিসারিন লাগান। তখন আশপাশের রোগীর স্বজনরাও ভিড় জমান রুমটিতে। গ্রাম্য পোশাকে একজন মধ্য বয়সী নারী দুচোখে গ্লিসারিন লাগিয়ে হা-হুতাশ করছে। অন্যদিকে চালু ক্যামেরা সেই দৃশ্য ধারণ করছিল। গাজীপুর থেকে আসা দগ্ধ এক রোগীর মাথায় হাত দিয়ে কান্নার অভিনয় করছিল ওই নায়িকা। এলোমেলো চুল, কান্নার চেষ্টা। তারপরই শুটিং শেষ। শুটিং শেষ করেই খোস মেজাজে বের হয়ে গেল ক্যামেরাম্যানসহ নায়িকা ও পরিচালক।
যিনি শুটিং পরিচালনা করছিলেন তার নাম রফিকুল ইসলাম বুলবুল। জানালেন, তিনি একজন সাংবাদিক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য তিনি এ শুটিং করছেন। রাজধানীর ২৬ মণিপুরীপাড়াস্থ দৈনিক এই বাংলা, সাপ্তাহিক দুর্নীতি রিপোর্ট ও উইকলি ফ্রাইডে রিভিউ নাম পত্রিকার সিনিয়র এডিটর/অথর অ্যান্ড ফিল্ম ডিরেক্টর হিসেবে তিনি নিজেকে পরিচয় দেন।
একদিকে পেট্রলবোমায় দগ্ধ রোগীরা মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, অন্যদিকে শুটিং!। বিষয়টি নিয়ে বার্ন ইউনিটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, বর্তমানে উপদেষ্টা ডা. সামন্তলাল সেন বলেন, বিটিভি কিংবা যে কোনো প্রতিষ্ঠানই হউক, এমন অবস্থায় কাউকে শুটিং করার অনুমতি বার্ন ইউনিট কর্তৃপক্ষ দিতে পারে না। শুটিং করার অনুমতি কেউ দেননিও। এটা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অপরাধ। রোগীদের নিয়ে, এমন অবস্থায় বার্ন ইউনিটে শুটিং করার অনুমতি দেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না বলে তিনি জানান।
বার্ন ইউনিট সার্জারি ও বার্ন বিভাগ প্রধান প্রফেসর ডা. সাজ্জাদ খোন্দকার বলেন, শুটিং করার বিষয়ে কেউ তাদের কাছ থেকে অনুমতি নেয়নি। তবে শুটিংটি হল কীভাবে? মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর আগুনে পোড়া রোগীদের নিয়ে এমন উপহাস কেন? (দৈনিক যুগান্তর)