নিউইয়র্ক ০২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কাশিমপুর-১ কারাগার: বন্দির ‘নারীসঙ্গ’ নিয়ে তোলপাড়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৩০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৪২ বার পঠিত

ঢাকা ডেস্ক: মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কারাগারের মতো সংরক্ষিত জায়গায় বাইরে থেকে নারী সঙ্গীকে এনে এক বন্দির একান্তে সময় কাটানোর ঘটনা সামনে আসায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় জেল সুপার, জেলার থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট কারারক্ষীরা টাকার ভাগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ। গত ৬ জানুয়ারী ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কাশিমপুর-১ কারাগারে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির হোতা তানভীরের অন্যতম সহযোগী তুষার টাকার বিনিময়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। কারাগারের ভেতরে তুষারের সঙ্গে নারীর ভিডিও চিত্র একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে। অবশ্য তুষারের দাবি, ওই নারী তাঁর স্ত্রী। শত শত কোটি টাকা প্রতারণার দায়ে কাশিমপুর-১ কারাগারে বন্দি রয়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে ডেপুটি জেলার সাকলাইন, প্রধান কারারক্ষী ও একজন সুবেদারকে ক্লোজ করে কারা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। জেল সুপার রতœা রায় ও জেলার নূর মোহাম্মদ মৃধার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গঠন করা হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি। এর মধ্যে কারা অধিদপ্তরের গঠন করা কমিটিতে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত আইজি প্রিজন্স কর্নেল আবরার হোসেনকে প্রধান করা হয়েছে। বাকি দুজন হলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব ও কারা বিভাগের একজন ডিআইজি প্রিজন্স। অন্য কমিটি গঠন করেছে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের দপ্তর। জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত আইজি প্রিজন্স কর্নেল আবরার হোসেন ২২ জানুয়ারী বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত চলাকালে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।
সিসি ক্যামেরা ফুটেজ থেকে নেওয়া ছবি । সংগৃহীত
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি কাশিমপুর-১ কারাগারে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেছেন। অভিযুক্ত বন্দি তুষারের সঙ্গেও কথা বলেছেন তাঁরা। সূত্র জানায়, তুষার তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন, ওই নারী তাঁর স্ত্রী। তাঁর এ দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। করোনার কারণে দেশের সব কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে গত বছরের মার্চ মাস থেকে। শুধু মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় এ ঘটনা ঘটল।
জানা গেছে, জেলার ও ডেপুটি জেলার দোষ দিচ্ছেন জেল সুপার রতœা রায়কে। ডেপুটি জেলার সাকলাইন ঊর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, জেল সুপারের নির্দেশেই তিনি ওই নারীকে ভেতরে রিসিভ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৬ জানুয়ারী দুপুরে কাশিমপুর-১ কারাগারের ডেপুটি জেলার সাকলাইন এক নারীকে স্বাগত জানান এবং একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখান থেকে সাকলাইন বের হয়ে যান। কিছুক্ষণ পর বন্দি তুষার ওই কক্ষে যান। ১০ মিনিট পর জেল থেকে বেরিয়ে যান জেল সুপার রতœা রায়। পরে তুষার ও ওই নারী রতœা রায়ের কক্ষের দিকে যান। যাওয়ার সময় তুষার জড়িয়ে ধরেন নারীকে। কিছুক্ষণ পর তাঁরা আগের কক্ষে ফিরে যান। ভেতরে তাঁরা ৪৫ মিনিট সময় কাটান।
যেভাবে বেরিয়ে এলো ঘটনা: খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই একটি গোয়েন্দা সংস্থা খবর পেয়ে যায়। এ নিয়ে তারা কাজে নেমে পড়ে। এ অবস্থায় ১২ জানুয়ারী জেল সুপার রতœা রায় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এর পরই গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কমিটির তদন্ত চলার সময় বেসরকারি একটি টিভি সিসিটিভি ফুটেজ পায়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, রতœা রায় কিছু জানেন না বলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেছেন। এখন জেলার ও জেল সুপার একে অন্যকে দুষছেন। তবে সূত্রের দাবি, ঘটনার সঙ্গে সবাই জড়িত এবং টাকার ভাগও পেয়েছেন সবাই। তবে টাকার অঙ্ক জানা যায়নি। জানার চেষ্টা চলছে। (সূত্র: দৈনিক কালের কন্ঠ)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

কাশিমপুর-১ কারাগার: বন্দির ‘নারীসঙ্গ’ নিয়ে তোলপাড়

প্রকাশের সময় : ০২:৩০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২১

ঢাকা ডেস্ক: মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কারাগারের মতো সংরক্ষিত জায়গায় বাইরে থেকে নারী সঙ্গীকে এনে এক বন্দির একান্তে সময় কাটানোর ঘটনা সামনে আসায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় জেল সুপার, জেলার থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট কারারক্ষীরা টাকার ভাগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ। গত ৬ জানুয়ারী ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কাশিমপুর-১ কারাগারে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির হোতা তানভীরের অন্যতম সহযোগী তুষার টাকার বিনিময়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। কারাগারের ভেতরে তুষারের সঙ্গে নারীর ভিডিও চিত্র একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে। অবশ্য তুষারের দাবি, ওই নারী তাঁর স্ত্রী। শত শত কোটি টাকা প্রতারণার দায়ে কাশিমপুর-১ কারাগারে বন্দি রয়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে ডেপুটি জেলার সাকলাইন, প্রধান কারারক্ষী ও একজন সুবেদারকে ক্লোজ করে কারা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। জেল সুপার রতœা রায় ও জেলার নূর মোহাম্মদ মৃধার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গঠন করা হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি। এর মধ্যে কারা অধিদপ্তরের গঠন করা কমিটিতে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত আইজি প্রিজন্স কর্নেল আবরার হোসেনকে প্রধান করা হয়েছে। বাকি দুজন হলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব ও কারা বিভাগের একজন ডিআইজি প্রিজন্স। অন্য কমিটি গঠন করেছে গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের দপ্তর। জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত আইজি প্রিজন্স কর্নেল আবরার হোসেন ২২ জানুয়ারী বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত চলাকালে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।
সিসি ক্যামেরা ফুটেজ থেকে নেওয়া ছবি । সংগৃহীত
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি কাশিমপুর-১ কারাগারে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেছেন। অভিযুক্ত বন্দি তুষারের সঙ্গেও কথা বলেছেন তাঁরা। সূত্র জানায়, তুষার তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন, ওই নারী তাঁর স্ত্রী। তাঁর এ দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। করোনার কারণে দেশের সব কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে গত বছরের মার্চ মাস থেকে। শুধু মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় এ ঘটনা ঘটল।
জানা গেছে, জেলার ও ডেপুটি জেলার দোষ দিচ্ছেন জেল সুপার রতœা রায়কে। ডেপুটি জেলার সাকলাইন ঊর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, জেল সুপারের নির্দেশেই তিনি ওই নারীকে ভেতরে রিসিভ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৬ জানুয়ারী দুপুরে কাশিমপুর-১ কারাগারের ডেপুটি জেলার সাকলাইন এক নারীকে স্বাগত জানান এবং একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখান থেকে সাকলাইন বের হয়ে যান। কিছুক্ষণ পর বন্দি তুষার ওই কক্ষে যান। ১০ মিনিট পর জেল থেকে বেরিয়ে যান জেল সুপার রতœা রায়। পরে তুষার ও ওই নারী রতœা রায়ের কক্ষের দিকে যান। যাওয়ার সময় তুষার জড়িয়ে ধরেন নারীকে। কিছুক্ষণ পর তাঁরা আগের কক্ষে ফিরে যান। ভেতরে তাঁরা ৪৫ মিনিট সময় কাটান।
যেভাবে বেরিয়ে এলো ঘটনা: খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই একটি গোয়েন্দা সংস্থা খবর পেয়ে যায়। এ নিয়ে তারা কাজে নেমে পড়ে। এ অবস্থায় ১২ জানুয়ারী জেল সুপার রতœা রায় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এর পরই গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কমিটির তদন্ত চলার সময় বেসরকারি একটি টিভি সিসিটিভি ফুটেজ পায়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, রতœা রায় কিছু জানেন না বলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেছেন। এখন জেলার ও জেল সুপার একে অন্যকে দুষছেন। তবে সূত্রের দাবি, ঘটনার সঙ্গে সবাই জড়িত এবং টাকার ভাগও পেয়েছেন সবাই। তবে টাকার অঙ্ক জানা যায়নি। জানার চেষ্টা চলছে। (সূত্র: দৈনিক কালের কন্ঠ)