নিউইয়র্ক ১২:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কলামিস্ট, গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৪৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৮৫ বার পঠিত

ঢাকা ডেস্ক: খ্যাতিমান কলামিস্ট, গবেষক, লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রæয়ারী) সন্ধ্যায় তিনি রাজধানী ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জানা গেছে, বাসায় বিকেলে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তিনি বাসায় পড়ে যান। পরে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। সৈয়দ আবুল মকসুদ স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর আকস্মিক মৃত্যু সংবাদে গণমাধ্যমজগত সহ দেশ ও প্রবাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন আপনজন। উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রæয়ারী রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে সৈয়দ আবুল মকসুদ করোনা ভাইরাসের টিকা নেন।
লেখক, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা সৈয়দ আবুল মাহমুদ ও মা সালেহা বেগম। তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে। পরে তিনি কিছুদিন সাপ্তাহিক ‘জনতা’য় কাজ করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) যোগ দেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাহিত্যিক হিসেবেও খ্যাতিমান ছিলেন। তাঁর সাহিত্যচর্চা শুরু হয় ষাটের দশকে কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ দিয়ে। তিনি নিয়মিত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কলাম লিখতেন। ১৯৮১ সালে তার কবিতার বই বিকেলবেলা প্রকাশিত হয়। মানবাধিকার, পরিবেশ, সমাজসহ নানা বিষয়ে তিনি কবিতা, প্রবন্ধ নিবন্ধ লিখেছেন। তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা চল্লিশের ওপর। বাংলা সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ কবিতার পাশাপাশি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ গবেষণামূলক প্রবন্ধগ্রন্থ রয়েছে। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রমুখ প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে- প্রবন্ধগ্রন্থ: যুদ্ধ ও মানুষের মূর্খতা, গান্ধী, নেহেরু ও নোয়াখালী, ঢাকার বুদ্ধদেব বসু, রবীন্দ্রনাথের ধর্মতত্ত¡ ও দর্শন, প্রতীচ্য প্রতিভা, কাজী ইমদাদুল হক রচনাবলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা, অরণ্য বেতার, বাঙালী জাতি বাঙালী মুসলমান ও বাঙালী জাতীয়তাবাদ, রাজনীতি ও ধর্মীয় রাজনীতি, রবীন্দ্র রাজনীতি, নির্বাচিত প্রবন্ধ। জীবনীগ্রন্থ : মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জীবন-কর্মকান্ড-রাজনীতি ও দর্শন, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য, ভাসানী কাহিনী, স্মৃতিতে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, গান্ধী মিশন ডায়েরি, পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রনাথ, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দশ দার্শনিক, পথিকৃৎ নারীবাদী খায়রুন্নেসা খাতুন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী জীবন ও সাহিত্য, হরিশচন্দ্র মিত্র। কাব্যগ্রন্থ : বিকেলবেলা, দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা ও সৈয়দ আবুল মকসুদের কবিতা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

কলামিস্ট, গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই

প্রকাশের সময় : ১২:৪৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ঢাকা ডেস্ক: খ্যাতিমান কলামিস্ট, গবেষক, লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রæয়ারী) সন্ধ্যায় তিনি রাজধানী ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জানা গেছে, বাসায় বিকেলে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তিনি বাসায় পড়ে যান। পরে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। সৈয়দ আবুল মকসুদ স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর আকস্মিক মৃত্যু সংবাদে গণমাধ্যমজগত সহ দেশ ও প্রবাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন আপনজন। উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রæয়ারী রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে সৈয়দ আবুল মকসুদ করোনা ভাইরাসের টিকা নেন।
লেখক, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা সৈয়দ আবুল মাহমুদ ও মা সালেহা বেগম। তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক নবযুগ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে। পরে তিনি কিছুদিন সাপ্তাহিক ‘জনতা’য় কাজ করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) যোগ দেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাহিত্যিক হিসেবেও খ্যাতিমান ছিলেন। তাঁর সাহিত্যচর্চা শুরু হয় ষাটের দশকে কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ দিয়ে। তিনি নিয়মিত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কলাম লিখতেন। ১৯৮১ সালে তার কবিতার বই বিকেলবেলা প্রকাশিত হয়। মানবাধিকার, পরিবেশ, সমাজসহ নানা বিষয়ে তিনি কবিতা, প্রবন্ধ নিবন্ধ লিখেছেন। তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা চল্লিশের ওপর। বাংলা সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ কবিতার পাশাপাশি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ গবেষণামূলক প্রবন্ধগ্রন্থ রয়েছে। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রমুখ প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে- প্রবন্ধগ্রন্থ: যুদ্ধ ও মানুষের মূর্খতা, গান্ধী, নেহেরু ও নোয়াখালী, ঢাকার বুদ্ধদেব বসু, রবীন্দ্রনাথের ধর্মতত্ত¡ ও দর্শন, প্রতীচ্য প্রতিভা, কাজী ইমদাদুল হক রচনাবলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা, অরণ্য বেতার, বাঙালী জাতি বাঙালী মুসলমান ও বাঙালী জাতীয়তাবাদ, রাজনীতি ও ধর্মীয় রাজনীতি, রবীন্দ্র রাজনীতি, নির্বাচিত প্রবন্ধ। জীবনীগ্রন্থ : মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জীবন-কর্মকান্ড-রাজনীতি ও দর্শন, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য, ভাসানী কাহিনী, স্মৃতিতে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, গান্ধী মিশন ডায়েরি, পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রনাথ, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দশ দার্শনিক, পথিকৃৎ নারীবাদী খায়রুন্নেসা খাতুন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী জীবন ও সাহিত্য, হরিশচন্দ্র মিত্র। কাব্যগ্রন্থ : বিকেলবেলা, দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা ও সৈয়দ আবুল মকসুদের কবিতা।