নিউইয়র্ক ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আজ ভয়াল কালরাত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৪২:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০১৯
  • / ৪৯১ বার পঠিত

ঢাকা ডেস্ক: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এমন নৃশংস হত্যাকান্ড দেখেনি বিশ্ব। আবার এই নৃশংস হত্যাকান্ডের পর বাঙালীর দৃঢ় প্রতিরোধও অবাক বিস্ময়ে দেখেছে বিশ্ববাসী। আজ ২৫ মার্চ সোমবার নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ভয়াল কালরাত। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ইতিহাসের ভয়াবহ এ হত্যাকান্ড পরিচালনা করে। পূর্বপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী পূর্ণ সামরিক অস্ত্র নিয়ে রাত ১০টার পর দেশজুড়ে শুরু করে এই জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ। শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ এড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বাঙালি হত্যার নৃশংস নীলনকশা বাস্তবায়নের পথে পা বাড়ান।

সোমবার ভয়াল কালরাত, জাতীয় গণহত্যা দিবস। দিনটির স্মরণে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে রাত ৯টা থেকে ৯ টা ১ মিনিট পর্যন্ত ১ মিনিটের জন্য জরুরি স্থাপনা ও চলমান যানবাহন ব্যতীত সারাদেশে প্রতীকী ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। সেই নৃশংস হত্যাকান্ডের দিনটিকে গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে জাতি। দিন স্মরণে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী গভীর শোক প্রকাশ করে বাণী দিয়েছেন।
অতর্কিত সেই হামলায় প্রতিরোধ করেছিল পুলিশ লাইনের পুলিশ বাহিনী। কিন্তু সেই প্রতিরোধ টিকেনি। মধ্যযুগীয় কায়দায় পাকিস্তানী বাহিনী রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা, ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা ঢাকা শহরে চালায় হত্যাযজ্ঞ এবং অগ্নিসংযোগ। এই রাতেই গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি দেশকে শত্রুমুক্ত করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে সরাসরি এয়ারপোর্ট চলে যান। রাত পৌনে আটটায় তিনি গোপনে বিমানে ঢাকা ত্যাগ করেন নিরপরাধ বাঙারিদের ওপর কাপুরুষোচিত সশস্ত্র হামলা চালাবার নির্দেশ দিয়ে। পাকহানাদার বাহিনী জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে জল্লাদের মত বাংলাদেশের নিরস্ত্র নিরপরাধ জনগণের ওপর মেশিনগান, মর্টার আর ট্যাঙ্ক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং শহরে এক লাখেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে। রাত একটা বাজার সাথে সাথে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২২তম বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা পিলখানা ইপিআর হেড কোয়ার্টারে আক্রমণ চালায়। কেন্দ্রীয় কোয়ার্টার গার্ডে ১৮ জন বাঙালী গার্ড থাকলেও তারা পাল্টা আক্রমণের সুযোগ পায়নি। পিলখানা আক্রমণের সাথে সাথে রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাঁখারি বাজারসহ সমগ্র ঢাকাতেই শুরু হয় ভয়াবহ আক্রমণ। বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচার হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগ করে চলে বর্বর পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী।
মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে মার্কিন ট্যাংক, সঙ্গে সেনাবোঝাই লরি। ইকবাল হল (বর্তমানে জহুরুল হক হল), জগন্নাথ হলে মধ্যযুগীয় কায়দায় চলে পাকিস্তানী হানাদারদের বর্বরতা। শহীদ হন কয়েকশ ছাত্র-ছাত্রী। ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের নয়জন শিক্ষককে হত্যা করা হয়। হানাদারেরা চলার পথে রাস্তার দুই পাশে গুলি ছুঁড়ে মেরে ফেলে অসংখ্য নিরীহ, গরিব মানুষকে। মেডিকেল কলেজ ও ছাত্রাবাসে গোলার পর গোলা ছুঁড়ে হত্যা করা হয় অজ¯্র মানুষ। রাজারবাগে পুলিশের বাঙালি সদস্যরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাদের সামান্য অস্ত্রশস্ত্র দিয়েই। ট্যাংক আর ভারী মেশিনগানের মুখে এ প্রতিরোধ বেশিক্ষণ টেকেনি। গ্যাসোলিন ছিটিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুরো সদর দপ্তর।
২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। গোপন ওয়ারলেস বার্তায় তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। ছাত্র-জনতা-পুলিশ-ইপিআর শত্রুর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রাম শুরু হয়েছে। আমি ঘোষণা করছি আজ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। সর্বস্তরের নাগরিকদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা যে যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুন, যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
পিলখানায় ইপিআর ব্যারাক ও অন্যান্য স্থান থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার লিখিত বাণী ওয়ারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে মেসেজ আকারে পাঠানো হয়। এই বার্তা চট্টগ্রাম ইপিআর সদর দফতরে পৌঁছায়। চট্টগ্রাম উপকূলে নোঙর করা একটি বিদেশি জাহাজও এই বার্তা গ্রহণ করে। চট্টগ্রামে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক জহুর আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বাণী সাইক্লোস্টাইল করে রাতেই শহরবাসীর মধ্যে বিলির ব্যবস্থা করেন।
বঙ্গবন্ধুকে রাত দেড়টায় তার বাসভবন থেকে বন্দি করে শেরেবাংলা নগরের সামরিক বাহিনীর সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুকে সেনানিবাসে স্থানান্তর করা হয়। সকাল পর্যন্ত আদমজী কলেজের একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধুকে আটক রাখা হয়।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর বাণী: দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এক বাণীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় অংশ নিতে তিনি দল-মত-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং নির্যাতিত মা-বোনকে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করছি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

আজ ভয়াল কালরাত

প্রকাশের সময় : ০৭:৪২:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০১৯

ঢাকা ডেস্ক: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এমন নৃশংস হত্যাকান্ড দেখেনি বিশ্ব। আবার এই নৃশংস হত্যাকান্ডের পর বাঙালীর দৃঢ় প্রতিরোধও অবাক বিস্ময়ে দেখেছে বিশ্ববাসী। আজ ২৫ মার্চ সোমবার নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ভয়াল কালরাত। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ইতিহাসের ভয়াবহ এ হত্যাকান্ড পরিচালনা করে। পূর্বপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী পূর্ণ সামরিক অস্ত্র নিয়ে রাত ১০টার পর দেশজুড়ে শুরু করে এই জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ। শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ এড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বাঙালি হত্যার নৃশংস নীলনকশা বাস্তবায়নের পথে পা বাড়ান।

সোমবার ভয়াল কালরাত, জাতীয় গণহত্যা দিবস। দিনটির স্মরণে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে রাত ৯টা থেকে ৯ টা ১ মিনিট পর্যন্ত ১ মিনিটের জন্য জরুরি স্থাপনা ও চলমান যানবাহন ব্যতীত সারাদেশে প্রতীকী ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। সেই নৃশংস হত্যাকান্ডের দিনটিকে গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে জাতি। দিন স্মরণে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী গভীর শোক প্রকাশ করে বাণী দিয়েছেন।
অতর্কিত সেই হামলায় প্রতিরোধ করেছিল পুলিশ লাইনের পুলিশ বাহিনী। কিন্তু সেই প্রতিরোধ টিকেনি। মধ্যযুগীয় কায়দায় পাকিস্তানী বাহিনী রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা, ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা ঢাকা শহরে চালায় হত্যাযজ্ঞ এবং অগ্নিসংযোগ। এই রাতেই গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি দেশকে শত্রুমুক্ত করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে সরাসরি এয়ারপোর্ট চলে যান। রাত পৌনে আটটায় তিনি গোপনে বিমানে ঢাকা ত্যাগ করেন নিরপরাধ বাঙারিদের ওপর কাপুরুষোচিত সশস্ত্র হামলা চালাবার নির্দেশ দিয়ে। পাকহানাদার বাহিনী জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে জল্লাদের মত বাংলাদেশের নিরস্ত্র নিরপরাধ জনগণের ওপর মেশিনগান, মর্টার আর ট্যাঙ্ক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং শহরে এক লাখেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে। রাত একটা বাজার সাথে সাথে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২২তম বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা পিলখানা ইপিআর হেড কোয়ার্টারে আক্রমণ চালায়। কেন্দ্রীয় কোয়ার্টার গার্ডে ১৮ জন বাঙালী গার্ড থাকলেও তারা পাল্টা আক্রমণের সুযোগ পায়নি। পিলখানা আক্রমণের সাথে সাথে রাজারবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাঁখারি বাজারসহ সমগ্র ঢাকাতেই শুরু হয় ভয়াবহ আক্রমণ। বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচার হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগ করে চলে বর্বর পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী।
মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে মার্কিন ট্যাংক, সঙ্গে সেনাবোঝাই লরি। ইকবাল হল (বর্তমানে জহুরুল হক হল), জগন্নাথ হলে মধ্যযুগীয় কায়দায় চলে পাকিস্তানী হানাদারদের বর্বরতা। শহীদ হন কয়েকশ ছাত্র-ছাত্রী। ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের নয়জন শিক্ষককে হত্যা করা হয়। হানাদারেরা চলার পথে রাস্তার দুই পাশে গুলি ছুঁড়ে মেরে ফেলে অসংখ্য নিরীহ, গরিব মানুষকে। মেডিকেল কলেজ ও ছাত্রাবাসে গোলার পর গোলা ছুঁড়ে হত্যা করা হয় অজ¯্র মানুষ। রাজারবাগে পুলিশের বাঙালি সদস্যরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাদের সামান্য অস্ত্রশস্ত্র দিয়েই। ট্যাংক আর ভারী মেশিনগানের মুখে এ প্রতিরোধ বেশিক্ষণ টেকেনি। গ্যাসোলিন ছিটিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুরো সদর দপ্তর।
২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। গোপন ওয়ারলেস বার্তায় তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। ছাত্র-জনতা-পুলিশ-ইপিআর শত্রুর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রাম শুরু হয়েছে। আমি ঘোষণা করছি আজ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। সর্বস্তরের নাগরিকদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা যে যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুন, যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
পিলখানায় ইপিআর ব্যারাক ও অন্যান্য স্থান থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার লিখিত বাণী ওয়ারলেসের মাধ্যমে সারা দেশে মেসেজ আকারে পাঠানো হয়। এই বার্তা চট্টগ্রাম ইপিআর সদর দফতরে পৌঁছায়। চট্টগ্রাম উপকূলে নোঙর করা একটি বিদেশি জাহাজও এই বার্তা গ্রহণ করে। চট্টগ্রামে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক জহুর আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার বাণী সাইক্লোস্টাইল করে রাতেই শহরবাসীর মধ্যে বিলির ব্যবস্থা করেন।
বঙ্গবন্ধুকে রাত দেড়টায় তার বাসভবন থেকে বন্দি করে শেরেবাংলা নগরের সামরিক বাহিনীর সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুকে সেনানিবাসে স্থানান্তর করা হয়। সকাল পর্যন্ত আদমজী কলেজের একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধুকে আটক রাখা হয়।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর বাণী: দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এক বাণীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় অংশ নিতে তিনি দল-মত-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং নির্যাতিত মা-বোনকে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করছি।