আজ ভয়াল একুশ আগস্ট
- প্রকাশের সময় : ০৪:৩১:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০১৭
- / ৮২৮ বার পঠিত
ঢাকা: রক্তস্নাত বিভীষিকাময় ২১ আগস্ট আজ। ভয়াল বিস্ফোরণ, বীভৎস রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের দিন আজ। নারকীয় গ্রেনেড হামলার ত্রয়োদশ বার্ষিকী। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশে এক কলঙ্কময় অধ্যায়ের জন্ম দেয়। বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ এদিন মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পরোক্ষ মদদে যে এই গ্রেনেড হামলা চালানো হয় তা আজ তদন্তের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে।
শোকাবহ আগস্ট মাসেই আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর টার্গেট থেকে ঘাতকরা গ্রেনেড দিয়ে রক্ত¯্রােত বইয়ে দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সমাবেশস্থলে। বাঙালী জাতি আজ ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার ১৩তম বার্ষিকী পালন করবে।
দেশব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী ও বোমা হামলার প্রতিবাদে ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে এ গ্রেনেড হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী বেগম আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন প্রায় ৪শ নেতা-কর্মী সাধারণ মানুষ। এদের অনেকেই এখনো শরীরে গ্রেনেডের স্পিন্টার নিয়ে দুঃসহ জীবন কাটাচ্ছেন। সেদিন অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে মানববর্ম তৈরি করে প্রাণ উত্সর্গ করেছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তবে সেই হামলা থেকে শেখ হাসিনা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি পৃথক মামলায় আদালতে দাখিলকৃত চার্জশিটে মোট ৫২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার এখন শেষ পর্যায়ে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী: গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে হলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহমর্মিতার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণুতা অপরিহার্য।
এদিকে বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ আগস্ট একটি কলঙ্কময় দিন। ২০০৪ সালের এ দিনে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে বর্বরতম গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। চারদিকে যখন গ্রেনেড বিস্ফোরিত হচ্ছে, তখন আমাদের নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীরা মানববর্ম সৃষ্টি করে আমাকে রক্ষা করেন। আল্লাহতায়ালার অশেষ রহমত ও জনগণের দোয়ায় আমি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাই। তবে সন্ত্রাসীদের গ্রেনেড হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগের তত্কালীন সভানেত্রী বেগম আইভি রহমানসহ ২২ নেতা-কর্মী নিহত হন। আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী, সাংবাদিক ও নিরাপত্তাকর্মী। অনেকে আজও পঙ্গুত্বের অভিশাপ বহন করছেন। অনেকে দেহে স্পিন্টার নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। এ হামলার মূল লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, শান্তি ও উন্নয়নের ধারাকে স্তব্ধ করে দেওয়া, বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করে হত্যা, ষড়যন্ত্র, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা। (দৈনিক ইত্তেফাক/ফাইল ছবি)