হাজারো প্রবাসীর শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় জাকির খানের চির বিদায়

- প্রকাশের সময় : ১১:২২:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
- / ৯৭৬ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: হাজারো প্রবাসীর শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় চির বিদায় নিলেন কমিউনিটির অতি পরিচিত মুখ, বাংলাদেশী-আমেরিকান বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী জাকির খান। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) তার নামাজে জানাজায় অংশ নিয়ে সর্বস্তরের হাজারো প্রবাসী অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকে বিদায় জানান। জানাজা অনুষ্ঠানে মূলধারার রাজনীতিকদের মধ্যে নিউইয়র্ক ষ্টেট সিনেট রুবিন দিয়াজ ও ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান এটর্নী সেপুলভেদা সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে মরহুম জাকির খানের মরদেহ বাংলাদেশে তার নিজ গ্রাম সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জে দাফন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য শুক্রবার রাতেই ইত্তেহাদ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে জাকিরের মরদেহ ঢাকার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ ফেব্রুয়ারী বুধবার সন্ধ্যায় তিনি ব্রঙ্কসে নিজ ভাড়া বাসার সামনে বাসার মালিক তাহার মাহরানের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। জাকির খানকে হত্যার অভিযোগে সোমবার রাতেই পুলিশ তার বাড়ী মালিক মিশরীয় বংশদ্ভুত তাহার মাহরানকে (৫১) আটক করেছে। বাসা ভাড়া দেয়া না দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় বলে জানা গেছে। খবর ইউএনএ’র।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাড়ীর মালিকের ছুরিকাঘাতের পর জাকির খানকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় জ্যাকোবী হাসপতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। পরবর্তীতে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্প্রতিবার রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার মরদেহ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের কাছে হস্তান্তর করলে জাকিরের মরদেহ স্থানীয় পার্কচেষ্টার জামে মসজিদে রাখা হয়। জাকির খান সহ তার স্ত্রী ও এক পুত্র এই মসজিদের আজীবন সদস্য।
শুক্রবার বাদ জুম্মা নিহত জাকির খানের জানাজা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তের খবরে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল শামীম আহসান, মূলধারার রাজনীতিক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ সহ হাজার হাজার সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশী নামাজের আগেই পার্কচেষ্টার মসজিদে সমবেত হতে থাকেন। ব্রঙ্কস ছাড়াও নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশী অধ্যুষিত কুইন্স, ব্রুকলীন ও ব্রঙ্কস এবং ট্রাইষ্টেট এলাকা বিশেষ করে নিউইয়র্ক ষ্টেটের পার্শ্ববর্তী নিউজার্সী ও কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্য থেকেও বিপুল সংখ্যক প্রবাসী এই নামাজে জানাজায় অংশ নেন। এজন্য মসজিদ সংলগ্ন রাস্তা বন্ধ করে নামাজ আদায় করতে হয়।
বেলা একটার দিকে জুম্মার নামাজের পর অনুষ্ঠিত জানাজা নামাজে ইমামতি ও বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন পার্কচেষ্টার জামে মসজিদের পেশ ইমাম কাজী মওলানা ক্কারী মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম। নামাজে জানাজায় নিহত জাকিরের পুত্র ও এক ভাইও অংশ নেন। জানাজা নামাজের আগে ও পরে দু’ দফায় কফিনে শায়িত জাকিরের মুখমন্ডল শেষবারের মত দেখতে প্রবাসীদের ভীড় দেখা যায়।
নিহত জাকির খানের নামাজে জানাজ শেষে তার মরদেহ জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ তার মরদেহ ইত্তেহাদ এয়ারলাইন্সের রাত ১১টার ফ্লাইটে উঠিয়ে দেন। জাকির খানের মরদেহের সাথে তার এক ভাই একই ফ্লাইটে ঢাকায় রওনা হন। কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ বার্তা সংস্থা ইউএনএ প্রতিনিধি জানান, ২৬ ফেব্রুয়ারী রোববার সকালে জাকির খানের মরদেহ ঢাকায় পৌছার কথা। তার প্রবাসী তিন ভাই বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং তারা ঢাকাস্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাকিরের মরদেহ গ্রহণ করে সরাসরি সিলেটের জকিগঞ্জ নিয়ে যাবেন। সেখানে পারিবারিক কবর স্থানে জাকির খানের দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার মরদেহ দাফন করা হবে।