হোয়াইট হাউসের একাংশ ভেঙে বলরুম নির্মাণ করছেন ট্রাম্প
- প্রকাশের সময় : ০১:২৩:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৫ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: হোয়াইট হাউসের একাংশ ভেঙে নতুন করে সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিমধ্যেই হোয়াইট হাউসের পূর্বাংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেখানে বলরুম নির্মাণ করা হবে। ঐতিহাসিক স্থাপনা রক্ষার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হয়েছে নানা বিতর্ক। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন প্রায় ২৫ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিতব্য এই বলরুমটি হবে একটি আধুনিক স্থাপনা। এটি হোয়াইট হাউসের ঐতিহাসিক অবকাঠামোকে সম্মান জানিয়ে এর পাশেই নির্মাণ করা হবে। জুলাই মাসে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এটি বর্তমান ভবনের একদম নিকটবর্তী হবে না। ঐতিহ্যবাহী গঠনকে সম্পূর্ণ সম্মান জানিয়েই এটি তৈরি করা হবে। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে বলেন, দীর্ঘ দেড়শ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সকল প্রেসিডেন্টই একটি বলরুম প্রত্যাশা করেছেন। যাতে রাষ্ট্রীয় ভোজ ও বৃহৎ অনুষ্ঠান আয়োজন করা যায়। অবশেষে সেই স্বপ্ন বাস্তব হচ্ছে।
বিতর্ক ও সমালোচনা: হোয়াইট হাউসের স্থাপনা ভেঙে সেখানে বলরুম নির্মাণের ঘোষণার পরই ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। প্রশ্ন তুলেছে ঐতিহাসিক স্থাপনা রক্ষা বিষয়ক সংগঠনগুলো। ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস (এনপিএস) এর সাবেক প্রধান ইতিহাসবিদ রবার্ট কে সাটন বলেন, এই প্রকল্পটি যথাযথ পর্যালোচনা ও প্রক্রিয়া ছাড়াই শুরু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এটি বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী একটি ভবন- অথচ এখানে কী হচ্ছে, তা স্পষ্ট নয়।
ইতিমধ্যেই হোয়াইট হাউসের দক্ষিণ পাশে থাকা ইস্ট উইংয়ের প্রবেশপথ ভেঙে ফেলতে দেখা গেছে। সেখান থেকে ধ্বংসাবশেষ সরানো হচ্ছে। এছাড়া স্থানটিতে ধাতব তার এবং বড় নির্মাণ যন্ত্রপাতিও দৃশ্যমান হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, প্রকল্পটির দায়িত্ব পেয়েছে ক্লার্ক কনস্ট্রাকশন। এর নকশা তৈরি করেছে ম্যাককারি আরকিটেক্টস। নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করবে সিক্রেট সার্ভিস।
স্থপতি জিম ম্যাকক্রেরি এক বিবৃতিতে বলেন, এটি একটি সৌন্দর্য ও প্রয়োজনীয় উন্নয়ন যা ইতিহাসের মর্যাদা রক্ষা করে হোয়াইট হাউসকে আরও সমৃদ্ধ করবে। তবে সোসাইটি অব আর্কিটেকচারাল হিস্টোরিয়াস ও আমেরিকান ইনস্টিউট অব আর্কিটেক্টসের মতো সংস্থা এই পরিবর্তনের স্বচ্ছতা ও প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, ১৯৪২ সালের পর এই প্রথম হোয়াইট হাউসের বাইরের গঠনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে এবং এর জন্য একটি শক্তিশালী পর্যালোচনা প্রক্রিয়া প্রয়োজন।
এবারই প্রথম এমন পরিবর্তন নয়: হোয়াইট হাউসে এর আগেও বিভিন্ন প্রেসিডেন্ট সংস্কার ও পরিবর্তন এনেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাস্কেটবল খেলার জন্য টেনিস কোর্ট পরিবর্তন করেন, আর জেরাল্ড ফোর্ড তৈরি করেন একটি আউটডোর পুল। রুজভেল্টের সময়ে নির্মিত ইন্ডোর পুল প্রেস রুমে রূপান্তরিত হয় নিক্সনের সময়। হ্যারি ট্রুম্যানের আমলে পুরো হোয়াইট হাউস গুটিয়ে নতুন করে তৈরি করা হয়েছিল।
তবে এবার ট্রাম্পের বলরুম নির্মাণ, ভবনের ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা ও ভবিষ্যতের জন্য এক বিতর্কিত অধ্যায় হয়ে উঠতে চলেছে বলে অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছে। ‘জনতার ঘর’ নামে পরিচিত হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের এই পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সঠিকভাবে প্রতিনিধিত্ব করছে কিনা সে প্রশ্নও করছেন বিশ্লেষকরা।




















