নিউইয়র্ক ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

২৬ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ : নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৪০:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৪৬ বার পঠিত

সালাহউদ্দিন আহমেদ: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বরতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটার দিকে তিনি ও তার সফরসঙ্গীরা নিউইয়র্কে পৌঁছান। জেএফকে বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন প্রধান এবং কনসাল জেনারেল তাকে স্বাগত জানান। এর আগে প্রধান উপদেষ্টা রোববার দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। সফরকালে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন। গত বছরের মতো এবারও জাতিসংঘের অধিবেশনে ড. ইউনূসের সফর সঙ্গীও ছোট আকারের।
জাতিসংঘ সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে বিভিন্ন ইভেন্টেও অংশ নেবেন। তার সফরসঙ্গী হয়েছেন ছয়জন রাজনৈতিক নেতা। তারা হলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির এবং জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ড. নকিবুর রহমান তারেক, যিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকেই প্রতিনিধিদলে যোগ দেবেন।
এছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা ফৌজুল কবির খান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ছরতি বছরের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে ‘হাই লেভেল কনফারেন্স অন দ্য সিচুয়েশন অব রোহিঙ্গা মুসলিমস অ্যান্ড আদার মাইনোরিটিস ইন মিয়ানমার’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘে এমন উচ্চ পর্যায়ের সভা এবারই প্রথম আয়োজন করা হচ্ছে।
উচ্চ পর্যায়ের সভা থেকে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের একটি কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে আন্তর্জাতিক অংশীদার ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। অধ্যাপক ইউনূস গত বছর জাতিসংঘে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্মেলন আয়োজনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাব সদস্য রাষ্ট্রগুলো সর্বসম্মতিক্রমে সমর্থন দিয়েছেন।
এছাড়া অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন ও জলবায়ু ন্যায়বিচার, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, অবৈধ অর্থপাচার, নিরাপদ অভিবাসন ও অভিবাসী অধিকার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে টেকসই প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠাসহ বিশ্বের নানা ইস্যু তুলে ধরবেন।
নিউইয়র্ক সফরের শেষে আগামী ২ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, নতুন সভাপতি জার্মানীর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক-এর দায়িত্বগ্রহণের মধ্যদিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন। ঐদিন সকালে নিউইয়র্কের ম্যানহাটানস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অধিবেশনের উদ্বোধন হয়। এই অধিবেশনের মেয়াদ থাকবে আগামী বছরের অর্থাৎ ২০২৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অধিবেশনে উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক চলবে একটানা সাত দিন, ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বিশ্ব নেতাদের সবচেয়ে বড় আসর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এবারের অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘একসঙ্গে ভালো : শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের পথে ৮০ বছর ও আরও বেশি।’ এবার উচ্চ পর্যায়ের সভার মধ্য দিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর শুরু হবে জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠান। পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ সাধারণ বিতর্কে অংশ নেবেন।
অধিবেশনের উদ্বোধনী দিনে শপথ গ্রহনের মধ্যদিয়ে নতুন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন জার্মানীর সাবেক মন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক। এরপর তিনি সভাপতি হিসেবে ভাষণ দেন। এছাড়াও উদ্বোধনী দিনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস তার ভাষণে শান্তি, নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
বিগত বছরগুলোর মতো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা সাধারণ বিতর্কে অংশ নেবেন। প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ বিতর্কের প্রথম দিন ২৩ সেপ্টেম্বর বক্তব্য রাখবেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইন ইনাফিউ লানা দ্যা সিলভা। এরপর বক্তব্য রাখবে স্বাগতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য রাখার কথা। একইদিন ভাষণ দেবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে এবারের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে সবমিলিয়ে এবারের অধিবেশনে শতাধিক দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ যোগ দিচ্ছেন।
জাতিসংঘের প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ অধিবেশন ও ২৬ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক অস্ত্র পুরোপুরি বিলুপ্তির আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে উচ্চপর্যায়ের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। অধিবেশনে চলমান বৈশ্বিক সংঘাত বিশেষ করে ইউক্রেন সংকট, ফিলিস্তিনের যুদ্ধ পরিস্থিতি ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার পাশাপাশি দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাস, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রভৃতি বিষয় প্রাধান্য পাবে। বিশেষ করে এবারের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া, গাজায় ইসরাইলী বাহিনীর আগ্রাসন এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ প্রসঙ্গ সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব পাবে। চলমান আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এবারের অধিবেশন বিশ্ব কূটনীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা দেবে- এমনটাই সবার প্রত্যাশা। আরো উল্লেখ্য, আট দশক আগে ১৯৪৫ সালে সংস্থাটি গঠনে প্রতিষ্ঠাতারা যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিকোতে মিলিত হয়েছিলেন।

 

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

২৬ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ : নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

প্রকাশের সময় : ১১:৪০:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সালাহউদ্দিন আহমেদ: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বরতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটার দিকে তিনি ও তার সফরসঙ্গীরা নিউইয়র্কে পৌঁছান। জেএফকে বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন প্রধান এবং কনসাল জেনারেল তাকে স্বাগত জানান। এর আগে প্রধান উপদেষ্টা রোববার দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। সফরকালে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন। গত বছরের মতো এবারও জাতিসংঘের অধিবেশনে ড. ইউনূসের সফর সঙ্গীও ছোট আকারের।
জাতিসংঘ সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে বিভিন্ন ইভেন্টেও অংশ নেবেন। তার সফরসঙ্গী হয়েছেন ছয়জন রাজনৈতিক নেতা। তারা হলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির এবং জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ড. নকিবুর রহমান তারেক, যিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকেই প্রতিনিধিদলে যোগ দেবেন।
এছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের মধ্যে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা ফৌজুল কবির খান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ছরতি বছরের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে ‘হাই লেভেল কনফারেন্স অন দ্য সিচুয়েশন অব রোহিঙ্গা মুসলিমস অ্যান্ড আদার মাইনোরিটিস ইন মিয়ানমার’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘে এমন উচ্চ পর্যায়ের সভা এবারই প্রথম আয়োজন করা হচ্ছে।
উচ্চ পর্যায়ের সভা থেকে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের একটি কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে আন্তর্জাতিক অংশীদার ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। অধ্যাপক ইউনূস গত বছর জাতিসংঘে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সম্মেলন আয়োজনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাব সদস্য রাষ্ট্রগুলো সর্বসম্মতিক্রমে সমর্থন দিয়েছেন।
এছাড়া অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন ও জলবায়ু ন্যায়বিচার, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, অবৈধ অর্থপাচার, নিরাপদ অভিবাসন ও অভিবাসী অধিকার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে টেকসই প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠাসহ বিশ্বের নানা ইস্যু তুলে ধরবেন।
নিউইয়র্ক সফরের শেষে আগামী ২ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, নতুন সভাপতি জার্মানীর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক-এর দায়িত্বগ্রহণের মধ্যদিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন। ঐদিন সকালে নিউইয়র্কের ম্যানহাটানস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অধিবেশনের উদ্বোধন হয়। এই অধিবেশনের মেয়াদ থাকবে আগামী বছরের অর্থাৎ ২০২৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অধিবেশনে উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক চলবে একটানা সাত দিন, ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বিশ্ব নেতাদের সবচেয়ে বড় আসর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এবারের অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘একসঙ্গে ভালো : শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের পথে ৮০ বছর ও আরও বেশি।’ এবার উচ্চ পর্যায়ের সভার মধ্য দিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর শুরু হবে জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠান। পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ সাধারণ বিতর্কে অংশ নেবেন।
অধিবেশনের উদ্বোধনী দিনে শপথ গ্রহনের মধ্যদিয়ে নতুন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন জার্মানীর সাবেক মন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক। এরপর তিনি সভাপতি হিসেবে ভাষণ দেন। এছাড়াও উদ্বোধনী দিনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস তার ভাষণে শান্তি, নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
বিগত বছরগুলোর মতো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা সাধারণ বিতর্কে অংশ নেবেন। প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ বিতর্কের প্রথম দিন ২৩ সেপ্টেম্বর বক্তব্য রাখবেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইন ইনাফিউ লানা দ্যা সিলভা। এরপর বক্তব্য রাখবে স্বাগতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য রাখার কথা। একইদিন ভাষণ দেবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে এবারের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে সবমিলিয়ে এবারের অধিবেশনে শতাধিক দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ যোগ দিচ্ছেন।
জাতিসংঘের প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ অধিবেশন ও ২৬ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক অস্ত্র পুরোপুরি বিলুপ্তির আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে উচ্চপর্যায়ের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। অধিবেশনে চলমান বৈশ্বিক সংঘাত বিশেষ করে ইউক্রেন সংকট, ফিলিস্তিনের যুদ্ধ পরিস্থিতি ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার পাশাপাশি দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাস, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রভৃতি বিষয় প্রাধান্য পাবে। বিশেষ করে এবারের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া, গাজায় ইসরাইলী বাহিনীর আগ্রাসন এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ প্রসঙ্গ সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব পাবে। চলমান আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এবারের অধিবেশন বিশ্ব কূটনীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা দেবে- এমনটাই সবার প্রত্যাশা। আরো উল্লেখ্য, আট দশক আগে ১৯৪৫ সালে সংস্থাটি গঠনে প্রতিষ্ঠাতারা যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিকোতে মিলিত হয়েছিলেন।