নিউইয়র্ক ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কেউ আমেরিকা ছেড়ে যাবেন না

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৬:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
  • / ৭৯১ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নতুন আদেশ জারি পর উদ্ভুত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে নিউইয়র্কে আয়োজিত ইমিগ্রেশন বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, ‘নিউইয়র্ক সিটি হচ্ছে ইমিগ্র্যান্টদের নিরাপদ স্থান। সিটির অভিবাসীদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন নতুন আদেশ জারি করলেও নিউইয়র্কের গভর্নর ও মেয়র অভিবাসীদের পক্ষে রয়েছেন। আপাতত: আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। কেউ কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত না হলে কারো কিছুই হবে না। তাই কেউ আমেরিকা ছেড়ে যাবেন না। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, আইন মেনে চলতে হবে’। বক্তারা পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অভিবাসীদের আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পরামর্শ দেন।
সিটির জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে গত ২৭ জানুয়ারী শুক্রবার সন্ধ্যায় এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে ইমিগ্রেশন, ইনকাম ট্যাক্স ও ইনস্যুরেন্স বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা তাদের অভিমত তুলে ধরেন এবং উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী সেমিনারে অংশ নেন।
সেমিনারের কি-নোট স্পিকার ছিলেন বিশিষ্ট ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নি বেরি সিলভারউইগ। বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সিপিএ ইয়াকুব এ খান এবং এনওয়াই ইনস্যুরেন্স ব্রোকারেজ ইনক-এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও শাহ নেওয়াজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ এন. মজুমদার। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি এলেন কাস, অ্যাটর্নি মার্ক লিভিংটন, ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক, বাংলাদেশী-আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট শামসুল হক প্রমুখ। সেমিনারটি উপস্থাপনায় ছিলেন আশরাফুল হাসান বুলবুল।
সেমিনারে অ্যাটর্নি বেরি সিলভারউইগ বলেন, আমেরিকা ইমিগ্রান্ট কান্ট্রি। এই দেশে সবার সমানাধিকার। কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যা খুশি তাই করতে পারবেন না। তবে আমেরিকা আইনের দেশ। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে তারা যেন আইন মেনে চলেন এবং কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত না হন। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক সিটি হচ্ছে ইমিগ্র্যান্টদের নিরাপদ স্থান। এখানে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা চাইলেই কাউকে বের করে দিতে পারবে না। এমনকি বৈধতা চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। তাদের আসল কাজ হচ্ছে দেশের সংবিধান সমুন্নত রেখে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইমিগ্র্যান্ট বিরোধী নির্বাহী আদেশের ব্যাপারে অ্যাটর্নি বেরি সিলভারউইগ বলেন, আমাদের আশাহত হওয়ার কিছু নেই। আবার ভয় পাওয়ারও কিছু নেই। সেমিনারে তিনি ইমিগ্র্যান্টদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথাও তুলে ধরেন। এছাড়া তিনি ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত তথ্য সবাইকে হাল নাগাদ করার পরামর্শ দেন।
Mojumder Seminar-2সেমিনারে বক্তারা বলেন, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেসময়কার বাস্তবতায় অনেক বাংলাদেশী নিবন্ধনের ভয়ে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পরে অনেক চেষ্টা করেও তারা আর আমেরিকায় ঢুকতে পারেননি। এখন যে অবস্থা তৈরি হয়েছে তাতেও আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। আইনজীবীরা বলেন, কোনো বাংলাদেশী যেন ভয়ে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চলে না যান। তারা যেন যেকোনো বিষয়েই আইনি পরামর্শ নেন।
মোহাম্মদ এন মজুমদার সেমিনারে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমেরিকা আইনের দেশ। ভয় না পেয়ে আইন মেনে চললে কোন সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, এখন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিতর্কিত আইনের বিরুদ্ধে সকল আমেরিকানদের পাশাপাশি বাংলাদেশী কমিউনিটিকেও প্রবাবাদী হতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশী কমিউনিটিকে আইনগত সহায়তা দিতে প্রতিবছরই এ ধরনের সেমিনারের আয়োজন করা হবে, যাতে প্রবাসী বাংলাদেশীরা উপকৃত হন। এছাড়াও বছরের যে কোন সময় ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন আইনি পরামর্শ নেয়ার জন্য তার সঙ্গে সবাইকে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কেউ আমেরিকা ছেড়ে যাবেন না

প্রকাশের সময় : ০২:০৬:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০১৭

নিউইয়র্ক: প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নতুন আদেশ জারি পর উদ্ভুত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে নিউইয়র্কে আয়োজিত ইমিগ্রেশন বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, ‘নিউইয়র্ক সিটি হচ্ছে ইমিগ্র্যান্টদের নিরাপদ স্থান। সিটির অভিবাসীদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন নতুন আদেশ জারি করলেও নিউইয়র্কের গভর্নর ও মেয়র অভিবাসীদের পক্ষে রয়েছেন। আপাতত: আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। কেউ কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত না হলে কারো কিছুই হবে না। তাই কেউ আমেরিকা ছেড়ে যাবেন না। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, আইন মেনে চলতে হবে’। বক্তারা পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অভিবাসীদের আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পরামর্শ দেন।
সিটির জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে গত ২৭ জানুয়ারী শুক্রবার সন্ধ্যায় এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে ইমিগ্রেশন, ইনকাম ট্যাক্স ও ইনস্যুরেন্স বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা তাদের অভিমত তুলে ধরেন এবং উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী সেমিনারে অংশ নেন।
সেমিনারের কি-নোট স্পিকার ছিলেন বিশিষ্ট ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নি বেরি সিলভারউইগ। বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সিপিএ ইয়াকুব এ খান এবং এনওয়াই ইনস্যুরেন্স ব্রোকারেজ ইনক-এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও শাহ নেওয়াজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ এন. মজুমদার। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি এলেন কাস, অ্যাটর্নি মার্ক লিভিংটন, ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক, বাংলাদেশী-আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট শামসুল হক প্রমুখ। সেমিনারটি উপস্থাপনায় ছিলেন আশরাফুল হাসান বুলবুল।
সেমিনারে অ্যাটর্নি বেরি সিলভারউইগ বলেন, আমেরিকা ইমিগ্রান্ট কান্ট্রি। এই দেশে সবার সমানাধিকার। কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যা খুশি তাই করতে পারবেন না। তবে আমেরিকা আইনের দেশ। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে তারা যেন আইন মেনে চলেন এবং কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত না হন। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক সিটি হচ্ছে ইমিগ্র্যান্টদের নিরাপদ স্থান। এখানে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা চাইলেই কাউকে বের করে দিতে পারবে না। এমনকি বৈধতা চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। তাদের আসল কাজ হচ্ছে দেশের সংবিধান সমুন্নত রেখে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইমিগ্র্যান্ট বিরোধী নির্বাহী আদেশের ব্যাপারে অ্যাটর্নি বেরি সিলভারউইগ বলেন, আমাদের আশাহত হওয়ার কিছু নেই। আবার ভয় পাওয়ারও কিছু নেই। সেমিনারে তিনি ইমিগ্র্যান্টদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথাও তুলে ধরেন। এছাড়া তিনি ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত তথ্য সবাইকে হাল নাগাদ করার পরামর্শ দেন।
Mojumder Seminar-2সেমিনারে বক্তারা বলেন, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেসময়কার বাস্তবতায় অনেক বাংলাদেশী নিবন্ধনের ভয়ে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পরে অনেক চেষ্টা করেও তারা আর আমেরিকায় ঢুকতে পারেননি। এখন যে অবস্থা তৈরি হয়েছে তাতেও আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। আইনজীবীরা বলেন, কোনো বাংলাদেশী যেন ভয়ে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চলে না যান। তারা যেন যেকোনো বিষয়েই আইনি পরামর্শ নেন।
মোহাম্মদ এন মজুমদার সেমিনারে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমেরিকা আইনের দেশ। ভয় না পেয়ে আইন মেনে চললে কোন সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, এখন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিতর্কিত আইনের বিরুদ্ধে সকল আমেরিকানদের পাশাপাশি বাংলাদেশী কমিউনিটিকেও প্রবাবাদী হতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশী কমিউনিটিকে আইনগত সহায়তা দিতে প্রতিবছরই এ ধরনের সেমিনারের আয়োজন করা হবে, যাতে প্রবাসী বাংলাদেশীরা উপকৃত হন। এছাড়াও বছরের যে কোন সময় ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন আইনি পরামর্শ নেয়ার জন্য তার সঙ্গে সবাইকে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান।