সাংবাদিকদের সাথে নতুন কনসাল জেনারেল ও প্রেস মিনিস্টার এর মতবিনিময় সভা

- প্রকাশের সময় : ০২:১৫:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
- / ১৪ বার পঠিত
প্রবাসীদের জন্য শীঘ্রই শুরু হচ্ছে এনআইডি কার্যক্রম : মোজাম্মেল হক
যেকোন উপায়ে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে : গোলাম মর্তুজা
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেটে নতুন কনসাল জেনারেল মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক এবং ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে নতুন প্রেস মিনিস্টার সাংবাদিক গোলাম মোর্তুজা যোগ দিয়েছেন। মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক বিদায়ী কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদার স্থলাভিক্ত হলেন। অপরদিকে জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের পর দূতাবাসের মিনিস্টার (প্রেস) পদেও শূন্য আসনে যোগ দিলেন সাংবাদিক গোলাম মোর্তুজা। উল্লেখ্য, নতুন কনসাল জেনারেল চলতি মাসে এবং নতুন প্রেস মিনিস্টার গত মে মাসে স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগ দেন। এদিকে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকেলে তারা প্রথম সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। কন্যুলেটের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভার শুরুতে উভয়ে দেশ ও প্রবাসের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের দায়িত্ব পালনে মিডিয়ার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। এরপর তারা উপস্থিত সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। খবর ইউএনএ’র।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে নবাগত কনসাল জেনারেল মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, জুলাই-আগেষ্ট আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, আমাদেরকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দায়িত্ব পালন করতে হয়। দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর আমাকে নিউইয়র্কের কনস্যুলেটে নতুন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এখানেও অনেক চ্যালেঞ্জ। আশা করছি সবার সহযোগিতায় সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো। তিনি বলেন, প্রবাসীদের সেবার মান বৃদ্ধি আর দিনের কাজ দিনেই সম্পন্ন করা তার প্রধান দায়িত্ব। বলেন, আমরা কনস্যুলেটকে প্রবাসী বান্ধব কনস্যুলেট হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। প্রবাসীদের দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পর্কে কোন আবেদন পেলেই আমরা তা করে দিচ্ছি।
মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশী যাদের আমেরিকান পাসপোর্ট রয়েছে তাদের জন্য খুব শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদানের কার্যক্রম শুরু করা হবে। তিনি বলেন, মাস খানেক আগে ঢাকার একটি টিম এ বিষয়ে কনস্যুলেট পরিদর্শন করে খোঁজখবর নিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে এই কার্যক্রম কানাডায় শুরু হয়েছে।
সভায় নবাগত প্রেস মিনিস্টার গোলাম মর্তুজা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রধানতম দুটি কাজ। প্রথমটি হল প্রবাসীদের সেবা দেওয়া এবং তাদের স্বার্থ দেখা। এর বাইরেও বাংলাদেশ বিরোধী প্রচার ও প্রপাকান্ড সম্পর্কে সঠিত তথ্য সংশ্লিস্টদের অবহিত করাও দূতাবাসের দায়িত্ব। পাশাপাশি বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে এগিয়ে নেওয়া। তাই দূতাবাসের কেউ প্রবাসীর সাথে খারাপ ব্যবহার করতেই পারে না। এরপরও কনস্যুলেট অফিসে প্রবাসীদের হয়রানী সহ কোন অভিযোগ থাকলে কনস্যুলেট জেনারেলকে অবহিত করবেন। তিনি অবশ্যই এর সমাধান করবেন।
গোলাম মোর্তজা বলেন, অতি সম্প্রতি ইংল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পরিস্কার মেসেজ দিয়ে বলেছেন, যে কোন উপায়ে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা দরকার। এবং এই ব্যাপারে অফিশিয়ালি কাজ চলছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে। প্রসঙ্গত গোলাম মোর্তোজা বলেন, প্রবাসে সাংবাদিকতা করা যেমন দায়িত্বের, তেমনি তা এক ধরনের আত্মিক বন্ধনেরও। প্রবাসে যারা গণমাধ্যমকে সচল রেখেছেন, তাঁদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার অগ্রগতি সম্পর্কিত এক এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তজা বলেন, পৃথিবীতে মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলা দেশগুলো কোন না কোন প্রক্রিয়া অন্য দেশ থেকে পাচার করা অর্থ সে দেশে নিয়ে যাওয়ার পর সেটাকে আইনিভাবে স্বাগত জানায় এবং সুরক্ষা দেয়। তাই মিডিয়ায় পাচারকৃত অর্থে বাড়ী-গাড়ী, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলেও, এখানকার আইনে দেখা যায় পাচারকৃত অর্থে গড়ে তোলা ঐসব সম্পদ অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। তাই ইচ্ছা করলে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তবে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বর্তমান সরকার পাচারকৃত অর্থ বাংলাদেশে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে দৃশ্যমান কাজ করছে। এবং যার প্রতিফলন লন্ডনে দেখা গেছে। আমেরিকা থেকেও পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কাজ চলছে বলে তিনি জানান।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ট্যারিফ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলমান রয়েছে। টেষ্ট ডিপার্টমেন্টের সাথে এই স্পর্শকাতর আলোচনায় দূতাবাসকে এখন খুবই ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে।
গোলাম মর্তুজা আরো বলেন, বিগত সরকার আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা আইএমএফ এর সাথে আলোচনায় যেকোনো শর্তে লোন পাওয়ার অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সাথে আইএমএফ এর আলোচনায় কখনো মনে হয়নি, আইএমএফ লোন দিতে রাজি না। তবে তারা শর্তের বদলে কিছু পলিসি বাস্তবায়নে কথা বলে। বর্তমান সরকার অযাচিত কোন শর্ত মানতে রাজি না হওয়ার মাধ্যমে বেশ সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে গোলাম মর্তুজা বলেন, বিগত কোন প্রেস মিনিস্টার কোথায় লুকিয়ে আছেন, কোথায় কি করছেন তা দেখার কাজ আমাদের না।