নিউইয়র্ক ০৬:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

শুরুতেই কথার বরখেলাপ, আয়কর তথ্য দেবেন না ট্রাম্প

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:০৫:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৭৩৫ বার পঠিত

ওয়াশিংটন ডিসি: প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর আয়কর বিবরণী প্রকাশ করবেন না জানান। আগে কয়েকবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং নিরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পরও এটা প্রকাশ করা হবে না। গত ২২ জানুয়ারী রোববার যুক্তরাষ্ট্রের এবিসি টেলিভিশনকে এ তথ্য জানান ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা কেলিয়ানি কনওয়ে। এবিসি টেলিভিশনের ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে কেলিয়ানি কনওয়ের কাছে দুই লাখের বেশি মার্কিন নাগরিকের একটি অনলাইন পিটিশন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। এতে ট্রাম্পের আয়কর প্রকাশের দাবি জানান পিটিশনে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিরা। তা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে কেলিয়ানি কনওয়ে বলেন, ‘হোয়াইট হাউসের উত্তর হচ্ছে, তিনি (ট্রাম্প) আয়কর বিবরণী প্রকাশ করছেন না।’ ট্রাম্পের এ উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা এ বিষয়গুলো মোকাবিলা করেছি। মানুষ এসবকে পাত্তা দেননি। তাঁরা ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন।’
আয়কর তথ্য প্রকাশ না করার মাধ্যমে ট্রাম্প ৪০ বছরের মার্কিন ঐতিহ্যের ব্যত্যয় ঘটাচ্ছেন। ৪০ বছরের মধ্যে নির্বাচিত সব মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁদের আয়কর প্রকাশ করেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, আয়কর নিরীক্ষা করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে তা প্রকাশ করা হবে। কিন্তু এখন আগের কথার বরখেলাপ করা হচ্ছে তাঁর প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নীতি ও অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো মুছে ফেলে সেখানে নতুন অগ্রাধিকারের বিষয় সংযোজন করা হচ্ছে। কিন্তু হোয়াইট হাউসের প্রতি পিটিশন দায়ের করার অংশ রয়েছে অপরিবর্তিত। সেখানে ট্রাম্পের আয়করের তথ্য প্রকাশের দাবিতে করা পিটিশনটি এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। কয়েক দিনের মাথায় প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার অনলাইন স্বাক্ষর পড়েছে।
এদিকে গোপনীয়তা ফাঁসকারী ওয়েবসাইট উইকিলিকস বলেছে, তারা ট্রাম্পের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করতে প্রস্তুত। গত রোববার এক টুইটার বার্তায় উইকিলিকস ট্রাম্পের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে। যার কাছে যা তথ্য আছে, তা দেওয়া হলে উইকিলিকস প্রকাশ করবে। ওয়েবসাইটটি বলছে, ট্রাম্পের আয়কর প্রকাশ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার বিষয়টি হিলারির গোল্ডম্যান স্যাক্সের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতা গোপনের চেয়েও গুরুতর।
গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্ট-এবিসির জরিপে দেখা যায়, ৭৪ ভাগ মার্কিন চায় ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী প্রকাশ করা হোক। কেলিয়ানি অবশ্য এই জরিপ মানতে নারাজ। এবিসি টেলিভিশনকে তিনি বলেন, ‘তাঁরা (জনগণ) ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। বিষয়টি আমি পরিষ্কার করে দিতে চাই। অধিকাংশ মার্কিন ট্রাম্পের আয়করের তুলনায় তাঁর জামানায় নিজেদের আয়কর কী ধরনের হবে, তা নিয়ে ভাবেন।’
গত অক্টোবরে ট্রাম্পের কর ফাঁকি দেওয়ার তথ্য প্রমাণসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল নিউইয়র্ক টাইমস। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ১৯৯৫ সালে ট্রাম্প তাঁর আয়কর ঘোষণায় প্রায় এক বিলিয়ন ডলার লোকসানের হিসাব দিয়েছিলেন। এর ফলে আমেরিকার জটিল করনীতি ব্যবহার করে সম্পূর্ণ আইনসম্মতভাবে তিনি পরবর্তী ১৮ বছর ১ পয়সাও আয়কর না দিয়ে দিব্যি পার পেতে পারেন। প্রচারণাশিবির থেকে তখন এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়নি।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা হবে: এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আইনি সংস্থা জানিয়েছে, তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করবে। কেননা, ট্রাম্প বিদেশি সরকারের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।(গার্ডিয়ান)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

শুরুতেই কথার বরখেলাপ, আয়কর তথ্য দেবেন না ট্রাম্প

প্রকাশের সময় : ০৮:০৫:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০১৭

ওয়াশিংটন ডিসি: প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর আয়কর বিবরণী প্রকাশ করবেন না জানান। আগে কয়েকবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং নিরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পরও এটা প্রকাশ করা হবে না। গত ২২ জানুয়ারী রোববার যুক্তরাষ্ট্রের এবিসি টেলিভিশনকে এ তথ্য জানান ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা কেলিয়ানি কনওয়ে। এবিসি টেলিভিশনের ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে কেলিয়ানি কনওয়ের কাছে দুই লাখের বেশি মার্কিন নাগরিকের একটি অনলাইন পিটিশন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। এতে ট্রাম্পের আয়কর প্রকাশের দাবি জানান পিটিশনে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিরা। তা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে কেলিয়ানি কনওয়ে বলেন, ‘হোয়াইট হাউসের উত্তর হচ্ছে, তিনি (ট্রাম্প) আয়কর বিবরণী প্রকাশ করছেন না।’ ট্রাম্পের এ উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা এ বিষয়গুলো মোকাবিলা করেছি। মানুষ এসবকে পাত্তা দেননি। তাঁরা ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন।’
আয়কর তথ্য প্রকাশ না করার মাধ্যমে ট্রাম্প ৪০ বছরের মার্কিন ঐতিহ্যের ব্যত্যয় ঘটাচ্ছেন। ৪০ বছরের মধ্যে নির্বাচিত সব মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁদের আয়কর প্রকাশ করেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, আয়কর নিরীক্ষা করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে তা প্রকাশ করা হবে। কিন্তু এখন আগের কথার বরখেলাপ করা হচ্ছে তাঁর প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নীতি ও অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো মুছে ফেলে সেখানে নতুন অগ্রাধিকারের বিষয় সংযোজন করা হচ্ছে। কিন্তু হোয়াইট হাউসের প্রতি পিটিশন দায়ের করার অংশ রয়েছে অপরিবর্তিত। সেখানে ট্রাম্পের আয়করের তথ্য প্রকাশের দাবিতে করা পিটিশনটি এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। কয়েক দিনের মাথায় প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার অনলাইন স্বাক্ষর পড়েছে।
এদিকে গোপনীয়তা ফাঁসকারী ওয়েবসাইট উইকিলিকস বলেছে, তারা ট্রাম্পের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করতে প্রস্তুত। গত রোববার এক টুইটার বার্তায় উইকিলিকস ট্রাম্পের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে। যার কাছে যা তথ্য আছে, তা দেওয়া হলে উইকিলিকস প্রকাশ করবে। ওয়েবসাইটটি বলছে, ট্রাম্পের আয়কর প্রকাশ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার বিষয়টি হিলারির গোল্ডম্যান স্যাক্সের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতা গোপনের চেয়েও গুরুতর।
গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্ট-এবিসির জরিপে দেখা যায়, ৭৪ ভাগ মার্কিন চায় ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী প্রকাশ করা হোক। কেলিয়ানি অবশ্য এই জরিপ মানতে নারাজ। এবিসি টেলিভিশনকে তিনি বলেন, ‘তাঁরা (জনগণ) ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। বিষয়টি আমি পরিষ্কার করে দিতে চাই। অধিকাংশ মার্কিন ট্রাম্পের আয়করের তুলনায় তাঁর জামানায় নিজেদের আয়কর কী ধরনের হবে, তা নিয়ে ভাবেন।’
গত অক্টোবরে ট্রাম্পের কর ফাঁকি দেওয়ার তথ্য প্রমাণসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল নিউইয়র্ক টাইমস। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ১৯৯৫ সালে ট্রাম্প তাঁর আয়কর ঘোষণায় প্রায় এক বিলিয়ন ডলার লোকসানের হিসাব দিয়েছিলেন। এর ফলে আমেরিকার জটিল করনীতি ব্যবহার করে সম্পূর্ণ আইনসম্মতভাবে তিনি পরবর্তী ১৮ বছর ১ পয়সাও আয়কর না দিয়ে দিব্যি পার পেতে পারেন। প্রচারণাশিবির থেকে তখন এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়নি।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা হবে: এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আইনি সংস্থা জানিয়েছে, তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করবে। কেননা, ট্রাম্প বিদেশি সরকারের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।(গার্ডিয়ান)