নিউইয়র্ক ১১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মধ্যপ্রাচ্যে কি নতুন খেলা শুরু করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩১:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১২৬ বার পঠিত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের আন্তর্জাতিক মঞ্চে। দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই তার নজর মধ্যপ্রাচ্যে। সৌদি আরব, কাতার আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের সফরে গড়ে তুলতে চাইছেন কৌশলগত, কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক এক ত্রিমাত্রিক জোট। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানবিরোধী জোট তৈরির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎকে নিরাপদ রাখতে মুখিয়ে আছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পরেই প্রথম আন্তর্জাতিকে সফরে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেও প্রথম আন্তর্জাতিক সফরেই তার গন্তব্য—রিয়াদ, দোহা, আবুধাবি। তবে কি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন এক শক্তির খেলা শুরু করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প?

ওয়াশিংটনের মতে, এই তিনটি রাজধানীই এখন নতুন বৈশ্বিক বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের পরিণত কেন্দ্র। আরটির এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতা সেই দেশগুলোর সঙ্গে, যারা এখন কেবল জ্বালানির উৎস নয়, বরং প্রযুক্তি, বিনিয়োগ, মানবিক কূটনীতি ও আঞ্চলিক ভারসাম্যে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

সূত্র জানায়, আগামী মে মাসে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর নিছক আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব নির্দেশনা। ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরে থাকা ব্যবসামুখী নীতিনির্ধারকেরা এই সফরকে দেখছেন বিনিয়োগ আনার পথ হিসেবে, আবার একইসঙ্গে এক আঞ্চলিক এজেন্ডা নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবেও। উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ওয়াশিংটনের এই ঘনিষ্ঠতা কেবল নিরাপত্তার জন্য নয়। জ্বালানি বাজারে স্থিতিশীলতা, উচ্চপ্রযুক্তি খাতে অংশীদারিত্ব গড়ার এবং প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ সহযোগিতার ভিত্তি তৈরি করাও এ পরিকল্পনার অংশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সফরের বড় দিক হচ্ছে ইরানবিরোধী অবস্থানকে পাকাপোক্ত করা। পারস্য উপসাগরে ইরানের প্রভাব ঠেকাতে ইসরাইল, সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত নিয়ে একটি শক্তিশালী জোট গঠন তৈরি করতে চান ট্রাম্প। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্যমতে, গাজায় চলমান সংঘাতের ভেতরেও ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করতে আগ্রহী ট্রাম্প প্রশাসন। ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্ভাব্য সম্পর্কোন্নয়নে কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত নির্ধারকের ভূমিকা পালন করতে পারবে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নতুন বাণিজ্য চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তি, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ প্রবাহকে উৎসাহ দেয়া এই সফরের সুস্পষ্ট লক্ষ্য হতে পারে। তারা আরও বলছেন, ট্রাম্পের কাছে পররাষ্ট্রনীতি কখনোই শুধুই নীতিকথা নয়, এটি ব্যবসার মতো, যেখানে লাভ, প্রভাব ও উপস্থিতিই মুখ্য। পারস্য উপসাগরের দেশগুলো তাই এখন শুধু মিত্র নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সম্ভাব্য পৃষ্ঠপোষকও। রাজনৈতিকভাবে এই সফর ট্রাম্পের জন্য দ্বিমুখী কৌশল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। একদিকে, তিনি বিশ্বকে দেখাতে চান, যুক্তরাষ্ট্র এখনো বৈশ্বিক নীতি নির্ধারণে সক্ষম। অন্যদিকে, নিজের ঘরোয়া ভোটারদের দেখাতে চান, তিনি একজন শক্তিশালী বিশ্বনেতা, যিনি জানেন কীভাবে কূটনীতি আর ব্যবসা একসঙ্গে চালাতে হয়। সূত্র : সময় নিউজ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যে কি নতুন খেলা শুরু করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প?

প্রকাশের সময় : ১২:৩১:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের আন্তর্জাতিক মঞ্চে। দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই তার নজর মধ্যপ্রাচ্যে। সৌদি আরব, কাতার আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের সফরে গড়ে তুলতে চাইছেন কৌশলগত, কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক এক ত্রিমাত্রিক জোট। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানবিরোধী জোট তৈরির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎকে নিরাপদ রাখতে মুখিয়ে আছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পরেই প্রথম আন্তর্জাতিকে সফরে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেও প্রথম আন্তর্জাতিক সফরেই তার গন্তব্য—রিয়াদ, দোহা, আবুধাবি। তবে কি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন এক শক্তির খেলা শুরু করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প?

ওয়াশিংটনের মতে, এই তিনটি রাজধানীই এখন নতুন বৈশ্বিক বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের পরিণত কেন্দ্র। আরটির এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতা সেই দেশগুলোর সঙ্গে, যারা এখন কেবল জ্বালানির উৎস নয়, বরং প্রযুক্তি, বিনিয়োগ, মানবিক কূটনীতি ও আঞ্চলিক ভারসাম্যে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

সূত্র জানায়, আগামী মে মাসে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর নিছক আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব নির্দেশনা। ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরে থাকা ব্যবসামুখী নীতিনির্ধারকেরা এই সফরকে দেখছেন বিনিয়োগ আনার পথ হিসেবে, আবার একইসঙ্গে এক আঞ্চলিক এজেন্ডা নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবেও। উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ওয়াশিংটনের এই ঘনিষ্ঠতা কেবল নিরাপত্তার জন্য নয়। জ্বালানি বাজারে স্থিতিশীলতা, উচ্চপ্রযুক্তি খাতে অংশীদারিত্ব গড়ার এবং প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ সহযোগিতার ভিত্তি তৈরি করাও এ পরিকল্পনার অংশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সফরের বড় দিক হচ্ছে ইরানবিরোধী অবস্থানকে পাকাপোক্ত করা। পারস্য উপসাগরে ইরানের প্রভাব ঠেকাতে ইসরাইল, সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত নিয়ে একটি শক্তিশালী জোট গঠন তৈরি করতে চান ট্রাম্প। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্যমতে, গাজায় চলমান সংঘাতের ভেতরেও ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করতে আগ্রহী ট্রাম্প প্রশাসন। ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্ভাব্য সম্পর্কোন্নয়নে কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত নির্ধারকের ভূমিকা পালন করতে পারবে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নতুন বাণিজ্য চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তি, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ প্রবাহকে উৎসাহ দেয়া এই সফরের সুস্পষ্ট লক্ষ্য হতে পারে। তারা আরও বলছেন, ট্রাম্পের কাছে পররাষ্ট্রনীতি কখনোই শুধুই নীতিকথা নয়, এটি ব্যবসার মতো, যেখানে লাভ, প্রভাব ও উপস্থিতিই মুখ্য। পারস্য উপসাগরের দেশগুলো তাই এখন শুধু মিত্র নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সম্ভাব্য পৃষ্ঠপোষকও। রাজনৈতিকভাবে এই সফর ট্রাম্পের জন্য দ্বিমুখী কৌশল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। একদিকে, তিনি বিশ্বকে দেখাতে চান, যুক্তরাষ্ট্র এখনো বৈশ্বিক নীতি নির্ধারণে সক্ষম। অন্যদিকে, নিজের ঘরোয়া ভোটারদের দেখাতে চান, তিনি একজন শক্তিশালী বিশ্বনেতা, যিনি জানেন কীভাবে কূটনীতি আর ব্যবসা একসঙ্গে চালাতে হয়। সূত্র : সময় নিউজ।