নিউইয়র্ক ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিশ্বজুড়ে স্থূলতা বাড়ছে, ২০৫০ সালে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ!

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:২১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫
  • / ৩০ বার পঠিত

বিশ্বজুড়ে স্থূলতার হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে, যা আগামী দশকগুলোতে জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ৬০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৩১ শতাংশ শিশু ও তরুণ-তরুণী স্থূলতায় ভুগতে পারেন। এই সংকট কেবল ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপরও ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।

বিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট-এ প্রকাশিত নতুন এক গবেষণা অনুযায়ী, গত তিন দশকে স্থূলতা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে এই সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ১৯৯০ সালে যেখানে ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সী স্থূল মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৩ কোটি, তা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১১ কোটিতে। একইভাবে, ৫-২৪ বছর বয়সী স্থূল শিশু ও তরুণ-তরুণীর সংখ্যা ১৯৯০ সালের ১৯ কোটি ৮০ লাখ থেকে বর্তমানে ৪৯ কোটি ৩০ লাখে পৌঁছেছে। গবেষকরা বলছেন, ওজন বৃদ্ধির এই ধারা বজায় থাকলে ভবিষ্যতে হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং ক্যান্সারের মতো রোগের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষণার প্রধান লেখক এমানুয়েলা গাকিদু বলেন, “স্থূলতা আজ বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত হয়েছে, যা সমাজের ব্যর্থতাকে প্রকাশ করে।” গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ করে উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং লাতিন আমেরিকায় ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি তিনজনের একজন শিশু ও তরুণ-তরুণী স্থূলতার শিকার হতে পারেন। উন্নত চিকিৎসা সুবিধার অভাব থাকায় নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে অকাল মৃত্যুর হারও বেড়ে যেতে পারে।

ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত আরেক গবেষণা অনুযায়ী, স্থূলতার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দরিদ্র দেশগুলো। তাদের সীমিত সম্পদের কারণে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি হবে এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কাও থাকবে। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী জোহানা রালস্টন বলেন, “স্থূলতা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সমস্যাই নয়, বরং এটি অর্থনীতি ও সমাজের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।” বিশ্বব্যাপী এই স্থূলতা সংকট নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি, পুষ্টিকর খাবারের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা এবং শারীরিক কার্যকলাপকে উৎসাহিত করাই হতে পারে এই সংকট মোকাবিলার প্রধান উপায়। নতুবা, ভবিষ্যতে এটি বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের এক ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বিশ্বজুড়ে স্থূলতা বাড়ছে, ২০৫০ সালে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ!

প্রকাশের সময় : ১০:২১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

বিশ্বজুড়ে স্থূলতার হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে, যা আগামী দশকগুলোতে জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ৬০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৩১ শতাংশ শিশু ও তরুণ-তরুণী স্থূলতায় ভুগতে পারেন। এই সংকট কেবল ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপরও ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।

বিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট-এ প্রকাশিত নতুন এক গবেষণা অনুযায়ী, গত তিন দশকে স্থূলতা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে এই সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ১৯৯০ সালে যেখানে ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সী স্থূল মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৩ কোটি, তা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১১ কোটিতে। একইভাবে, ৫-২৪ বছর বয়সী স্থূল শিশু ও তরুণ-তরুণীর সংখ্যা ১৯৯০ সালের ১৯ কোটি ৮০ লাখ থেকে বর্তমানে ৪৯ কোটি ৩০ লাখে পৌঁছেছে। গবেষকরা বলছেন, ওজন বৃদ্ধির এই ধারা বজায় থাকলে ভবিষ্যতে হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং ক্যান্সারের মতো রোগের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষণার প্রধান লেখক এমানুয়েলা গাকিদু বলেন, “স্থূলতা আজ বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত হয়েছে, যা সমাজের ব্যর্থতাকে প্রকাশ করে।” গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ করে উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং লাতিন আমেরিকায় ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি তিনজনের একজন শিশু ও তরুণ-তরুণী স্থূলতার শিকার হতে পারেন। উন্নত চিকিৎসা সুবিধার অভাব থাকায় নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে অকাল মৃত্যুর হারও বেড়ে যেতে পারে।

ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত আরেক গবেষণা অনুযায়ী, স্থূলতার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দরিদ্র দেশগুলো। তাদের সীমিত সম্পদের কারণে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি হবে এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কাও থাকবে। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী জোহানা রালস্টন বলেন, “স্থূলতা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সমস্যাই নয়, বরং এটি অর্থনীতি ও সমাজের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।” বিশ্বব্যাপী এই স্থূলতা সংকট নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি, পুষ্টিকর খাবারের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা এবং শারীরিক কার্যকলাপকে উৎসাহিত করাই হতে পারে এই সংকট মোকাবিলার প্রধান উপায়। নতুবা, ভবিষ্যতে এটি বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের এক ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান