নিউইয়র্ক ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিমানবন্দরে কাস্টমসের কড়া নজরদারি, বেড়েছে যাত্রীসেবা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৫৪ বার পঠিত
  • বিশ্বমানের সেবার লক্ষ্যে প্রস্তুতি
  • পর্যাপ্ত স্ক্যানার মেশিন চালু
  • কম সময়ে মিলছে লাগেজ

লাগেজ পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগা। লাগেজ হারিয়ে যাওয়াসহ নানা ধরনের ভোগান্তি থেকে অনেকটা মুক্তি মিলছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রীদের। এখন ২০-৩০ মিনিটের মধ্যেই মিলছে লাগেজ। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই যাত্রীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি যেমন লাঘব হয়েছে, তেমনি বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও সুসংহত হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। এছাড়া যাত্রীদের লাগেজ পরীক্ষা করতে পর্যাপ্ত স্ক্যানার মেশিন চালু করা হয়েছে।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৩৪টি বিদেশি এয়ারলাইনস ৫২টি আন্তর্জাতিক রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ২৪ ঘণ্টা সেবা দিয়ে যাত্রীদের সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। একটি যাত্রীও যাতে ভোগান্তির শিকার না হন সে দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। আগে একসঙ্গে অনেক যাত্রী এলে ভোগান্তি হতো। বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় যাত্রীরা দ্রুত ব্যাগ পেলেও আটকে থাকতে হতো কাস্টমস চেকিং এলাকায়। চেকিংয়ের পেছনে যাত্রীদের ৩০ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত চলে যেতো। পাশাপাশি অনেক লাগেজ স্ক্যান ছাড়াই বের হয়ে যেতো। যথাযথভাবে তল্লাশি না হওয়ায় শুল্কায়ন ও ট্যাক্সযোগ্য অনেক পণ্য, এমনকি স্বর্ণের অবৈধ চালানও দেশে প্রবেশের সুযোগ ছিল। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব যেমন হারিয়েছে, তেমনি নিরাপত্তা ঝুঁকিও ছিল।

বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাত্রীদের প্রধান অভিযোগ ইমিগ্রেশন ও লাগেজ পেতে দেরি হওয়ার বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়ায় এখন সেবা উন্নত হয়েছে। ইমিগ্রেশন দ্রুত সম্পন্ন করতে তিন শিফটের জায়গায় চার শিফট চালু করা হয়েছে। এতে সময় কম লাগছে। অল্প সময়ে লাগেজ পাওয়া নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিমানবন্দরের ‘হেল্প ডেস্ক’ যাত্রীদের সব রকম সহায়তা করার জন্য তিন শিফটে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া সার্বক্ষণিকভাবে ফ্রি ওয়াই-ফাই সুবিধা চালু করা হয়েছে। রয়েছে ফ্রি টেলিফোন বুথ। বিদেশফেরত যাত্রীদের ব্যাগেজ সেবা দিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানবন্দর রেলস্টেশন ও বাস স্টেশন পর্যন্ত বিআরটিসির শাটল সার্ভিস চালু রয়েছে। বিশুদ্ধ পানির জন্য তিনটি ফিল্টার মেশিন বসানো হয়েছে। পর্যাপ্ত ট্রলি রয়েছে। সিকিউরিটি নিশ্চিতে জোর দেওয়া হচ্ছে।

কাস্টসম কর্তৃপক্ষ জানায়, আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্র স্বর্ণ পাচারের নিরাপদ ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার হয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। গত পাঁচ বছরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই জব্দ করা হয় দুই হাজার ২৩৩ কেজি স্বর্ণ। ব্যাগেজ রুলসের সুবিধা নিয়ে সম্প্রতি স্বর্ণ চোরাচালান করছে চক্রের সদস্যরা। ব্যাগেজ রুলসের সুবিধা নিয়ে এই বিমানবন্দর ঘিরে গড়ে উঠেছে চোরাকারবারিদের বিশাল সিন্ডিকেট। বিদেশ থেকে আসা একজন যাত্রী কী আনতে পারবেন, তা রয়েছে ব্যাগেজ রুলস বা বিধিমালায়। মূলত এ সুবিধায় আনা শত শত মণ স্বর্ণ চোরাকারবারিদের হাতে তুলে দিচ্ছে এক শ্রেণির যাত্রীরা। তবে এ রকম যাত্রীদের শনাক্ত করতে কাজ শুরু করেছে বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

শাহজালাল বিমানবন্দরের যাত্রী আবুল বাসার জানান, ফ্লাইট থেকে নেমে দ্বিতীয় টার্মিনাল দিয়ে বের হতে তার সময় লেগেছে ৩০ মিনিট। সাধারণত প্লেন থেকে নামার পর ইমিগ্রেশন, লাগেজ সংগ্রহসহ অন্য ফর্মালিটি মেনে বের হতে গড়ে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু এখন কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই বিমানবন্দর থেকে বের হতে পারছি। ইমিগ্রেশন শেষ করে বেল্টে আসার পরপরই লাগেজ পেয়েছি। আবার বিমানবন্দরের ভেতর থাকা ফ্রি টেলিফোন দিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেছি। সব কার্যক্রম খুব সুন্দরভাবে হচ্ছে।’

কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বলেন, ইমিগ্রেশনের পর দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যে লাগেজ পেতে অত্যাধুনিক মেশিন লাগানো হবে। যাতে যাত্রীসেবার মান আরও বাড়ানো যায়। তবে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর ফলে চোরাকারবারিরা ভিন্ন পন্থা অবলম্বনের চেষ্টা করছে। আমরা চোরাকারবারি রোধে ডিটেকশন মেশিন স্থাপন করেছি এবং তাদের সিন্ডিকেট ভাঙতে সক্ষম হয়েছি। ফলে তারা বড় ধরনের কোনো চালান আনতে সাহস দেখাচ্ছে না। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বিমানবন্দরে কাস্টমসের কড়া নজরদারি, বেড়েছে যাত্রীসেবা

প্রকাশের সময় : ১২:৩২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • বিশ্বমানের সেবার লক্ষ্যে প্রস্তুতি
  • পর্যাপ্ত স্ক্যানার মেশিন চালু
  • কম সময়ে মিলছে লাগেজ

লাগেজ পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগা। লাগেজ হারিয়ে যাওয়াসহ নানা ধরনের ভোগান্তি থেকে অনেকটা মুক্তি মিলছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রীদের। এখন ২০-৩০ মিনিটের মধ্যেই মিলছে লাগেজ। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই যাত্রীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি যেমন লাঘব হয়েছে, তেমনি বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও সুসংহত হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। এছাড়া যাত্রীদের লাগেজ পরীক্ষা করতে পর্যাপ্ত স্ক্যানার মেশিন চালু করা হয়েছে।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৩৪টি বিদেশি এয়ারলাইনস ৫২টি আন্তর্জাতিক রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ২৪ ঘণ্টা সেবা দিয়ে যাত্রীদের সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। একটি যাত্রীও যাতে ভোগান্তির শিকার না হন সে দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। আগে একসঙ্গে অনেক যাত্রী এলে ভোগান্তি হতো। বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় যাত্রীরা দ্রুত ব্যাগ পেলেও আটকে থাকতে হতো কাস্টমস চেকিং এলাকায়। চেকিংয়ের পেছনে যাত্রীদের ৩০ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত চলে যেতো। পাশাপাশি অনেক লাগেজ স্ক্যান ছাড়াই বের হয়ে যেতো। যথাযথভাবে তল্লাশি না হওয়ায় শুল্কায়ন ও ট্যাক্সযোগ্য অনেক পণ্য, এমনকি স্বর্ণের অবৈধ চালানও দেশে প্রবেশের সুযোগ ছিল। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব যেমন হারিয়েছে, তেমনি নিরাপত্তা ঝুঁকিও ছিল।

বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাত্রীদের প্রধান অভিযোগ ইমিগ্রেশন ও লাগেজ পেতে দেরি হওয়ার বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়ায় এখন সেবা উন্নত হয়েছে। ইমিগ্রেশন দ্রুত সম্পন্ন করতে তিন শিফটের জায়গায় চার শিফট চালু করা হয়েছে। এতে সময় কম লাগছে। অল্প সময়ে লাগেজ পাওয়া নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিমানবন্দরের ‘হেল্প ডেস্ক’ যাত্রীদের সব রকম সহায়তা করার জন্য তিন শিফটে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া সার্বক্ষণিকভাবে ফ্রি ওয়াই-ফাই সুবিধা চালু করা হয়েছে। রয়েছে ফ্রি টেলিফোন বুথ। বিদেশফেরত যাত্রীদের ব্যাগেজ সেবা দিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানবন্দর রেলস্টেশন ও বাস স্টেশন পর্যন্ত বিআরটিসির শাটল সার্ভিস চালু রয়েছে। বিশুদ্ধ পানির জন্য তিনটি ফিল্টার মেশিন বসানো হয়েছে। পর্যাপ্ত ট্রলি রয়েছে। সিকিউরিটি নিশ্চিতে জোর দেওয়া হচ্ছে।

কাস্টসম কর্তৃপক্ষ জানায়, আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্র স্বর্ণ পাচারের নিরাপদ ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার হয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। গত পাঁচ বছরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই জব্দ করা হয় দুই হাজার ২৩৩ কেজি স্বর্ণ। ব্যাগেজ রুলসের সুবিধা নিয়ে সম্প্রতি স্বর্ণ চোরাচালান করছে চক্রের সদস্যরা। ব্যাগেজ রুলসের সুবিধা নিয়ে এই বিমানবন্দর ঘিরে গড়ে উঠেছে চোরাকারবারিদের বিশাল সিন্ডিকেট। বিদেশ থেকে আসা একজন যাত্রী কী আনতে পারবেন, তা রয়েছে ব্যাগেজ রুলস বা বিধিমালায়। মূলত এ সুবিধায় আনা শত শত মণ স্বর্ণ চোরাকারবারিদের হাতে তুলে দিচ্ছে এক শ্রেণির যাত্রীরা। তবে এ রকম যাত্রীদের শনাক্ত করতে কাজ শুরু করেছে বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

শাহজালাল বিমানবন্দরের যাত্রী আবুল বাসার জানান, ফ্লাইট থেকে নেমে দ্বিতীয় টার্মিনাল দিয়ে বের হতে তার সময় লেগেছে ৩০ মিনিট। সাধারণত প্লেন থেকে নামার পর ইমিগ্রেশন, লাগেজ সংগ্রহসহ অন্য ফর্মালিটি মেনে বের হতে গড়ে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু এখন কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই বিমানবন্দর থেকে বের হতে পারছি। ইমিগ্রেশন শেষ করে বেল্টে আসার পরপরই লাগেজ পেয়েছি। আবার বিমানবন্দরের ভেতর থাকা ফ্রি টেলিফোন দিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেছি। সব কার্যক্রম খুব সুন্দরভাবে হচ্ছে।’

কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বলেন, ইমিগ্রেশনের পর দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যে লাগেজ পেতে অত্যাধুনিক মেশিন লাগানো হবে। যাতে যাত্রীসেবার মান আরও বাড়ানো যায়। তবে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর ফলে চোরাকারবারিরা ভিন্ন পন্থা অবলম্বনের চেষ্টা করছে। আমরা চোরাকারবারি রোধে ডিটেকশন মেশিন স্থাপন করেছি এবং তাদের সিন্ডিকেট ভাঙতে সক্ষম হয়েছি। ফলে তারা বড় ধরনের কোনো চালান আনতে সাহস দেখাচ্ছে না। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক।