সরকারের ছয় মাস: স্বস্তি নেই অর্থনীতিতে
![](https://hakkatha.com/wp-content/uploads/2024/05/hakkathafav.png)
- প্রকাশের সময় : ০১:০২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৩৭ বার পঠিত
রিমন রহমান :
আয়ের তুলনায় বেড়েই চলেছে ব্যয়। সরকারের ছয় মাসে নিয়ন্ত্রণে আসেনি মূল্যস্ফীতি। মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য কিনতেই এখন শেষ হচ্ছে আয়ের সিংহভাগ অর্থ। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, ছয় মাসে মোটা, মাঝারি ও সরু চালের দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ৫ থেকে ৬ টাকা। তবে বেসরকারি তথ্য এই সময়ে চালের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। কেবল শীতের সবজি ছাড়া অন্যান্য পণ্যের দামও আকাশচুম্বি। শুল্ক-কর বৃদ্ধির ফলে সেবা ব্যয়ও বেড়েছে হঠাৎ করে। মূল্যস্ফীতি এখনও নিয়ন্ত্রণহীন। এমন সময় টিসিবির স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম সংকুচিত করেছে সরকার।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মজুরি বৃদ্ধির হার থেকে মূল্যস্ফীতির হার দ্বিগুণ মাত্রায় বেড়েছে। সুতরাং এইটা সাধারণ মানুষের জীবনমানের যে অবনমন সেটা কিন্তু রোধ করা যায়নি। এটাকে একটু সহনীয় করা যেত যদি আমরা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিটাকে আরও শক্তিশালী করতে পারতাম এবং টিসিবির ওপেন মার্কেট সেল এগুলোকে আরও বৃহত্তর পরিসরে নিতে পারতো। সরকারের ছয় মাসে ব্যাংক খাত সংস্কারে নেয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। তবে পাহাড়সমান খেলাপি ঋণ এখনও মাথাব্যাথার কারণ। একই সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকে জমা রাখা অর্থ ফেরত দেয়ার উপায় বের করাও সরকারের জন্য এখন দুশ্চিন্তার কারণ।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কিছু কিছু ব্যাংক যেগুলোকে লাইসেন্স দেয়ারই দরকার ছিল না। সেগুলোকে দেয়া হয়েছে। এগুলোকে এখন শক্তিশালী ব্যাংকের সাথে একভূত করা হবে নাকি সেখানে প্রশাসক দেয়া হবে কিংবা আস্তে আস্তে চলে যেতে দেয়া হবে, এসব বিষয় কিন্তু খুবই জটিল। তবে মানুষের প্রত্যাশার চাপ অনেক এবং সেটাও কিন্তু বিবেচনায় নিতে হবে। অর্থনীতির ভীতকে কিছুটা শক্তিশালী করেছে রফতানি ও রেমিট্যান্স আয়। ঠেকানো গেছে রিজার্ভের পতন। দীর্ঘ সময় ধরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে বড় অঙ্কের অর্থ। ফিরিয়ে আনতে শুরু হয়েছে উদ্যোগ। কিন্তু জটিল প্রক্রিয়ার কারণে সহসায় এই সুফল মেলা কঠিন।
মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, আল্টিমেট বেনিফিশিয়ারি এখান থেকে যেটা নিয়ে গেছে তা প্রতিষ্ঠা করে ওই দেশে মামলা করতে হবে। মামলায় জিততে হবে, ওগুলোকে ফ্রিজ করতে হবে, বিক্রিও করতে হবে। আদালত থেকে বিক্রির একটা অনুমতিও নিতে হবে। এটার প্রক্রিয়া কিন্তু সহজ না, এটা দীর্ঘসূত্রিতা। অনিশ্চয়তা না কাটায় থমকে আছে বেসরকারি খাতের উৎপাদন। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে কমেছে ঋণ প্রবাহ। বলা হচ্ছে, এভাবে উৎপাদন কমলে কর্মসংস্থান বাড়বে না।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ১৫ শতাংশ যদি সুদ দিই, তাহলে আর থাকে কত? তার মধ্যে করের বোঝা বাড়ছে। ছয় মাসে সরকার কি একটা আশা পূরণ করতে পেরেছে? হ্যাঁ, তারা দুর্নীতির পেছেনে ছুটছে, বিগত সরকার কী করেছে সেগুলোর পেছনে ছুটছে, সেগুলো করা হোক, ঠিক আছে। তবে চলমান বাণিজ্যের দিকেও তো দেখতে হবে। এখন তো একটা পারসেপশন হয়ে গেছে, ব্যাবসায়ী মানেই দোসর। সব ব্যবসায়ী দোসর? যারা এখনও দেশে আছে, যারা এখনও ট্যাক্স দিচ্ছে, অর্থনীতির চাকা ঘুরাচ্ছে তারাও কি দোসর? এদিকে, অভ্যন্তরীণ আয়ে সুখবর নেই। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যের তুলনায় এনবিআরের আদায়ে ঘাটতি প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। সূত্র : যমুনা টিভি।