নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের সাথে বিদেশী চক্রও রয়েছে। চক্রটি সজীব ওয়াজেদ জয়কেও হত্যার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে দেশে-প্রবাসে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। গত ৫ ডিসেম্বর সোমবার নর্থ ব্রঙ্কসের একটি অডিটোরিয়ামে তার সম্মানে ব্রঙ্কস আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত সংবর্ধনা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ব্রঙ্কস আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল ইয়াহইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা যৌথভাবে পরিচালনা করেন ব্রঙ্কস আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ইকবাল এবং নিউইয়র্ক স্টেট যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী। উৎসবমুখর এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সহ সাধারণ সম্পাদক এ কে শিকদার আজাদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সৈয়দ বশারত আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মিসবাহ আহমেদ, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ ফরিদ আলম, বাংলাদেশী-আমেরিকান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক সোসাইটির সভাপতি আব্দুস শহীদ, বাঙালী কালচারাল এসোসিয়েশনের সভাপতি আনছার হোসাইন চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি দুরুদ মিয়া রনেল, নারী নেত্রী বদরুন্নাহার, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বাছির খান, নর্থ ব্রঙ্কস জামে মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, নর্থ ব্রঙ্কস বাংলাদেশী-আমেরিকান এসাসিয়েশনের সভাপতি মিজান খান, উপদেষ্টা হেলাল উদ্দিন, সহ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফখরুল আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজন খান, বাংলাদেশী কমিউনিটি অব নর্থ ব্রঙ্কসের প্রচার সম্পাদক বোরহান উদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্র জাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম জিকু, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মোহাম্মদ আবদুর রউফ, আশফাক চৌধুরী, সেটু মিয়া, হাজী আব্দুল মোছাব্বির প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বিমানের মধ্যে যে অবস্থা হয়েছে তাতেই বুঝা যায় নেত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র থেমে নেই। যার জন্য বিমানমন্ত্রী ৫ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘাপটি মেরে থাকা খুনি-মোস্তাক-জিয়া চক্রের প্রেতাত্মারা দেশটাকে আবার পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। কারণ এদের রাজনীতির শুরুই অনিয়ম ও হত্যার ভেতর দিয়ে। নেত্রীকে হত্যার লক্ষ্যে কম করে হলেও একুশবার হামলা চালানো হয়। মহান রাব্বুল আলামীন তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন বাংলার গরীব দু:খী মানুষের সেবা করার জন্য।
তিনি বলেন, জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। দেশের মানুষও বুঝতে পারছে আসলেই দেশের উন্নতি হচ্ছে। এজন্যই বিরোধী দলের আন্দোলনে মানুষের সাড়া নেই।
সাহারা খাতুন এমপি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের গরীব দু:খী মানুষের ভাগ্য বদলের লক্ষ্যে বিনামুল্যে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। ১ম থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত বিনামুল্যে বই দিচ্ছেন, যা বছরের শুরুতেই ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে পৌঁছে দেয়া হয়। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ। রাস্তাঘাট-অবকাঠামো উন্নয়নসহ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত গতিতে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট কিভাবে দেশের উন্নয়ন স্তব্ধ করা যায় সে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
তিনি বলেন, বেগম জিয়া জামায়াতের সাথে হাত মিলিয়ে দেশকে জঙ্গী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। আগুন দিয়ে পেট্রল বোমা মেরে শত শত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। দেশের সম্পদ ধ্বসং করেছে। তারা সফল হতে পারেনি। জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ পদক্ষেপে তাদের সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু তারা এখনো বসে নেই। তারা ষড়যন্ত্র করেই চলেছে কিভাবে দেশকে জঙ্গী রাষ্ট্রে পরিণত করা যায়। কিভাবে দেশের উন্নয়ন ধ্বংস করা যায়। বিএনপি-জামাত এখন গুপ্তহত্যায় নেমেছে। কিন্তু দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সে ষড়যন্ত্র নস্যাত করে দিচ্ছে। তিনি প্রবাসের সকল বাঙালীকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে আরো অবদান রাখার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এ কে শিকদার আজাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সকল কর্মসূচী বাস্তবায়নে যুবলীগের সকল নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগে মিসবাহ-ফরিদ এর মত বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আজ বড়ই প্রয়োজন। এসময় যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ‘জয়বাংলা’ শ্লোগানে অনুষ্ঠান স্থল প্রকম্পিত করে তোলেন।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসাইন, সেবুল মিয়া, ইফজাল আহমেদ ও হুমায়ূন চৌধুরী, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রেজা আবদুল্লাহ, আবদুল হালিম ও জাকির হোসেন, নিউইয়র্ক স্টেট যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শোয়েব আহমদ, সহ সভাপতি অলিউর রহমান ও নূর হোসেন ফরহাদ, অর্থ সম্পাদক মিশু খান, ক্রীড়া সম্পাদক সাবলুর রহমান, যুবলীগ নেতা নূরুল ইসলাম, ছাব্বির হোসেন, মাহবুবুর রহমান, টিপু, ম্যানহাটান যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, কমিউনিটির নের্তৃবৃন্দ ও বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন আল ফয়েজী। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এতে প্রবাসের বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী শম্পা জামান ও জিল্লুর রহমানের গান দর্শক-শ্রোতাদের মাতিয়ে রাখে। গভীর রাত পর্যন্ত তারা প্রাণভরে সঙ্গীত উপভোগ করেন।