নিউইয়র্ক ০৯:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

পিপিএল : হোমকেয়ার ব্যবসার সামগ্রিক মনিটরিং

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:৪৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ২৮ বার পঠিত

পিপিএল (পাবলিক পার্টনারশিপ এলএলসি) নামক একটি কোম্পানি এসেছে হোমকেয়ার ব্যবসার সামগ্রিক মনিটরিংয়ের অভিপ্রায়ে। নিউইয়র্ক স্টেট হেলথ ডিপার্টমেন্ট অনুমোদিত এই সংস্থা হোম হেলথ কেয়ার গ্রহণকারীগণের দৈনন্দিন সেবা-কার্যক্রম তদারকি করবে। অর্থাৎ রোগী ঠিকমত সেবা পাচ্ছেন কিনা সেটি তদারকি করবে। সিডিপ্যাপের আওতায় সেবা গ্রহিতাগণকে এপ্রিলের আগেই পিপিএলের সাথে তালিকাভুক্ত হবার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। হঠাৎ কেন পাল্টে গেল হোমকেয়ার সার্ভিসের তদারকি? এ প্রশ্নের জবাবে নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনে প্রোহেলথ হোমকেয়ারের চিফ এক্সিকিউটিভ মামুনুর রশীদ জানান, জর্জিয়াভিত্তিক পিপিএল নিউইয়র্কের স্টেট গভর্ণরকে কনভিন্স করতে সক্ষম হয়েছেন যে, সিডিপ্যাপ (কঞ্জ্যুমার ডিরেক্টেড পার্সনাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম)’র প্রোগ্রামে সেবা গ্রহিতারা যথাযথভাবে সেবা পাচ্ছেন না মনিটরিংয়ের অভাবে। এখন যে ধরনের সেবার জন্যে স্টেট স্বাস্থ্য দফতরের অর্থ ব্যয় হচ্ছে, আমি একই ধরনের সেবার নিশ্চয়তা দেব। তবে ব্যয়ের পরিমাণ কমবে। অর্থাৎ এখোন অর্থের অপচয় ঘটছে। পিপিএলকে মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হলে সেবার মান অপরিবর্তিত থাকবে, ব্যয়ের পরিমাণ কমবে।

হোমকেয়ার ব্যবসায় তুলনামূলকভাবে জুনিয়র হলেও বিভিন্নভাবে অভিজ্ঞতা অর্জনকারী মামুনুর রশীদ বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনোযোগী হয়েছেন ত্রুটিগ্রুলোকে সেরে নিয়ম-শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনতে। উল্লেখ্য, হোমকেয়ার সার্ভিস শত বছরের পুরনো একটি ব্যবস্থা, যার সুফল পেয়ে আসছেন চলতে অক্ষম মানুষেরা। প্রতি বছরই মোটা অর্থ ব্যয় করে স্টেট স্বাস্থ্য ডিপার্টমেন্ট। জুইশ, রাশিয়ান, আফ্রিকান-আমেরিকানের পর চীনারা এই ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত রয়েছেন। ৫/৬ বছর যাবত তা সম্প্রসারিত হয়েছে বাংলাদেশিদের মধ্যেও। অসুস্থ মা-বাবা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি অথবা নানা-নানীকে নিজ ঘরেই চিকিৎসা-সেবার মাধ্যমে মোটা অর্থ আয়ের ব্যপারটি সকলকেই আকৃষ্ট করেছে। আর এ সুযোগে গড়ে উঠেছে অনেক এজেন্সি। কেউ লাইসেন্স পেয়েছেন, আবার কেউ এজেন্ট/ব্রোকার হিসেবে কাজ করছেন। উভয় ক্ষেত্রেই রয়েছে বাড়তি আয়ের সুযোগ। অভিযোগ রয়েছে যে, অনেকের মা-বাবা, দাদা-দাদি কিংবা নানা-নানীকে সেবা প্রদানের প্রয়োজন হয় না। কাগজে-কলমে সেবা প্রদানের ঘটনা ঘটছে।

মামুন বলেন, হোমকেয়ার ব্যবস্থার সাথে কম্যুনিটিকে পরিচিত করা, অসুস্থ মানুষ-জনকে সেবা দেয়া, হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের চেম্বারে আনা-নেয়া করা, সময় মত ওষধ সেবন, গোসল করানো, স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য পরিবেশন ইত্যাদি কাজে (যতটাই ঘটে থাকুক) লোকজনকে অভিজ্ঞ করতেও অনেকের অবদান অস্বীকারের উপায় নেই। এমনি অবস্থায় প্রযুক্তির মাধ্যমে ৫০/৬০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়ার ঘটনাটি হৃদয় বিদারক বৈকি। পিপিএল এখনো কোন অফিস খুলেনি। সবকিছু ফোন, অনলাইনে করছে। এই প্রক্রিয়া কম্যুনিটির অনেকের পক্ষেই অনুসরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। যেহেতু তারা টেকনিক্যাল হ্যান্ডেড নন।

মামুন রশীদ বলেন, তারা হয়তো অফিস নেবে, কিন্তু বর্তমানের মত কম্যুনিটির দোর-গোড়ায় কী আসতে পারবে? অর্থাৎ সেবা প্রার্থীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তায় নিপতিত হয়েছেন। মামুন বলেন, যারা সেবা নিচ্ছেন তারা নিজ ভাষায় কথা বলতে না পারলে সেবাদাতাও স্বাচ্ছন্দবোধ করবে না। একইসাথে রোগীর সমস্যা সম্পর্কেও তেমন ওয়াকিবহাল হতে সক্ষম হবেন না। এছাড়া, শোনা যাচ্ছে যে, পিপিএল পুরো ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে চাচ্ছে। তার ফলে বর্তমানে সেবা প্রাপ্তির ঘন্টা কমতে পারে। অর্থাৎ সেবা প্রদানকারির আয় কমার আশংকা দেখা দেবে। মজুরিও প্রতি ঘন্টায় ৩ ডলার করে কমতে পারে। এ অবস্থায় অনেকে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে এবং মনোকষ্টে পড়েছেন।

মামুন বলেন, পিপিএল তার কার্যক্রম শুরু করলে সেবাদাতাদেরকে একটি কোর্স নিতে হবে। চিকিৎসা-সেবা সম্পর্কে ন্যূনতম একটি ধারণা থাকতে হবে। এ ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর বর্তমানের মত মা-বাবা, ভাই-বোনকে সেবা দেয়া সম্ভব হবে না। আত্মীয় নন-এমন রোগীকে সেবা দিতে হবে। এরফলে প্রবীণরা পড়বেন আরেক ধরনের সংকটে। নিজ ভাষায় কথা বলা, নিজ সংস্কৃতির আবহে সেবা নেয়ার ব্যাপারটি গভীর এক সংকটে পড়বে। অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, তবে কম্যুনিটির সেবা দাতারা যদি কম্যুনিটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারেন, তাহলেও কিছুটা সংকট কমতে পারে। তবে সেবা না দিয়ে বেতন ড্র করার পর ভাগাভাগির বর্তমানের বিশেষ ব্যবস্থাটি অকল্পনীয় হয়ে পড়বে-তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

পিপিএল : হোমকেয়ার ব্যবসার সামগ্রিক মনিটরিং

প্রকাশের সময় : ০১:৪৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পিপিএল (পাবলিক পার্টনারশিপ এলএলসি) নামক একটি কোম্পানি এসেছে হোমকেয়ার ব্যবসার সামগ্রিক মনিটরিংয়ের অভিপ্রায়ে। নিউইয়র্ক স্টেট হেলথ ডিপার্টমেন্ট অনুমোদিত এই সংস্থা হোম হেলথ কেয়ার গ্রহণকারীগণের দৈনন্দিন সেবা-কার্যক্রম তদারকি করবে। অর্থাৎ রোগী ঠিকমত সেবা পাচ্ছেন কিনা সেটি তদারকি করবে। সিডিপ্যাপের আওতায় সেবা গ্রহিতাগণকে এপ্রিলের আগেই পিপিএলের সাথে তালিকাভুক্ত হবার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। হঠাৎ কেন পাল্টে গেল হোমকেয়ার সার্ভিসের তদারকি? এ প্রশ্নের জবাবে নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনে প্রোহেলথ হোমকেয়ারের চিফ এক্সিকিউটিভ মামুনুর রশীদ জানান, জর্জিয়াভিত্তিক পিপিএল নিউইয়র্কের স্টেট গভর্ণরকে কনভিন্স করতে সক্ষম হয়েছেন যে, সিডিপ্যাপ (কঞ্জ্যুমার ডিরেক্টেড পার্সনাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম)’র প্রোগ্রামে সেবা গ্রহিতারা যথাযথভাবে সেবা পাচ্ছেন না মনিটরিংয়ের অভাবে। এখন যে ধরনের সেবার জন্যে স্টেট স্বাস্থ্য দফতরের অর্থ ব্যয় হচ্ছে, আমি একই ধরনের সেবার নিশ্চয়তা দেব। তবে ব্যয়ের পরিমাণ কমবে। অর্থাৎ এখোন অর্থের অপচয় ঘটছে। পিপিএলকে মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হলে সেবার মান অপরিবর্তিত থাকবে, ব্যয়ের পরিমাণ কমবে।

হোমকেয়ার ব্যবসায় তুলনামূলকভাবে জুনিয়র হলেও বিভিন্নভাবে অভিজ্ঞতা অর্জনকারী মামুনুর রশীদ বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনোযোগী হয়েছেন ত্রুটিগ্রুলোকে সেরে নিয়ম-শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনতে। উল্লেখ্য, হোমকেয়ার সার্ভিস শত বছরের পুরনো একটি ব্যবস্থা, যার সুফল পেয়ে আসছেন চলতে অক্ষম মানুষেরা। প্রতি বছরই মোটা অর্থ ব্যয় করে স্টেট স্বাস্থ্য ডিপার্টমেন্ট। জুইশ, রাশিয়ান, আফ্রিকান-আমেরিকানের পর চীনারা এই ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত রয়েছেন। ৫/৬ বছর যাবত তা সম্প্রসারিত হয়েছে বাংলাদেশিদের মধ্যেও। অসুস্থ মা-বাবা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি অথবা নানা-নানীকে নিজ ঘরেই চিকিৎসা-সেবার মাধ্যমে মোটা অর্থ আয়ের ব্যপারটি সকলকেই আকৃষ্ট করেছে। আর এ সুযোগে গড়ে উঠেছে অনেক এজেন্সি। কেউ লাইসেন্স পেয়েছেন, আবার কেউ এজেন্ট/ব্রোকার হিসেবে কাজ করছেন। উভয় ক্ষেত্রেই রয়েছে বাড়তি আয়ের সুযোগ। অভিযোগ রয়েছে যে, অনেকের মা-বাবা, দাদা-দাদি কিংবা নানা-নানীকে সেবা প্রদানের প্রয়োজন হয় না। কাগজে-কলমে সেবা প্রদানের ঘটনা ঘটছে।

মামুন বলেন, হোমকেয়ার ব্যবস্থার সাথে কম্যুনিটিকে পরিচিত করা, অসুস্থ মানুষ-জনকে সেবা দেয়া, হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের চেম্বারে আনা-নেয়া করা, সময় মত ওষধ সেবন, গোসল করানো, স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য পরিবেশন ইত্যাদি কাজে (যতটাই ঘটে থাকুক) লোকজনকে অভিজ্ঞ করতেও অনেকের অবদান অস্বীকারের উপায় নেই। এমনি অবস্থায় প্রযুক্তির মাধ্যমে ৫০/৬০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়ার ঘটনাটি হৃদয় বিদারক বৈকি। পিপিএল এখনো কোন অফিস খুলেনি। সবকিছু ফোন, অনলাইনে করছে। এই প্রক্রিয়া কম্যুনিটির অনেকের পক্ষেই অনুসরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। যেহেতু তারা টেকনিক্যাল হ্যান্ডেড নন।

মামুন রশীদ বলেন, তারা হয়তো অফিস নেবে, কিন্তু বর্তমানের মত কম্যুনিটির দোর-গোড়ায় কী আসতে পারবে? অর্থাৎ সেবা প্রার্থীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তায় নিপতিত হয়েছেন। মামুন বলেন, যারা সেবা নিচ্ছেন তারা নিজ ভাষায় কথা বলতে না পারলে সেবাদাতাও স্বাচ্ছন্দবোধ করবে না। একইসাথে রোগীর সমস্যা সম্পর্কেও তেমন ওয়াকিবহাল হতে সক্ষম হবেন না। এছাড়া, শোনা যাচ্ছে যে, পিপিএল পুরো ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে চাচ্ছে। তার ফলে বর্তমানে সেবা প্রাপ্তির ঘন্টা কমতে পারে। অর্থাৎ সেবা প্রদানকারির আয় কমার আশংকা দেখা দেবে। মজুরিও প্রতি ঘন্টায় ৩ ডলার করে কমতে পারে। এ অবস্থায় অনেকে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে এবং মনোকষ্টে পড়েছেন।

মামুন বলেন, পিপিএল তার কার্যক্রম শুরু করলে সেবাদাতাদেরকে একটি কোর্স নিতে হবে। চিকিৎসা-সেবা সম্পর্কে ন্যূনতম একটি ধারণা থাকতে হবে। এ ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর বর্তমানের মত মা-বাবা, ভাই-বোনকে সেবা দেয়া সম্ভব হবে না। আত্মীয় নন-এমন রোগীকে সেবা দিতে হবে। এরফলে প্রবীণরা পড়বেন আরেক ধরনের সংকটে। নিজ ভাষায় কথা বলা, নিজ সংস্কৃতির আবহে সেবা নেয়ার ব্যাপারটি গভীর এক সংকটে পড়বে। অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, তবে কম্যুনিটির সেবা দাতারা যদি কম্যুনিটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারেন, তাহলেও কিছুটা সংকট কমতে পারে। তবে সেবা না দিয়ে বেতন ড্র করার পর ভাগাভাগির বর্তমানের বিশেষ ব্যবস্থাটি অকল্পনীয় হয়ে পড়বে-তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।