নাঈমের সেঞ্চুরি, প্লে অফের দরজা খোলা রাখলো খুলনা
- প্রকাশের সময় : ১২:০৮:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৪০ বার পঠিত
শুরুটা হলো শম্ভুক গতিতে, ইনিংসের ১০ ওভার পেরিয়ে গেলেও নাঈম শেখের নামের পাশে ২৩ বলে ২৯ রান। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ওপেনারের কাছ থেকে এমন শুরু কোনো দলই চায় না। তবে শেষ পর্যন্ত নাঈম পুষিয়ে দিয়েছেন, হাঁকিয়েছেন বিপিএলে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। বসেছেন চলতি আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের সিংহাসনে। আসরের শীর্ষ দল রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে হার না মানা ১১১ রানের ইনিংস খেলেন নাঈম শেখ। তিনি যখন সেঞ্চুরিটা করলেন তার চেয়ে খ্যাপাটে উদযাপন করলেন ডাগআউটে খুলনা অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। এতেই বোঝা যায় ইনিংসটির গুরুত্ব কতখানি! তার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে খুলনাও পায় দুইশ ছাড়ানো সংগ্রহ। পরে সৌম্য সরকার একা লড়লেও রংপুরকে অনেক আগেই থামায় খুলনার বোলাররা। গুরুত্বপূর্ণ জয় দিয়ে আসরের প্লে অফে খেলার সম্ভাবনা ধরে রাখে খুলনা টাইগার্স।
মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলে দিনের প্রথম খেলায় রংপুরকে ৪৬ রানে হারায় খুলনা। আগে ব্যাটিং করে নাঈম শেখের ৭ চার ও ৮ ছক্কায় ৬২ বলে অপরাজিত ১১১ রানের ইনিংসে ২২০ রান করে খুলনা। একই সঙ্গে ঢাকা ক্যাপিটালসের তানজিদ হাসানে তামিমের ৪২৭ রান পেরিয়ে এবারের বিপিএলের রানের তালিকায় এখন শীর্ষে নাঈম। এই ইনিংস শেষে ১১ ইনিংসে তার রান ৪৪৪। স্ট্রাইক রেট প্রায় দেড়শ। চলতি বিপিএলে এই নিয়ে সেঞ্চুরি হলো আটটি। দেশি-বিদেশি ব্যাটারদের শতরান সমান চারটি করে। জবাবে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রানে থামে রংপুরের ইনিংস। এই জয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো খুলনা। ১লা ফেব্রুয়ারি ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারালেই প্লে অফের দরজা খুলে যাবে তাদের। আর টানা ৮ জয়ের পর এ নিয়ে টানা ৪ ম্যাচ হারলো রংপুর। রান তাড়ায় পাওয়ার প্লেতে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৪৫ রান। শুরুতে ব্যাটে বল লাগাতেই ভুগছিলেন সৌম্য, তবে আস্তে আস্তে খোলস ছেড়ে বের হন তিনি। ৪ নম্বরে নেমে ইফতিখারও তেমন কিছু করতে পারেননি, ফেরেন ১৫ বলে ১৯ রানে। শেখ মেহেদী ভালো শুরু করলেও বেশিদূর এগোতে পারেননি। তার ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে ২৭ রান। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। অন্যরা যখন ব্যর্থ, একপ্রান্ত আগলে রাখেন সৌম্য। যদিও শেষ ওভারে আউট হওয়া এই ওপেনারের ৪৮ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৪ রানের ইনিংস শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া খুলনার অধিনায়ক প্রথম ওভারেই হাঁকান দুই ছক্কা। পরে ওভারে শেখ মেহেদি হাসানকে ছক্কায় ওড়ান নাঈমও। মিরাজের বিদায়ের পর একই গতিতে রান করতে পারেননি নাঈম ও অ্যালেক্স রস। অষ্টম ওভারে মারাত্মক ভুল বোঝাবুঝি ভাঙে এই জুটি। লং অনের দিকে খেলে এক রান পূর্ণ করে শুরুতে দ্বিতীয় রানের ডাক দেন নাঈম। কিন্তু নিতে পারবেন না বুঝতে পেরে পরে ফিরিয়ে দেন। ততক্ষণে দেরী হয়ে গেছে। ১৪ বলে ১২ রান করা রস রান আউট হয়ে রাগ দেখাতে দেখাতে মাঠ ছাড়েন। ১০ ওভার শেষেও ৩০ এর ঘরে যেতে পারেননি নাঈম। তবে এক ওভার পর থেকে ভিন্ন রুপে আবির্ভুত হওয়া শুরু করেন তিনি। ১২তম ওভারেই হাঁকান তিন ছক্কা। ২৩ বলে ২৯ থেকে ৩৪ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। এর আগে ফিফটি পেরোনোর পর উইকেট ছুড়ে দেওয়ার রেকর্ড ছিল নাঈমের। তবে গতকাল সব পেরিয়ে অষ্টাদশ ওভারে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের টানা তিন বলে এক ছক্কা ও দুই চারে শতরানে পা রাখেন তিনি ৫৫ বলে। বিপিএলে এটা নাঈমের প্রথম সেঞ্চুরি আর স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয়। এর আগে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে বেক্সিমকো ঢাকার হয়ে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে করেছিলেন ৬৪ বলে ১০৫ রান। সেঞ্চুরির পর শেষ ওভারেও একটি ছক্কা মেরে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন নাঈম। সূত্র : মানবজমিন।