তোপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীও
পদত্যাগে টিউলিপের সব শেষ হয়ে যায়নি

- প্রকাশের সময় : ০৩:২৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৪৫ বার পঠিত
দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে বাংলাদেশে তদন্ত শুরু হওয়ার পর সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তাঁর পদত্যাগের পর নিজ দলের মধ্যে তোপের মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। টিউলিপ যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার পদে থেকে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগেই তাঁকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হলো।
লেবার পার্টির এমপি পিপ্পা ক্রেরা বলেছেন, এখন প্রধানমন্ত্রীর বুদ্ধি-বিবেচনার ওপর প্রশ্ন তুলছে মানুষ। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত একজন বাংলাদেশি নেতার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক থাকার পরও স্টারমার কিভাবে টিউলিপকে দুর্নীতি দমন মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিলেন?
এদিকে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম মন্তব্য করেছেন, ‘এটা লন্ডনে ৩৭ জুলাই।’ ‘৩৬ জুলাই’ বলতে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিনকে বোঝানো হয়। এরই সূত্র ধরে হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে লিখেছে, বাংলাদেশে ‘৩৬ জুলাই’-এর পাঁচ মাস পরে লন্ডনে এলো ‘৩৭ জুলাই’।
কিন্তু ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিকের সবটুকু শেষ হয়ে গেছে—এমনটা ভাবার সময় এখনো আসেনি। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার স্পষ্ট জানিয়েছেন, টিউলিপের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করলেও তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের কোনো প্রমাণ মেলেনি। মন্ত্রিত্বের কোনো নিয়মও ভঙ্গ করেননি টিউলিপ। সেই পরিস্থিতিতে টিউলিপের জন্য চিরকাল ‘দরজা’ খোলা থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন স্টারমার। গার্ডিয়ান আরো জানায়, টিউলিপ ও প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের মধ্যে পুরনো রাজনৈতিক সখ্য রয়েছে। ২০২০ সালে স্টারমারের নেতৃত্বে লেবার পার্টির বিজয়ের পেছনে টিউলিপের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এই সম্পর্ক টিউলিপের ফিরে আসার পথ উন্মুক্ত রাখতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি টিউলিপের বিরুদ্ধে কোনো নতুন অভিযোগ না ওঠে, তাহলে ভবিষ্যতে তাঁকে মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে আরো তদন্তের প্রয়োজন থাকতে পারে।
টিউলিপের পদত্যাগের পর প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে গার্ডিয়ান জানায়, টিউলিপ মন্ত্রিত্বের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন কি না তা শেষ পর্যন্ত ম্যাগনাস বুঝতে পারেননি। ম্যাগনাস তাঁকে অভিযুক্তও করেননি বা তাঁর বিরুদ্ধে অনৈতিক কোনো কিছু করার প্রমাণও খুঁজে পাননি। তবে ম্যাগনাস টিউলিপকে সরাসরি নির্দোষ ঘোষণা না করে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে এখনো অনেক প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বিবৃতি
গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে করা পোস্টে বলা হয়েছে, জবাবদিহি ও ন্যায়বিচারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে সরকার।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের বেশির ভাগ নাগরিকের মত এরই মধ্যে ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘পূর্ববর্তী সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশি তহবিলের সঙ্গে জড়িত সব সম্পদ চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাপারে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করতে হবে। সে রকম কোনো অনিয়মের প্রমাণ দেখলে আশা করি সেই সম্পদগুলো বাংলাদেশকে ফেরত দেওয়া হবে, যেগুলোর প্রকৃত মালিক বাংলাদেশই।’ সূত্র : কালের কণ্ঠ।