দ. কোরিয়া বিমান দুর্ঘটনা
আবার বিতর্কে বোয়িং
- প্রকাশের সময় : ০২:২৬:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৪৮ বার পঠিত
জেজু এয়ারলাইন্সের একটি বিমান রোববার দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটিতে থাকা ১৮১ আরোহীর ১৭৯ জনই নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনার পর আবারও সামনে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের নাম। খবর এপির
কারণ যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে সেটি তাদের তৈরি ৭৩৭-৮০০ মডেলের আকাশযান। এ দুর্ঘটনার পর বোয়িং বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও ডেল্টা এয়ারের সাবেক প্রধান পাইলট অ্যালান প্রাইস বলেছেন, ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রমাণিত। এই বিমানে বড় ধরনের কোনো যান্ত্রিক ত্রুটিও পাওয়া যায়নি।
তবে গতকাল সোমবার জেজু এয়ারলাইন্সের এই একই মডেলের একটি বিমান রাজধানী সিউলের গিম্পো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের এক ঘণ্টা পর ফিরে আসে। ল্যান্ডিং গিয়ারে সমস্যা হয়েছে এমনটি সন্দেহ করে বিমানটি নিয়ে ফিরতে বাধ্য হন পাইলট। জেজু এয়ারের ৪১টি বিমান আছে; যার মধ্যে ৩৯টিই বোয়িং থেকে কেনা।
দক্ষিণ কোরিয়ায় রোববার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর বোয়িংয়ের শেয়ারে ধস নেমেছে। গত এক বছরের ব্যবধানে এমনিতেই তাদের শেয়ারের দাম ৩০ শতাংশ কমেছে। এখন বছরের শেষ দিকে এসে আরেকটি ধাক্কা খেল তারা।
২০১৮ ও ২০১৯ সালে মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের দুটি বিমান ইন্দোনেশিয়া ও ইথিওপিয়ায় বিধ্বস্ত হয়। এ দুটি দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় ৩৪৬ জন মানুষের প্রাণ। এ বছরের জানুয়ারিতে মাঝ আকাশে এ মডেলের একটি বিমানের দরজা খুলে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। বড় ওই দুটি দুর্ঘটনার পর বোয়িংয়ের ক্ষতি হয় ২৩ বিলিয়ন ডলার। জানুয়ারিতে যখন মাঝ আকাশে দরজা খুলে পড়ে তখন দীর্ঘ সময় এই মডেলের বিমানগুলো চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এসবের মধ্যে নিজেদের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী এয়ারবাসের চেয়ে বিমান বিক্রি এবং সময়মতো সেগুলো পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে গেছে বোয়িং। চলতি বছর বোয়িংয়ের ৩৩ হাজার যন্ত্রবিদ কর্মবিরতি শুরু করেন। এতে করে তাদের ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান উৎপাদনে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটে। এর পর আগামী চার বছরে ৩৮ শতাংশ বেতন বাড়ানোর দাবি মেনে নেওয়ার পর তারা আন্দোলন স্থগিত করেন। তবে এই কর্মবিরতির কারণে বড় ক্ষতির মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি।
বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্রেতাকে বিমান দেওয়ার চেষ্টা করে। এটি করতে গিয়ে নিরাপত্তার বিষয়টিকে তারা উপেক্ষা করে। এমন গুরুতর অভিযোগের পর গত আগস্টে প্রতিষ্ঠানটির সিইও ডেভিড কালহন পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ওই সময় বোয়িং জানায়, যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে তারা আরও প্রাধান্য দেবেন। জানুয়ারি থেকে বোয়িংয়ের ৭০ হাজার কর্মী নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নতি বিষয়ক বৈঠকে অংশ নেন।
এদিকে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট দেশের সব বিমান জরুরি ভিত্তিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও প্রাথমিক কারণ হিসেবে পাখির আঘাতকে বলা হয়েছে। কিন্তু সঠিক কারণ খুঁজে বের করতে না পারায় সব বিমান পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। জানা গেছে, ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় যে দু’জন বেঁচে গেছেন তারা বিমানটির ক্রু ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, বিমানের পেছনের দিকে থাকায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন তারা।