রোহিঙ্গা সংকট : সমাধানের দায় বিশ্ব সমাজের
- প্রকাশের সময় : ০৪:৩১:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৭ বার পঠিত
নেহাত মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া বাস্তুচ্যুত ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিয়ানমারে নৃশংস নির্যাতনে বাস্তুচ্যুত এই বিপুল জনসংখ্যা এ দেশের প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদের অনেকেই নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়েছে। খুনখারাবি লেগেই আছে। এরা অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোকে। এরকম একটা বিব্রতকর বাস্তবতায়, এর মধ্যে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গ্রæপ আরাকান আর্মি মংডু শহর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর রাখাইন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে সেনাদের সঙ্গে তাদের যুদ্ধ চলছে। সেনাবাহিনী এ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারালে নিরাপত্তাঝুঁকিতে পড়বে পাঁচ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। আরাকান আর্মির সঙ্গে বিরোধের কারণে সেখানকার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া আগামী মার্চ-এপ্রিলে রাখাইনে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। তাতে খাদ্য সংকটে পড়বে আরও অন্তত ২০ লাখ লোক। তেমন হলে, দু-এক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে ফের ভয়াবহ রোহিঙ্গা-ঢলের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গা নেওয়ার মতো অবস্থা বাংলাদেশের নেই। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদ এবং সীমান্তে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ। তারপরও দালাল চক্রের নানা কৌশলে কিছু রোহিঙ্গা ঢুকে পড়ছে। এসব খবর বেরিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিনে। এদের প্রতিরোধে আরও নিন্ডিদ্র ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ জনবহুল বাংলাদেশে এত ব্যাপকসংখ্যক রোহিঙ্গার দীর্ঘদিন অবস্থানে নানা আর্থসামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। অনির্দিষ্টকাল ধরে এই ভার বহন কোনো পক্ষের জন্যই সুখকর নয়। এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে, ওই বিশ্ব সংস্থার শরণার্থীবিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দেন। তাতে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী-সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক বৈঠকের ওপর বিশেষ জোর দেন। যেখানে বাস্তব পরিস্থিতি পর্যালোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানে দিকনির্দেশনা বেরিয়ে আসবে। মূলত কার্যকর ফলাফলের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের উচিত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যামূলক অপরাধ মোকাবিলায় ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি ব্যবস্থাকে গুরুত্বসহ সমর্থন করা। এবং তার মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বদেশে নিজস্ব ঠিকানায় নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা। এ দায় সভ্যতা-গর্বিত এবং সব মঞ্চে উচ্চকণ্ঠে বিশ্বশান্তির পক্ষে কথা বলা আজকের শীর্ষ বিশ্বনেতাদের। (বাংলাদেশ প্রতিদিন)