প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে শঙ্কায় ভোটাররা
- প্রকাশের সময় : ০১:১৭:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৪ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এ নির্বাচনের আগে ব্যাপক সহিংসতা, ফল পাল্টানোর চেষ্টা, রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে দেশটির ভোটাররা শঙ্কায় রয়েছেন। হঠাৎ করেই রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে সাধারণ ভোটাররা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার ও রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে ভোটারদের মধ্যে দেশের গণতন্ত্র নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চের এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, আমেরিকার নিবন্ধিত ভোটারদের ৪০ ভাগই বলেছেন, তারা নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টায় সহিংসতা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে। রিপাবলিকানপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করে আসছেন-কেবলমাত্র নির্বাচনে কারচুপি হলে তিনি পরাজিত হবেন। এসব আগাম অভিযোগ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ক্রমেই উদ্বেগ বাড়ছে। নিবন্ধিত ভোটারদের ৯০ ভাগই মনে করেন, প্রত্যেক অঙ্গরাজ্যে ভোট গণনা শেষ করে এবং অভিযোগের চ্যালেঞ্জগুলো আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে সমাধান করলে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীকে তা অবশ্যই মেনে নেওয়া উচিত। ভোটারদের এক-তৃতীয়াংশ মনে করেন, রিপাবলিকানপপ্রার্থী ট্রাম্প নির্বাচনে হেরে গেলে তিনি পরাজয় মেনে নিবেন। এদিকে ডেমোক্র্যাটদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন ট্রাম্পের পরাজয় মেনে নেওয়ার বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্প প্রতিশোধের বন্যা বয়ে দেবেন : কমলা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। এরই মধ্যে ভোটারদের উদ্দেশে সমাপনী বক্তব্য দিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। কমলা হ্যারিস তার বক্তব্য এমন স্থানে দিয়েছেন, যেখানে প্রায় চার বছর আগে ক্যাপিটল দাঙ্গার ঠিক আগে আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পও বক্তব্য রেখেছিলেন। সেই ওয়াশিংটনে নিজের শেষদিকের নির্বাচনি প্রচারে কমলা বলেছেন, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে প্রতিশোধের বন্যা বয়ে দেবেন। তিনি শত্রæর তালিকা নিয়ে হোয়াইট হাউসে যাবেন। আর আমি দেশের কল্যাণে কী করা যায় সেই পরিকল্পনার তালিকা নিয়ে যাব। কমলা হ্যারিস আমেরিকানদের সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্প নির্বাচিত হলে কেবল তার শত্রæকেই ঘায়েল করবেন না, সাধারণ মানুষের ওপরও তিনি প্রতিশোধ নেবেন।
কমলা হ্যারিস বলেন, ৯০ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে আমি অথবা ট্রাম্প ওভাল অফিসে যাব। কিন্তু দুই জনের পরিকল্পনায় তফাত রয়েছে। তিনি শত্রæকে শেষ করার জন্য কাজ করবেন। আর আমি দেশের মঙ্গলের জন্য অগ্রাধিকার ইস্যুগুলো বাস্তবায়ন করব। ভাইস প্রসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, এই নির্বাচন সম্ভবত আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। স্বাধীনতা ও বিশৃঙ্খলার মধ্য থেকে যে কোনো একটিকে বেছে নেওয়ার এখনই সময়। এর মাধ্যমে আপনারা জীবনের সবচেয়ে অসাধারণ কাহিনির পরবর্তী অধ্যায়টি লিখতে পারবেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প ভারসাম্যহীন, প্রতিশোধপরায়ণ এবং ক্ষুব্ধ একজন ব্যক্তি। বাইডেনের কাছে পরাজয় মেনে নিতে পারেননি রিপাবলিকান প্রার্থী, তাই সশস্ত্র জনতা দিয়ে ইউএস ক্যাপিটলে হামলা চালিয়ে নির্বাচনের ফল উল্টে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ে কমলা বলেন, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো খরচ কমানো, যা করোনা মহামারির আগ থেকে বাড়ছিল এবং এখনো অনেক বেশি। সব ভেদাভেদ ভুলে দেশের জন্য মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হ্যারিস বলেন, পরস্পরকে দোষারোপ করা বন্ধ করে আমাদের উচিত হাতে হাত রেখে দাঁড়ানো। নারীদের গর্ভপাতের অধিকার নিয়েও কথা বলেছেন কমলা। তিনি বলেন, নিজের শরীরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মৌলিক স্বাধীনতা মানুষের থাকা দরকার। অথচ ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে আমেরিকার নারীদের গর্ভধারণ করতে বাধ্য করবেন। বিশ্বাস না হলে আপনারা প্রজেক্ট-২০২৫ গুগল করুন।
লেবাননে শান্তি ফেরাতে মুসলিমদের ভোট চাইলেন ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এতে অংশগ্রহণ করছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। লেবাননে শান্তি ফেরাতে মুসলিম ভোটারদের কাছে সামাজিকমাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে চান এবং লেবাননে ধ্বংস এবং দুভোর্গ কমিয়ে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে চান। এক্স হ্যান্ডলে ট্রাম্প জানান, তার প্রশাসনের সময়, তারা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি পেয়েছেন এবং খুব শিগগিরই তারা আবার শান্তি পাবে। তিনি কমলা হ্যারিস এবং জো বাইডেনের কারণে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান এবং লেবাননে দুর্ভোগ ও ধ্বংস বন্ধ করবেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে প্রকৃত শান্তি দেখতে চান। সেখানে একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। যাতে এটি প্রতি ৫ বা ১০ বছরে পর যেন পুনরাবৃত্তি না হয়।
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি সমস্ত লেবাননের সম্প্রদায়ের মধ্যে সমান অংশীদারত্ব রক্ষা করবেন। লেবাননে তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবার তাদের প্রতিবেশীদের সাথে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করার যোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করতে চান। তিনি আশাবাদী লেবাননের মহান জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত লেবানিজ সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করে শান্তির জন্য তাকে ভোট দেওয়ার আহবান করেন। প্রসঙ্গত, গত ১ বছর ধরে গাজায় চলছে ইসরায়েলের অবর্ণনীয় নিষ্ঠুরতা। এমন পরিস্থিতিতে মুসলিম ভোটাররা হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিতে পারে। আর তাই মুসলিম ভোটারদের টানতে নানা প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন ট্রাম্প ও কমলা। (দৈনিক বাংলা)