নিউইয়র্ক ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ফ্লোরিডা উপকূলে আঘাত হেনেছে ‘মিল্টন’, ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৩০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৪৭ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের উপকূল দিয়ে ঘণ্টায় প্রায় ১৫ মাইল বেগে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মিল্টন। এর প্রভাবে উপকূলে ১২০ মাইল বেগে বাতাস বইছে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে ১ মিলিয়ানের বেশি বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের (এনএইচসি) বরাতে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, ফ্লোরিডা অতিক্রম করে এবং আগামী কয়েক ঘণ্টায় আটলান্টিকের দিকে অগ্রসর হবে মিল্টন। এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিল্টন আঘাত হানার আগেই ইতোমধ্যে ফ্লোরিডায় একটি টর্নেডো আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড় মিল্টনের প্রভাবে ফ্লোরিডায় প্রবল বাতাস ও ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে বলে জানিয়ে এপি।
ঘূর্ণিঝড়টির মাত্রা এরই মধ্যে দুই দফায় কমিয়ে পাঁচ থেকে তিনে নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু তারপরও এর আঘাতে বড় রকমের হতাহত ও ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। হ্যারিকেনের ভয়াবহতা ইতিমধ্যে উপকূলীয় এলাকার মানুষকে বিভিন্ন সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সতর্কতায় টাম্পার জাতীয় আবহাওয়া সার্ভিস এক বিবৃতিতে বলেছে, যদি ঝড়টির গতিপথ একই রকম থাকে। এটি গত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী ঝড় হবে। মিল্টন এখনো ফ্লোরিডা উপকূলের জন্য বিপর্যয়কর ঝুঁকি হিসেবে অবস্থান করছে। হারিকেন হেলেনের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই অঙ্গরাজ্যটি আবারও দুর্যোগের মুখে পড়ল। ওই ঘূর্ণিঝড়ে ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, সাউথ ক্যারোলিনা, টেনেসি, ভার্জিনিয়া এবং নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যে অন্তত ২২৫ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।
দ্যা গার্ডিয়ান জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে আছড়ে পড়েছে হারিকেন মিল্টন। শক্তিশালী এ সামুদ্রিক ঝড় সর্বপ্রথম আঘাত হানে দেশটির ফ্লোরিডার সিয়েস্তা বে এবং ফোর্ট মায়ার্সে। ওই সময় এটি ক্যাটাগরি-৩ হারিকেন হিসেবে আঘাত হানে। এর প্রভাবে দেশটির বহু এলাকার প্রায় ৩০ লাখ বাসিন্দা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। অনেক এলাকায় ঢুকে পড়েছে পানি। ফ্লোরিডার বন্দরনগরী ফোর্ট শেয়ারে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর জলোচ্ছ¡াসের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সেখানকার রাস্তাঘাট।
ঝড়টি উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি। বাতাসের এমন অস্বাভাবিক গতির কারণে ওই অঞ্চলে বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ এবং বিভিন্ন অবকাঠামো ধসে পড়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, হারিকেনের প্রভাবে ফ্লোরিডার টাম্পা এবং সেন্ট পিটাসবার্গে ১৮ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই এলাকাগুলোতে একদিনে এত বৃষ্টি এক হাজার বছরেও একবার হতে দেখা যায় না। কিন্তু এবার হারিকেন মিল্টনের প্রভাবে এমন বৃষ্টিপাত হয়েছে। অপরদিকে বিশ্বখ্যাত স্বচ্ছপানির সমুদ্র সৈকতে ১৪ ইঞ্চি পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে।
ফ্লোরিডা জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কেভিন গুথরি বলেছেন, হারিকেনটি স্থলভাগে আঘাত হানার আগেই প্রায় ১২৫টি বাড়ি লন্ডভন্ড করে দেয়। এর মধ্যে অনেকগুলো বাড়ি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য তৈরি করা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এমন ঝড় আর এতো ভারী বৃষ্টি এর আগে কখনো দেখেনি তারা। ঝড়টির শক্তি বেশি থাকায় জরুরি পরিষেবা সংস্থার কর্মীরাও তাদের কাজ বন্ধ রাখেন। এটি স্থলভাগ থেকে আবারও সমুদ্রে চলে গেলে তারা কাজ শুরু করবেন।
ক্যাটাগরি-১ হারিকেনের শক্তি ধরে রাখা মিল্টন এখনো উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ো বাতাসসহ তান্ডব চালাচ্ছে। সিএনএনের আবহাওয়াবিদ ডেরেক ভেন ড্যাম জানিয়েছেন, হ্যারিকেনের প্রভাবে ফ্লোরিডার ট্রেজার উপকূলে একাধিক টর্নেডো সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় জলোচ্ছাসও দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টার দিকে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, হারিকেন মিল্টনের মূল কেন্দ্রটি ফ্লোরিডা উপদ্বীপ অতিক্রম করছে এবং পূর্ব উপকূল থেকে সরে যাচ্ছে।
তবে ক্যাটাগরি-১ হারিকেনের শক্তি ধরে রাখা মিল্টন এখনো উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ো বাতাসসহ তান্ডব চালাচ্ছে। সিএনএনের আবহাওয়াবিদ ডেরেক ভেন ড্যাম জানিয়েছেন, হারিকেনের প্রভাবে ফ্লোরিডার ট্রেজার উপকূলে একাধিক টর্নেডো সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় জলোচ্ছ্বাসও দেখা দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানায়, বুধবার রাতে স্থলভাগে আঘাত হানার প্রায় ৯০ মিনিট পরে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের অবস্থান ছিল সারাসোটা কাউন্টি থেকে প্রায় ২০ মাইল (৩০ কিলোমিটার) উত্তর-পূর্বে। এ সময় কিছুটা দুর্বল হয়ে ২ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় মিল্টন। এটির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ মাইল (১৭৫ কিলোমিটার), যা ঘণ্টায় ১৬ মাইল (২৬ কিলোমিটার) বেগে পূর্ব-উত্তর পূর্বে অগ্রসর হচ্ছিল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ফ্লোরিডা উপকূলে আঘাত হেনেছে ‘মিল্টন’, ভয়াবহ ক্ষতির শঙ্কা

প্রকাশের সময় : ০২:৩০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের উপকূল দিয়ে ঘণ্টায় প্রায় ১৫ মাইল বেগে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মিল্টন। এর প্রভাবে উপকূলে ১২০ মাইল বেগে বাতাস বইছে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে ১ মিলিয়ানের বেশি বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের (এনএইচসি) বরাতে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, ফ্লোরিডা অতিক্রম করে এবং আগামী কয়েক ঘণ্টায় আটলান্টিকের দিকে অগ্রসর হবে মিল্টন। এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিল্টন আঘাত হানার আগেই ইতোমধ্যে ফ্লোরিডায় একটি টর্নেডো আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড় মিল্টনের প্রভাবে ফ্লোরিডায় প্রবল বাতাস ও ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে বলে জানিয়ে এপি।
ঘূর্ণিঝড়টির মাত্রা এরই মধ্যে দুই দফায় কমিয়ে পাঁচ থেকে তিনে নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু তারপরও এর আঘাতে বড় রকমের হতাহত ও ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। হ্যারিকেনের ভয়াবহতা ইতিমধ্যে উপকূলীয় এলাকার মানুষকে বিভিন্ন সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সতর্কতায় টাম্পার জাতীয় আবহাওয়া সার্ভিস এক বিবৃতিতে বলেছে, যদি ঝড়টির গতিপথ একই রকম থাকে। এটি গত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী ঝড় হবে। মিল্টন এখনো ফ্লোরিডা উপকূলের জন্য বিপর্যয়কর ঝুঁকি হিসেবে অবস্থান করছে। হারিকেন হেলেনের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই অঙ্গরাজ্যটি আবারও দুর্যোগের মুখে পড়ল। ওই ঘূর্ণিঝড়ে ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, সাউথ ক্যারোলিনা, টেনেসি, ভার্জিনিয়া এবং নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যে অন্তত ২২৫ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।
দ্যা গার্ডিয়ান জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে আছড়ে পড়েছে হারিকেন মিল্টন। শক্তিশালী এ সামুদ্রিক ঝড় সর্বপ্রথম আঘাত হানে দেশটির ফ্লোরিডার সিয়েস্তা বে এবং ফোর্ট মায়ার্সে। ওই সময় এটি ক্যাটাগরি-৩ হারিকেন হিসেবে আঘাত হানে। এর প্রভাবে দেশটির বহু এলাকার প্রায় ৩০ লাখ বাসিন্দা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। অনেক এলাকায় ঢুকে পড়েছে পানি। ফ্লোরিডার বন্দরনগরী ফোর্ট শেয়ারে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর জলোচ্ছ¡াসের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সেখানকার রাস্তাঘাট।
ঝড়টি উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি। বাতাসের এমন অস্বাভাবিক গতির কারণে ওই অঞ্চলে বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ এবং বিভিন্ন অবকাঠামো ধসে পড়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, হারিকেনের প্রভাবে ফ্লোরিডার টাম্পা এবং সেন্ট পিটাসবার্গে ১৮ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই এলাকাগুলোতে একদিনে এত বৃষ্টি এক হাজার বছরেও একবার হতে দেখা যায় না। কিন্তু এবার হারিকেন মিল্টনের প্রভাবে এমন বৃষ্টিপাত হয়েছে। অপরদিকে বিশ্বখ্যাত স্বচ্ছপানির সমুদ্র সৈকতে ১৪ ইঞ্চি পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে।
ফ্লোরিডা জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কেভিন গুথরি বলেছেন, হারিকেনটি স্থলভাগে আঘাত হানার আগেই প্রায় ১২৫টি বাড়ি লন্ডভন্ড করে দেয়। এর মধ্যে অনেকগুলো বাড়ি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য তৈরি করা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এমন ঝড় আর এতো ভারী বৃষ্টি এর আগে কখনো দেখেনি তারা। ঝড়টির শক্তি বেশি থাকায় জরুরি পরিষেবা সংস্থার কর্মীরাও তাদের কাজ বন্ধ রাখেন। এটি স্থলভাগ থেকে আবারও সমুদ্রে চলে গেলে তারা কাজ শুরু করবেন।
ক্যাটাগরি-১ হারিকেনের শক্তি ধরে রাখা মিল্টন এখনো উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ো বাতাসসহ তান্ডব চালাচ্ছে। সিএনএনের আবহাওয়াবিদ ডেরেক ভেন ড্যাম জানিয়েছেন, হ্যারিকেনের প্রভাবে ফ্লোরিডার ট্রেজার উপকূলে একাধিক টর্নেডো সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় জলোচ্ছাসও দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টার দিকে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, হারিকেন মিল্টনের মূল কেন্দ্রটি ফ্লোরিডা উপদ্বীপ অতিক্রম করছে এবং পূর্ব উপকূল থেকে সরে যাচ্ছে।
তবে ক্যাটাগরি-১ হারিকেনের শক্তি ধরে রাখা মিল্টন এখনো উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ো বাতাসসহ তান্ডব চালাচ্ছে। সিএনএনের আবহাওয়াবিদ ডেরেক ভেন ড্যাম জানিয়েছেন, হারিকেনের প্রভাবে ফ্লোরিডার ট্রেজার উপকূলে একাধিক টর্নেডো সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় জলোচ্ছ্বাসও দেখা দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানায়, বুধবার রাতে স্থলভাগে আঘাত হানার প্রায় ৯০ মিনিট পরে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের অবস্থান ছিল সারাসোটা কাউন্টি থেকে প্রায় ২০ মাইল (৩০ কিলোমিটার) উত্তর-পূর্বে। এ সময় কিছুটা দুর্বল হয়ে ২ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় মিল্টন। এটির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ মাইল (১৭৫ কিলোমিটার), যা ঘণ্টায় ১৬ মাইল (২৬ কিলোমিটার) বেগে পূর্ব-উত্তর পূর্বে অগ্রসর হচ্ছিল।