নিউইয়র্ক ০৩:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

৯ মাসে গায়েব রপ্তানির সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার!

হককথা ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১২:৫৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪
  • / ২০৯ বার পঠিত

রপ্তানির মাধ্যমে দেশ থেকে পণ্য যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু অর্থ আসছে না ফেরত। এতে দেশের রপ্তানি আয়ে প্রতি অর্থবছর বড় ধরনের পার্থক্য দেখা দিচ্ছে। কয়েক বছর ধরে এ পার্থক্য বেড়েই চলেছে। চলতি অর্থবছর প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) এ পার্থক্য ছিল সাড়ে আট বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। তবে ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) এ পার্থক্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। অথচ গত অর্থবছর রপ্তানি আয়ে পার্থক্য ছিল প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার।

ইপিবির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছর প্রথম ৯ মাসে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৪৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এ সময় রপ্তানি আয় দেশে এসেছে ২৮ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ৯ মাসে রপ্তানি আয়ে পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা ধরলে রপ্তানি আয়ে পার্থক্যের পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ৬০ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ পাঁচটি পদ্মা সেতুর নির্মাণব্যয়ের সমান অর্থ ৯ মাসে দেশে আসেনি।

দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছর জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে রপ্তানি আয়ে সবচেয়ে বেশি পার্থক্য ছিল তৈরি পোশাক খাতে। ইপিবি বলছে, চলতি অর্থবছর প্রথম ৯ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানি আয় ২১ দশমিক ০১ বিলিয়ন ডলার এবং ওভেন ১৬ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছর প্রথম ৯ মাসে তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানি আয় ১৩ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার এবং ওভেন ১১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার।

এ হিসাবে তৈরি পোশাক খাতেই ১২ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার ৯ মাসে দেশে আসেনি। এর মধ্যে নিট খাতে আসেনি সাত দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার ও ওভেন খাতে চার দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরও তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয় দেশে না আসার পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। ইপিবির হিসাবে গত অর্থবছর ৪৬ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে গত অর্থবছরে ৩৬ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার দেশে এসেছে। তার মানে গত অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানির ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ গত জুন পর্যন্ত দেশে আসেনি।

ইপিবির হিসাবে ২০২২-২৩ অর্থবছর বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত অর্থবছর পণ্য রপ্তানি বাবদ পাওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ৪৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ইপিবির হিসাবের চেয়ে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার কম রপ্তানি আয় দেশে আসে ওই অর্থবছর।

এর আগের বছরগুলোয় রপ্তানি আয়ের পার্থক্য থাকলেও ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে তা বাড়ছে। এজন্য বৈশ্বিক মন্দা ও ক্রেতাদের অর্থ পরিশোধে বিলম্বকে মূলত দায়ী করা হচ্ছে। ইপিবির হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছর দেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয় ৫২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলারের। তবে ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি বাবদ প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ ছিল ৪৩ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ওই অর্থবছর হিসাবে তারতম্য ছিল প্রায় সাড়ে আট বিলিয়ন ডলার।

এর আগের (২০২০-২১) অর্থবছর ইপিবির হিসাবে দেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয় ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলারের। তবে ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি বাবদ প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ ছিল ৩৩ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ওই অর্থবছর হিসাবে পার্থক্য ছিল চার দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছর ইপিবির হিসাবে দেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয় ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারের। তবে ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি বাবদ প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ওই অর্থবছর হিসাবে পার্থক্য ছিল তিন দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এ প্রসঙ্গে শেয়ার বিজকে বলেন, রপ্তানি করে যে অর্থ আসে সেটিকেই প্রকৃত রপ্তানি আয় ধরা উচিত। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বেশি গ্রহণযোগ্য। ইপিবি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানের পার্থক্যের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ক্রেতারা অনেক দেরি করে আমদানি করা পণ্যের অর্থ পরিশোধ করছেন। স্টক বেড়ে যাওয়া ও বিক্রি কমে যাওয়ার কারণে তারা দেরি করছেন অর্থ পরিশোধে। এ কারণে রপ্তানির নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয় আসছে না।

যদিও রপ্তানি আয়ের তথ্য নিয়ে সরকারেরই দুই সংস্থার পরিসংখ্যানে গরমিল বা ভিন্নতা কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাণিজ্যে সুশাসন নিশ্চিতের জন্য এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং চর্চায় বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচারের ঘটনা বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত। বাংলাদেশেও এ ধরনের ঘটনা নিয়মিতই ঘটে। তাছাড়া বর্তমান ডলার সংকট ও বৈদেশিক মুদ্রায় রিজার্ভের সুরক্ষায় সরকারি সংস্থার পরিসংখ্যানগত পার্থক্য দূর হওয়া প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রপ্তানিকারক সম্প্রতি জানান, ‘যখন এক্সপোর্ট অর্ডারটা পাচ্ছি, তখন একটা ভ্যালু থাকে। আবার যখন পণ্য জাহাজীকরণ করি, তখন আরেকটা ভ্যালু হতে পারে। এটা মানতেই হবে। ব্যবসা করতে গেলে কখনও কম পাঠাতে হয়, কখনও বেশি। পেমেন্টের সময় অনেক ক্ষেত্রে ডিসকাউন্ট নিতে হয়। অনেক সময় ক্রেতার খোঁজও পাওয়া যায় না। সবগুলোরই প্রভাব রয়েছে রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে। তবে সরকারি সংস্থাগুলোর উচিত হিসাব সমন্বয় করে নেয়া।’ সূত্র : শেয়ার বিজ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

৯ মাসে গায়েব রপ্তানির সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার!

প্রকাশের সময় : ১২:৫৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪

রপ্তানির মাধ্যমে দেশ থেকে পণ্য যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু অর্থ আসছে না ফেরত। এতে দেশের রপ্তানি আয়ে প্রতি অর্থবছর বড় ধরনের পার্থক্য দেখা দিচ্ছে। কয়েক বছর ধরে এ পার্থক্য বেড়েই চলেছে। চলতি অর্থবছর প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) এ পার্থক্য ছিল সাড়ে আট বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। তবে ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) এ পার্থক্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। অথচ গত অর্থবছর রপ্তানি আয়ে পার্থক্য ছিল প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার।

ইপিবির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছর প্রথম ৯ মাসে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৪৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এ সময় রপ্তানি আয় দেশে এসেছে ২৮ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ৯ মাসে রপ্তানি আয়ে পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা ধরলে রপ্তানি আয়ে পার্থক্যের পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ৬০ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ পাঁচটি পদ্মা সেতুর নির্মাণব্যয়ের সমান অর্থ ৯ মাসে দেশে আসেনি।

দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছর জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে রপ্তানি আয়ে সবচেয়ে বেশি পার্থক্য ছিল তৈরি পোশাক খাতে। ইপিবি বলছে, চলতি অর্থবছর প্রথম ৯ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানি আয় ২১ দশমিক ০১ বিলিয়ন ডলার এবং ওভেন ১৬ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছর প্রথম ৯ মাসে তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানি আয় ১৩ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার এবং ওভেন ১১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার।

এ হিসাবে তৈরি পোশাক খাতেই ১২ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার ৯ মাসে দেশে আসেনি। এর মধ্যে নিট খাতে আসেনি সাত দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার ও ওভেন খাতে চার দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরও তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয় দেশে না আসার পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। ইপিবির হিসাবে গত অর্থবছর ৪৬ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে গত অর্থবছরে ৩৬ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার দেশে এসেছে। তার মানে গত অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানির ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ গত জুন পর্যন্ত দেশে আসেনি।

ইপিবির হিসাবে ২০২২-২৩ অর্থবছর বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত অর্থবছর পণ্য রপ্তানি বাবদ পাওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ৪৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ইপিবির হিসাবের চেয়ে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার কম রপ্তানি আয় দেশে আসে ওই অর্থবছর।

এর আগের বছরগুলোয় রপ্তানি আয়ের পার্থক্য থাকলেও ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে তা বাড়ছে। এজন্য বৈশ্বিক মন্দা ও ক্রেতাদের অর্থ পরিশোধে বিলম্বকে মূলত দায়ী করা হচ্ছে। ইপিবির হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছর দেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয় ৫২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলারের। তবে ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি বাবদ প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ ছিল ৪৩ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ওই অর্থবছর হিসাবে তারতম্য ছিল প্রায় সাড়ে আট বিলিয়ন ডলার।

এর আগের (২০২০-২১) অর্থবছর ইপিবির হিসাবে দেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয় ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলারের। তবে ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি বাবদ প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ ছিল ৩৩ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ওই অর্থবছর হিসাবে পার্থক্য ছিল চার দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছর ইপিবির হিসাবে দেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয় ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারের। তবে ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি বাবদ প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ওই অর্থবছর হিসাবে পার্থক্য ছিল তিন দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এ প্রসঙ্গে শেয়ার বিজকে বলেন, রপ্তানি করে যে অর্থ আসে সেটিকেই প্রকৃত রপ্তানি আয় ধরা উচিত। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বেশি গ্রহণযোগ্য। ইপিবি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানের পার্থক্যের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ক্রেতারা অনেক দেরি করে আমদানি করা পণ্যের অর্থ পরিশোধ করছেন। স্টক বেড়ে যাওয়া ও বিক্রি কমে যাওয়ার কারণে তারা দেরি করছেন অর্থ পরিশোধে। এ কারণে রপ্তানির নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয় আসছে না।

যদিও রপ্তানি আয়ের তথ্য নিয়ে সরকারেরই দুই সংস্থার পরিসংখ্যানে গরমিল বা ভিন্নতা কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাণিজ্যে সুশাসন নিশ্চিতের জন্য এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং চর্চায় বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচারের ঘটনা বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত। বাংলাদেশেও এ ধরনের ঘটনা নিয়মিতই ঘটে। তাছাড়া বর্তমান ডলার সংকট ও বৈদেশিক মুদ্রায় রিজার্ভের সুরক্ষায় সরকারি সংস্থার পরিসংখ্যানগত পার্থক্য দূর হওয়া প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রপ্তানিকারক সম্প্রতি জানান, ‘যখন এক্সপোর্ট অর্ডারটা পাচ্ছি, তখন একটা ভ্যালু থাকে। আবার যখন পণ্য জাহাজীকরণ করি, তখন আরেকটা ভ্যালু হতে পারে। এটা মানতেই হবে। ব্যবসা করতে গেলে কখনও কম পাঠাতে হয়, কখনও বেশি। পেমেন্টের সময় অনেক ক্ষেত্রে ডিসকাউন্ট নিতে হয়। অনেক সময় ক্রেতার খোঁজও পাওয়া যায় না। সবগুলোরই প্রভাব রয়েছে রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে। তবে সরকারি সংস্থাগুলোর উচিত হিসাব সমন্বয় করে নেয়া।’ সূত্র : শেয়ার বিজ