নিউইয়র্ক ০৭:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার শীর্ষ দশে বাংলাদেশ

হককথা ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০১:০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪
  • / ৯৩ বার পঠিত

প্রথমবারের মতো বিশ্বের দীর্ঘমেয়াদি খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সংকটে থাকা শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় নাম এসেছে বাংলাদেশের। তালিকায় অষ্টমস্থানে রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। এছাড়া তালিকার প্রথম স্থানে রয়েছে কঙ্গো, দ্বিতীয় নাইজেরিয়া, তৃতীয় সুদান, চতুর্থ আফগানিস্তান, পঞ্চম ইথিওপিয়া, ষষ্ঠ ইয়েমেন, সপ্তম সিরিয়া, অষ্টম বাংলাদেশ, নবম পাকিস্তান ও দশম মিয়ানমার। ‘গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অ্যাগেইনস্ট ফুড ক্রাইসিস’ নামের সংগঠন ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

শুক্রবার (৩১ মে) জার্মানির বন থেকে প্রকাশিত বৈশ্বিক খাদ্যসংকট প্রতিবেদন বা গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস ২০২৪-এ এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
২০২৩ সালের পরিস্থিতি বিশ্লেষণকে গুরুত্ব দিয়ে ওই তালিকা করা হয়েছে। অবশ্য এই প্রতিবেদনের কোনো কোনো সূচকে ২০২৪ সালের বিভিন্ন দেশের তুলনামূলক তথ্য থাকলেও বাংলাদেশ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত না পাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বৈশ্বিক খাদ্যসংকট প্রতিবেদনে দীর্ঘমেয়াদি খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সংকটে থাকা সূচকে শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকার অষ্টম স্থানে নাম দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের। এই সূচকের সারসক্ষেপে বলা হয়েছে, ৫৯টি দেশের প্রায় ১৭৬ মিলিয়ন মানুষ বা মোট জনসংখ্যার ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ দীর্ঘমেয়াদি তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। যাদের মধ্য কিছু মানুষের জরুরি মানবিক সহায়তা প্রয়োজন হয়।

প্রতিবেদনে সূচকের নানা ধরনের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়, তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় অবনতি হয়েছে তুলনামূলক ১২টি দেশে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রয়োজন সুদানে। ১৭টি দেশে খাদ্যনিরাপত্তা তুলনামূলক উন্নত হয়েছে। এর মধ্যে ২০২২ ও ২০২৩ তুলনামূলক পার্থক্যে ৭ দশমিক ২ মিলিয়ন কম দেখা যায়। তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়া বেশিসংখ্যক ভুক্তভোগী ৩৯টি দেশের ৩৬ মিলিয়নের বেশি মানুষ। যাদের জরুরি অবস্থার সম্মুখীন থাকা এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সুদান এবং আফগানিস্তানের। ৪১টি দেশে প্রায় ১৬৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন মানুষ কোনো না কোনোভাবে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। অন্যদিকে ৪০টি দেশে প্রায় ২৯২ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছে।

প্রতিবেদনের ২০২৪-এর আউটলুকে বলা হয়, বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ বা ৪০ দশমিক ৫ মিলিয়ন মানুষ ২০২৪ সালে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে আছে। এর মধ্যে উচ্চ মাত্রার ঝুঁকিকে আছে আফগানিস্তান, মায়ানমার ও পাকিস্তানের ৮ দশমিক ২ শতাংশ। বিশেষ করে জ্বালানি এবং সারের উচ্চ খরচ, মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও সাপ্লাই চেইনসহ উচ্চ খাদ্যমূল্য, মুদ্রাস্ফীতি ভুক্তভোগী মানুষের খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি বর্ষা থেকে বন্যা, চরম আবহাওয়া ও ঘূর্ণিঝড় একটি বহুবর্ষজীবী উদ্বেগ। এ ছাড়া সংঘর্ষের আশঙ্কা মায়ানমার বা আফগানিস্তানে বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে। মায়ানমারে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে চলতি বছরের জুন-আগস্ট মাসে। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থা আশানুরূপ উন্নতি হতে পারে।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত না পাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য চলতি বছরের সম্ভাব্য ঝুঁকি নিরূপণ করা যায়নি। তবে দেশের জন্য ২০২৪ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ার পূর্বাভাস, কম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের কারণ এবং আমদানি নিষেধাজ্ঞা বেসরকারি বিনিয়োগকে প্রভাবিত করতে পারে। এ ছাড়া দেশের ২০ শতাংশের বেশি জনসংখ্যা দীর্ঘস্থায়ী খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা রয়েছে বলে একাধিক সংস্থার তথ্য রয়েছে। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার শীর্ষ দশে বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : ০১:০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪

প্রথমবারের মতো বিশ্বের দীর্ঘমেয়াদি খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সংকটে থাকা শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় নাম এসেছে বাংলাদেশের। তালিকায় অষ্টমস্থানে রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। এছাড়া তালিকার প্রথম স্থানে রয়েছে কঙ্গো, দ্বিতীয় নাইজেরিয়া, তৃতীয় সুদান, চতুর্থ আফগানিস্তান, পঞ্চম ইথিওপিয়া, ষষ্ঠ ইয়েমেন, সপ্তম সিরিয়া, অষ্টম বাংলাদেশ, নবম পাকিস্তান ও দশম মিয়ানমার। ‘গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অ্যাগেইনস্ট ফুড ক্রাইসিস’ নামের সংগঠন ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

শুক্রবার (৩১ মে) জার্মানির বন থেকে প্রকাশিত বৈশ্বিক খাদ্যসংকট প্রতিবেদন বা গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস ২০২৪-এ এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
২০২৩ সালের পরিস্থিতি বিশ্লেষণকে গুরুত্ব দিয়ে ওই তালিকা করা হয়েছে। অবশ্য এই প্রতিবেদনের কোনো কোনো সূচকে ২০২৪ সালের বিভিন্ন দেশের তুলনামূলক তথ্য থাকলেও বাংলাদেশ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত না পাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বৈশ্বিক খাদ্যসংকট প্রতিবেদনে দীর্ঘমেয়াদি খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সংকটে থাকা সূচকে শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকার অষ্টম স্থানে নাম দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের। এই সূচকের সারসক্ষেপে বলা হয়েছে, ৫৯টি দেশের প্রায় ১৭৬ মিলিয়ন মানুষ বা মোট জনসংখ্যার ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ দীর্ঘমেয়াদি তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। যাদের মধ্য কিছু মানুষের জরুরি মানবিক সহায়তা প্রয়োজন হয়।

প্রতিবেদনে সূচকের নানা ধরনের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়, তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় অবনতি হয়েছে তুলনামূলক ১২টি দেশে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রয়োজন সুদানে। ১৭টি দেশে খাদ্যনিরাপত্তা তুলনামূলক উন্নত হয়েছে। এর মধ্যে ২০২২ ও ২০২৩ তুলনামূলক পার্থক্যে ৭ দশমিক ২ মিলিয়ন কম দেখা যায়। তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়া বেশিসংখ্যক ভুক্তভোগী ৩৯টি দেশের ৩৬ মিলিয়নের বেশি মানুষ। যাদের জরুরি অবস্থার সম্মুখীন থাকা এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সুদান এবং আফগানিস্তানের। ৪১টি দেশে প্রায় ১৬৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন মানুষ কোনো না কোনোভাবে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। অন্যদিকে ৪০টি দেশে প্রায় ২৯২ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছে।

প্রতিবেদনের ২০২৪-এর আউটলুকে বলা হয়, বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ বা ৪০ দশমিক ৫ মিলিয়ন মানুষ ২০২৪ সালে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে আছে। এর মধ্যে উচ্চ মাত্রার ঝুঁকিকে আছে আফগানিস্তান, মায়ানমার ও পাকিস্তানের ৮ দশমিক ২ শতাংশ। বিশেষ করে জ্বালানি এবং সারের উচ্চ খরচ, মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও সাপ্লাই চেইনসহ উচ্চ খাদ্যমূল্য, মুদ্রাস্ফীতি ভুক্তভোগী মানুষের খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি বর্ষা থেকে বন্যা, চরম আবহাওয়া ও ঘূর্ণিঝড় একটি বহুবর্ষজীবী উদ্বেগ। এ ছাড়া সংঘর্ষের আশঙ্কা মায়ানমার বা আফগানিস্তানে বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে। মায়ানমারে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে চলতি বছরের জুন-আগস্ট মাসে। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থা আশানুরূপ উন্নতি হতে পারে।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত না পাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য চলতি বছরের সম্ভাব্য ঝুঁকি নিরূপণ করা যায়নি। তবে দেশের জন্য ২০২৪ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ার পূর্বাভাস, কম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের কারণ এবং আমদানি নিষেধাজ্ঞা বেসরকারি বিনিয়োগকে প্রভাবিত করতে পারে। এ ছাড়া দেশের ২০ শতাংশের বেশি জনসংখ্যা দীর্ঘস্থায়ী খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা রয়েছে বলে একাধিক সংস্থার তথ্য রয়েছে। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল