নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো: নাজমুল হুদা প্রথমবারের মতো বাংলা সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। সভায় তিনি জানান, প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। ১৬টি দেশে খুব শিগগিরই এর কার্যক্রম শুরু হবে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের জন্য এনআইডি চালু হতে সময় লাগবে। তবে এ নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ঠিক কবে থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীরা এখান থেকে এনআইডি করার সুবিধা পাবেন, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। তিনি জানান, স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় এবং প্রবাসীদের সুবিধার জন্য কনস্যুলেট ভবন স্থানান্তর করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে আগামী সেপ্টেম্বেরের মধ্যেই নতুণ কনস্যুলেটে প্রবাসীরা সেবা পাবেন।

গত ১৪ মে মঙ্গলবার অপরাহ্নে কনসাল জেনারেলের কার্যালয়ে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে ডেপুটি কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান, ফার্স্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট) প্রসূন কুমার চক্রবর্তী, কাউন্সিলর অ্যান্ড হেড অব চ্যান্সেরি ইশরাত জাহান ও থার্ড সেক্রেটারি আসিব আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে কনসাল জেনারেল মো: নাজমুল হুদা সবাইকে স্বাগত জানিয়ে কনস্যুলেট অফিসের বিভিন্ন সেবা, সীমাবদ্ধতা নিয়ে তিনি খোলামেলা কথা বলেন। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে তার অফিস থেকে কনস্যুলার সেবা দেয়া হয়ে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতার ভাবাদর্শ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনকে প্রাধান্য দিয়ে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের চমৎকার সম্পর্কের পেছনে প্রবাসীরাই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে আসছেন।

কনস্যুলেট সেবা সম্পর্কে কনসাল জেনারেল বলেন, অনেক ক্ষেত্রে প্রবাসীরা অপ্রস্তুত হয়ে সেবা গ্রহণের জন্য আসেন। এর ফলে জটিলতা দেখা দেয়। তিনি সবাইকে সেবা গ্রহণের জন্য আসার আগে একবার ওয়েবসাইট দেখে আসার জন্য অনুরোধ করেন। একমাত্র পাসপোর্ট ছাড়া অন্যসব কনস্যুলেট সেবা একদিনেই সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। কনসাল জেনারেল জানান, বর্তমান অফিসে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে স্থান সংকুলান ও গাড়ি পার্কিং। গাড়ির পার্কিং খুঁজতে খুঁজতে অনেকেই তাদের সিরিয়ালের নির্দিষ্ট সময় হারিয়ে ফেলেন। ভেতরে বসার জায়গা না পেয়ে অনেকেই দাঁড়িয়ে থাকেন। তাই খুব শিগগির আমরা বর্তমান অফিসের অদূরে নতুন ভবনে কনস্যুলেট অফিস স্থানান্তরিত করব। আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নতুন অফিসে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন ভবনের লিজ গ্রহণ এখনো প্রক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান। কনসাল জেনারেল এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ বিষয়গুলো জনগণের সামনে, বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

গভায় সম্পাদক ও সাংবাদিকদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টিভির সিইও আবু তাহের, সাপ্তাহিক প্রথম আলো’র সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী, সাপ্তাহিক নবযুগ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন সাগর, সিনিয়র সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরন, ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, সনজিবন সরকার, ফটো সাংবাদিক নিহার সিদ্দিকী প্রমুখ। নিউইয়র্কের বাংলা সংবাদমাধ্যমের শীর্ষস্থানীয়রা এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সাংবাদিকরা নিউইয়র্কে সোনালী ব্যাংক কিংবা বাংলাদেশের যে কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের একটি ডেস্ক বসিয়ে মানি অর্ডারসহ কনস্যুলেট সংক্রান্ত সব লেনদেন করার পরামর্শ দেন। এর বিকল্প হিসেবে লেন-দেনের জন্য ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড গ্রহণেরও পরামর্শ দেন তারা।