নিউইয়র্ক ০১:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834
ঘূর্ণিঝড়ে নিহত ৫২৩, আহত ৩০ হাজার

টাঙ্গাইলবাসীর আতঙ্কের ২৮ বছর আজ

হককথা ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১১:১৭:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪
  • / ১৮৫ বার পঠিত

সংগৃহীত ছবি

১৯৯৬ সালের আজকের দিনে প্রায় পাঁচ মিনিট স্থায়ী টর্নেডোর ধ্বংসাত্মক তাণ্ডবলীলায় টাঙ্গাইলের ৫২৩ জন নারী-পুরুষ নিহত ও ৩০ হাজার আহত হয়। ধ্বংস হয় ৮৫ হাজার ঘরবাড়ি, ৮৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ১৭টি মসজিদ ও ১৪টি মন্দির। সেদিনের কথা মনে করে এখনো আতঙ্কে শিউরে ওঠে স্থানীয় মানুষজন। টর্নেডোয় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের স্মরণে নিজ নিজ এলাকায় স্থানীয় সামাজিক সংগঠনগুলোর উদ্যোগে প্রতিবছর দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এই দিনটিকে স্মরণ করে কালিহাতীর রামপুর-কুকরাইল গ্রামের স্বজন হারানো পরিবারগুলো প্রতিবছর কাঙালিভোজ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে থাকে। মসজিদে মসজিদে করা হয় বিশেষ মোনাজাত। এবারও দিনব্যাপী অনুরূপ আয়োজন করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালের ১৩ মে ছিল সোমবার।

বিকেল ৪টা ১৭ মিনিটের দিকে আকস্মিকভাবে জেলার গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের বেলুয়া গ্রাম থেকে শুরু হওয়া প্রায় পাঁচ মিনিট স্থায়ী প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় (টর্নেডো) আলমনগর ইউনিয়ন হয়ে মির্জাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম নুঠুরচর গ্রামে হানা দেয়। মাত্র দুই মিনিটের ছোবলে গোপালপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১৬টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। নিহত হয় ১০৪ নারী-পুরুষ। এ ছাড়া চার হাজারেরও বেশি গ্রামবাসী আহত হয়।

ঝড়ে ২০০ একর বোরো জমির পাকা ধান নষ্ট হয়ে যায়। ১০ হাজার গৃহপালিত পশু-পাখি মারা যায়। পরে টর্নেডো কালিহাতীতে হানা দেয়। সেদিন বিকেলে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে মুহূর্তের মধ্যে গোপালপুর, কালিহাতী, বাসাইল, ঘাটাইল ও সখিপুর উপজেলার ৪০টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। অনেকের ঘরের চালা উড়ে যাওয়ায় গোলার ধান ঝড়ে অদৃশ্য হতে দেখা যায়। অনেক ঘরবাড়ি, গাছপালা ও গবাদিপশু নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। বৈদ্যুতিক খুঁটি ও নলকূপের ওপরের অংশ দোতলা দালানের ছাদ পর্যন্ত উঠে যায়।

ওই দিন বাসাইলের মিরিকপুরে ধান কাটার মৌসুম থাকায় উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার ধানকাটা শ্রমিক সমবেত হয়েছিলেন এ অঞ্চলে। ঝড় থেকে রক্ষা পেতে বহু শ্রমিক মিরিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে উত্তর দিক থেকে ধেয়ে আসা টর্নেডোর ছোবলে স্কুল ভবনটি বিধ্বস্ত হওয়ায় তাঁরা সেখানেই চাপা পড়ে মারা যান। গ্রামের বহু লোক নিখোঁজ হয়। পর দিন তাদের মৃতদেহের খোঁজ মেলে পাশের নদী, পুকুর, খাল-বিল ও জলাশয়ে।

মৃত মানুষ, গবাদিপশু ও মাছের দুর্গন্ধে বাসাইলের বাতাস সেদিন ভারী হয়ে গিয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ে মিরিকপুর ছাড়াও ওই উপজেলার বর্ণীকিশোরী, হান্দুলিপাড়া, কলিয়া, কাউলজানী, খাটরা, ফুলকী, বাদিয়াজান ও সুন্না গ্রামের অংশবিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সূত্র : কালের কণ্ঠ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ঘূর্ণিঝড়ে নিহত ৫২৩, আহত ৩০ হাজার

টাঙ্গাইলবাসীর আতঙ্কের ২৮ বছর আজ

প্রকাশের সময় : ১১:১৭:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪

১৯৯৬ সালের আজকের দিনে প্রায় পাঁচ মিনিট স্থায়ী টর্নেডোর ধ্বংসাত্মক তাণ্ডবলীলায় টাঙ্গাইলের ৫২৩ জন নারী-পুরুষ নিহত ও ৩০ হাজার আহত হয়। ধ্বংস হয় ৮৫ হাজার ঘরবাড়ি, ৮৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ১৭টি মসজিদ ও ১৪টি মন্দির। সেদিনের কথা মনে করে এখনো আতঙ্কে শিউরে ওঠে স্থানীয় মানুষজন। টর্নেডোয় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের স্মরণে নিজ নিজ এলাকায় স্থানীয় সামাজিক সংগঠনগুলোর উদ্যোগে প্রতিবছর দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এই দিনটিকে স্মরণ করে কালিহাতীর রামপুর-কুকরাইল গ্রামের স্বজন হারানো পরিবারগুলো প্রতিবছর কাঙালিভোজ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে থাকে। মসজিদে মসজিদে করা হয় বিশেষ মোনাজাত। এবারও দিনব্যাপী অনুরূপ আয়োজন করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালের ১৩ মে ছিল সোমবার।

বিকেল ৪টা ১৭ মিনিটের দিকে আকস্মিকভাবে জেলার গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের বেলুয়া গ্রাম থেকে শুরু হওয়া প্রায় পাঁচ মিনিট স্থায়ী প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় (টর্নেডো) আলমনগর ইউনিয়ন হয়ে মির্জাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম নুঠুরচর গ্রামে হানা দেয়। মাত্র দুই মিনিটের ছোবলে গোপালপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১৬টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। নিহত হয় ১০৪ নারী-পুরুষ। এ ছাড়া চার হাজারেরও বেশি গ্রামবাসী আহত হয়।

ঝড়ে ২০০ একর বোরো জমির পাকা ধান নষ্ট হয়ে যায়। ১০ হাজার গৃহপালিত পশু-পাখি মারা যায়। পরে টর্নেডো কালিহাতীতে হানা দেয়। সেদিন বিকেলে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে মুহূর্তের মধ্যে গোপালপুর, কালিহাতী, বাসাইল, ঘাটাইল ও সখিপুর উপজেলার ৪০টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। অনেকের ঘরের চালা উড়ে যাওয়ায় গোলার ধান ঝড়ে অদৃশ্য হতে দেখা যায়। অনেক ঘরবাড়ি, গাছপালা ও গবাদিপশু নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। বৈদ্যুতিক খুঁটি ও নলকূপের ওপরের অংশ দোতলা দালানের ছাদ পর্যন্ত উঠে যায়।

ওই দিন বাসাইলের মিরিকপুরে ধান কাটার মৌসুম থাকায় উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার ধানকাটা শ্রমিক সমবেত হয়েছিলেন এ অঞ্চলে। ঝড় থেকে রক্ষা পেতে বহু শ্রমিক মিরিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে উত্তর দিক থেকে ধেয়ে আসা টর্নেডোর ছোবলে স্কুল ভবনটি বিধ্বস্ত হওয়ায় তাঁরা সেখানেই চাপা পড়ে মারা যান। গ্রামের বহু লোক নিখোঁজ হয়। পর দিন তাদের মৃতদেহের খোঁজ মেলে পাশের নদী, পুকুর, খাল-বিল ও জলাশয়ে।

মৃত মানুষ, গবাদিপশু ও মাছের দুর্গন্ধে বাসাইলের বাতাস সেদিন ভারী হয়ে গিয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ে মিরিকপুর ছাড়াও ওই উপজেলার বর্ণীকিশোরী, হান্দুলিপাড়া, কলিয়া, কাউলজানী, খাটরা, ফুলকী, বাদিয়াজান ও সুন্না গ্রামের অংশবিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সূত্র : কালের কণ্ঠ