নিউইয়র্ক ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ভিতরে ভিতরে ভয়াবহ পরিকল্পনা : ট্রাম্প নির্বাচিত হলে ২০ মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসী ডিপোর্টেশন!

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৪৩:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০২৪
  • / ৩২৬ বার পঠিত

আমেরিকার ইতিহাসে সবচাইতে বড় ধরনের ডিপোর্টেশন পরিকল্পনার করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হলে তার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি মাঠে নামবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট টাইম ম্যাগাজিনের সাথে এক সাক্ষাতকারে তার এই পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন অবৈধদের বহিষ্কারে তিনি স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ন্যাশনাল গার্ড এবং সামরিক বাহিনীকে নিয়োজিত করবেন। ১৯৫৪ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট আইজেন হাওয়াররের ন্যায় ‘অপারেশন ওয়েটব্যাক’ স্টাইলে তিনি অবৈধদের বহিস্কার করবেন। এতদ সংক্রান্ত খবরটি ‘ইনসাইড ট্রাম্প’স প্ল্যান টু ডিপোর্ট নেয়ারলি ২০ মিলিয়ন ইললীগ্যাল মাইগ্রেন্টস ফ্রম দ্য ইউএস’ শিরোনামে নিউ ইয়র্ক পোস্ট গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য যে, আইজেন হাওয়ার সে সময় ১০ লাখেরও কাজপত্রহীন অভিবাসীকে সে সময় বহিস্কার করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানরত প্রায় ২০ মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে আটক করতে এবং ডিপোর্টেশনের জন্য কী ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন হবে তার বিস্তারিত ট্রাম্প ক্যাম্পেইন থেকে এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সাবেক ইমিগ্রেশন ও কাস্টম কর্মকর্তারা বলেছেন, এমন একটি অপারেশন পরিচালনা করার জন্য ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের ব্যাপক সম্প্রসারণ, ষ্টেট ডিপার্টমেন্টের সাথে সহযোগিতা এবং বড় ধরনের তহবিল বৃদ্ধির প্রয়োজন হবে।

উল্লেখ্য যে, বাইডেন প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পের এই কর্মসূচী অমুলক নয় বলে দাবী করেছে বিভিন্ন রক্ষনশীল থিংকট্যাংক এবং আইন প্রনেতাদের একটি অংশ।

ইমিগ্র্যাশন নিয়ে গবেষণা সংস্থা নাম্বার অব ইউএস এর পরিচালক এরিক রোয়ার্ক বলেছেন, ১৫ থেকে ২০ মিলিয়ন বিদেশীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সেন্টাস ব্যারোর হিসেবেই আছে ১ মিলিয়নের মত।ট্রাম্পের সময়ে কর্মরত যুক্তরাষ্ট্র ইমিগ্র্যাশন ও কাস্টমস এর সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টম হোম্যান বলেছেন, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ব্যক্তিদের বহিস্কারে কোন অসুবিধা নেই। তাদের অবস্থান সম্পর্কে অবহিত হওয়ার সব ধরনের অবকাঠামো এবং প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে। তবে এটাকে কাজ লাগাতে যে ধরনের রিসোর্স প্রয়োজন সেটা প্রশাসনের আওতাধীন হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, এর অনেকটাই নির্ভর করবে কংগ্রেসের উপর। এজন্য প্রয়োজন হবে অফিসার, ডিটেনশন সেন্টার, বেড, পরিবহন এবং বিপুল সংখ্যক ফ্লাইট। যাদের প্লেনে তুলে পাঠানো সম্ভব হবে তাদের স্ব স্ব দেশে। টম হোম্যান বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার হুমকিকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্যই অপরাধী অভিবাসী অপরাধী অভিবাসীদের দেশের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। তবে আমি বলব কেউই আমাদের রাডারের বাইরে নন। এই দেশে অবৈধভাবে থাকলে তাকে বের করা খুবই সহজ।

দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের সাথে কাজ করবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে টম হোম্যান বলেন, আমি অবশ্যই বিবেচনা করবো সে প্রস্তাব।

ট্রাম্পের অধীনে আইসিই-এর প্রাক্তন চিফ অফ স্টাফ জন ফিয়ার বলেছেন, ‘কোন সন্দেহ নেই যে অফিসার, এজেন্ট এবং ডিটেনশন সেন্টারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য বাজেট বরাদ্দে আমরা অনুরোধ জানাবো কংগ্রেসকে। তিনি বলেন, এই প্রচেষ্টার মধ্যে সম্ভবত সিটিজুড়ে অভিযান অন্তর্ভুক্ত থাকবে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশ থেকে আইন শৃংখলা বাহিনীকে গড়ো করা হবে অভিযানের সাইট তদন্ত ও পরিচালনা করার জন্য। তিনি বলেন, সরকারের প্রতিটি বিভাগ অভিবাসনের সাথে যাদের সম্পর্ক রয়েছে তাদের কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। স্বাস্থ্য ও মানব সেবা থেকে শুরু করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ইউএস সিটিজেনশিপ এবং ইমিগ্র্যাশন সার্ভিস অবৈধ অভিবাসন কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে।

ফিয়ার আরও বলেন, আমি নিশ্চিত যে ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করলে আমি দায়িত্ব পালন করবো। তবে তিনি কী ভূমিকা পালন করতে পারেন তা খোলাসা করেননি।

বিশেষ এনফোর্সমেন্ট অপারেশনে তহবিল বৃদ্ধিতে ডেমোক্রেট সংখ্যাগরিস্ট কংগ্রেসের অনিচ্ছা হলে অভিবাসীরে দেশে পাঠাতে ট্রাম্প প্রশাসন এই কর্মসূচী বাস্তবায়নে বাধার সম্মুখীন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ফিয়ার বলেন, যে সব দেশ তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে গড়িমসি বা অস্বীকার করবে সেই দেশ সমূহের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করতে অভিবাসন এবং জাতীয়তা আইনের (আইএনএ) ধারা ২৪৩ (ডি) ব্যবহার করা যেতে পারে। যখন কোনো দেশ জানবে যে, পারবে যে, তাদের বাসিন্দাদের ফিরিয়ে না নিলে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না, তখন সেই দেশগুলো এক্ষত্রে দ্রুত সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসবে।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ভিতরে ভিতরে ভয়াবহ পরিকল্পনা : ট্রাম্প নির্বাচিত হলে ২০ মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসী ডিপোর্টেশন!

প্রকাশের সময় : ০৫:৪৩:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০২৪

আমেরিকার ইতিহাসে সবচাইতে বড় ধরনের ডিপোর্টেশন পরিকল্পনার করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হলে তার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি মাঠে নামবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট টাইম ম্যাগাজিনের সাথে এক সাক্ষাতকারে তার এই পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন অবৈধদের বহিষ্কারে তিনি স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ন্যাশনাল গার্ড এবং সামরিক বাহিনীকে নিয়োজিত করবেন। ১৯৫৪ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট আইজেন হাওয়াররের ন্যায় ‘অপারেশন ওয়েটব্যাক’ স্টাইলে তিনি অবৈধদের বহিস্কার করবেন। এতদ সংক্রান্ত খবরটি ‘ইনসাইড ট্রাম্প’স প্ল্যান টু ডিপোর্ট নেয়ারলি ২০ মিলিয়ন ইললীগ্যাল মাইগ্রেন্টস ফ্রম দ্য ইউএস’ শিরোনামে নিউ ইয়র্ক পোস্ট গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য যে, আইজেন হাওয়ার সে সময় ১০ লাখেরও কাজপত্রহীন অভিবাসীকে সে সময় বহিস্কার করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানরত প্রায় ২০ মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে আটক করতে এবং ডিপোর্টেশনের জন্য কী ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন হবে তার বিস্তারিত ট্রাম্প ক্যাম্পেইন থেকে এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সাবেক ইমিগ্রেশন ও কাস্টম কর্মকর্তারা বলেছেন, এমন একটি অপারেশন পরিচালনা করার জন্য ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের ব্যাপক সম্প্রসারণ, ষ্টেট ডিপার্টমেন্টের সাথে সহযোগিতা এবং বড় ধরনের তহবিল বৃদ্ধির প্রয়োজন হবে।

উল্লেখ্য যে, বাইডেন প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পের এই কর্মসূচী অমুলক নয় বলে দাবী করেছে বিভিন্ন রক্ষনশীল থিংকট্যাংক এবং আইন প্রনেতাদের একটি অংশ।

ইমিগ্র্যাশন নিয়ে গবেষণা সংস্থা নাম্বার অব ইউএস এর পরিচালক এরিক রোয়ার্ক বলেছেন, ১৫ থেকে ২০ মিলিয়ন বিদেশীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সেন্টাস ব্যারোর হিসেবেই আছে ১ মিলিয়নের মত।ট্রাম্পের সময়ে কর্মরত যুক্তরাষ্ট্র ইমিগ্র্যাশন ও কাস্টমস এর সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টম হোম্যান বলেছেন, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ব্যক্তিদের বহিস্কারে কোন অসুবিধা নেই। তাদের অবস্থান সম্পর্কে অবহিত হওয়ার সব ধরনের অবকাঠামো এবং প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে। তবে এটাকে কাজ লাগাতে যে ধরনের রিসোর্স প্রয়োজন সেটা প্রশাসনের আওতাধীন হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, এর অনেকটাই নির্ভর করবে কংগ্রেসের উপর। এজন্য প্রয়োজন হবে অফিসার, ডিটেনশন সেন্টার, বেড, পরিবহন এবং বিপুল সংখ্যক ফ্লাইট। যাদের প্লেনে তুলে পাঠানো সম্ভব হবে তাদের স্ব স্ব দেশে। টম হোম্যান বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার হুমকিকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্যই অপরাধী অভিবাসী অপরাধী অভিবাসীদের দেশের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। তবে আমি বলব কেউই আমাদের রাডারের বাইরে নন। এই দেশে অবৈধভাবে থাকলে তাকে বের করা খুবই সহজ।

দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের সাথে কাজ করবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে টম হোম্যান বলেন, আমি অবশ্যই বিবেচনা করবো সে প্রস্তাব।

ট্রাম্পের অধীনে আইসিই-এর প্রাক্তন চিফ অফ স্টাফ জন ফিয়ার বলেছেন, ‘কোন সন্দেহ নেই যে অফিসার, এজেন্ট এবং ডিটেনশন সেন্টারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য বাজেট বরাদ্দে আমরা অনুরোধ জানাবো কংগ্রেসকে। তিনি বলেন, এই প্রচেষ্টার মধ্যে সম্ভবত সিটিজুড়ে অভিযান অন্তর্ভুক্ত থাকবে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশ থেকে আইন শৃংখলা বাহিনীকে গড়ো করা হবে অভিযানের সাইট তদন্ত ও পরিচালনা করার জন্য। তিনি বলেন, সরকারের প্রতিটি বিভাগ অভিবাসনের সাথে যাদের সম্পর্ক রয়েছে তাদের কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। স্বাস্থ্য ও মানব সেবা থেকে শুরু করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ইউএস সিটিজেনশিপ এবং ইমিগ্র্যাশন সার্ভিস অবৈধ অভিবাসন কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে।

ফিয়ার আরও বলেন, আমি নিশ্চিত যে ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করলে আমি দায়িত্ব পালন করবো। তবে তিনি কী ভূমিকা পালন করতে পারেন তা খোলাসা করেননি।

বিশেষ এনফোর্সমেন্ট অপারেশনে তহবিল বৃদ্ধিতে ডেমোক্রেট সংখ্যাগরিস্ট কংগ্রেসের অনিচ্ছা হলে অভিবাসীরে দেশে পাঠাতে ট্রাম্প প্রশাসন এই কর্মসূচী বাস্তবায়নে বাধার সম্মুখীন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ফিয়ার বলেন, যে সব দেশ তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে গড়িমসি বা অস্বীকার করবে সেই দেশ সমূহের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করতে অভিবাসন এবং জাতীয়তা আইনের (আইএনএ) ধারা ২৪৩ (ডি) ব্যবহার করা যেতে পারে। যখন কোনো দেশ জানবে যে, পারবে যে, তাদের বাসিন্দাদের ফিরিয়ে না নিলে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না, তখন সেই দেশগুলো এক্ষত্রে দ্রুত সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসবে।