একাত্তুরের ২৫ মার্চ আমাদের বাধ্য করেছিল ২৬ মার্চ জন্ম দিতে : আবু জাফর মাহমুদ
- প্রকাশের সময় : ০৩:৫০:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪
- / ৬০ বার পঠিত
পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এ জেড এম গ্রুপ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জ্যাকসন হাইটস এর শেফস মহল রেস্তোরায় ২৮ মার্চ বৃহবার এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের স্বাগত জানান এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন আবু জাফর মাহমুদ। এর আগে তিনি সম্পাদক ও সাংবাদিকদের হাতে ইংরেজি সাময়িকী ‘দ্য বে ওয়েভ’ ও বাংলা সাময়িকী ‘জয় বাংলাদেশ’র দ্বিতীয় সংখ্যা তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক ঠিকানা’র সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি এম এম শাহীন, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, বাংলা পত্রিকা সম্পাদক ও টাইম টিভি’র সিইও আবু তাহের, এমসি টিভি’র সত্ত্বাধিকারী কাজী শামসুল হক, লেখক-সাংবাদিক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক মিজানুর রহমান, চ্যানেল আই-এর ব্যুরো প্রধান রাশেদ আহমেদ এবং নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সাপ্তাহিক হককথা সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম মজুমদার, চ্যানেল টিটির সত্ত্বাধিকারী শিবলী চৌধুরী কায়েস, সাংবাদিক ইমরান আনসারী, অভিক সানোয়ার রহমান, মোহাম্মদ হোসেন দিপু, ডিবিসি টিভি’র প্রতিনিধি কানু দত্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন জ্যাকসন হাইটস ইসলামিক সেন্টারের খতিব মাওলানা আব্দুস সাদিক এবং পরিচালনা করেন ‘দ্য বে ওয়েভ’ ও ‘জয় বাংলাদেশ’র নির্বাহী সম্পাদক আদিত্য শাহীন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মিয়িার সম্পাদক তাদের শুভেচ্ছা বক্তব্যে জনাব আবু জাফর মাহমুদকে কমিউনিটির অন্যতম মিডিয়া বান্ধব ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখ এবং তার ব্যতিক্রমী কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন। তারা কমিউনিটির মিডিয়াগুলোকে আরো শক্তিশালী করতে তার সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে এ জেড এম গ্রুপ থেকে প্রেরীতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়: নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠানে ইংরেজি সাময়িকী ‘দ্য বে ওয়েভ’ ও বাংলা সাময়িকী ‘জয় বাংলাদেশ’ এর দ্বিতীয় সংখ্যার প্রকাশনা উদ্বোধন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন বাংলা সংবাদপত্রের সম্পাদক, ঢাকার বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে দ্য বে ওয়েভ ও জয় বাংলাদেশ সম্পাদক আবু জাফর মাহমুদ সম্পাদক ও সাংবাদিকদের নজিরবিহীন আন্তরিকতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশী কমিউনিটির সংবাদপত্রের প্রকাশক, সম্পাদক, টেলিভিশনের সত্ত্বাধিকারী, সাংবাদিক আমরা সবাই একটি পরিবার। বহুদিন ধরে আমরা আমাদের অভিযাত্রা অব্যাহত রেখেছি। যারা অনেক আগেই এই যাত্রা শুরু করে অন্যদের জন্য পথ তৈরি করেছেন, অনুপ্রাণিত করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা এখন একই সংগ্রামে হাতে হাত ধরে এগোচ্ছি। এটিই আমাদের সমাজ শক্তি। আমাদের কমিউনিটিকে সেবা দিচ্ছি ও আমেরিকার সেবায় অংশ নিয়েছি।অনুষ্ঠানে সম্পাদক ও সাংবাদিকবৃন্দ বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদের লেখালেখিতে পেশাদারিত্ব ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার প্রশংসা করে বলেন, তিনি বহু আগেই অসাধারণ এক কলমসৈনিকের সাক্ষর রেখেছেন। নতুন দুটি পত্রিকার মাধ্যমে তিনি মানব সেবা ও জীবন সংগ্রামের এক নতুন ধারার সূচনা করলেন।
‘স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসকে এক করে দেখা যাবে না’
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ তার বক্তব্যে মহান স্বাধীনতা দিবসের কথা স্মরণ করে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস আর বিজয় দিবসকে এক করে দেখা যাবে না। দুই দিবসের বক্তব্য দুই রকম। প্রেরণা দুই রকম, ভুমিকাও দুই রকম। একাত্তুরের ২৫ মার্চ আমাদের বাধ্য করেছিল ২৬ মার্চ জন্ম দিতে। আমরা জন্মগতভাবেই ছিলাম পাকিস্তানী। পাকিস্তান আমাদের দেশ ছিল। যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমাদের ওপর আক্রমন করলো, সেই আক্রমণ ছিল যুদ্ধের আক্রমণ, ধ্বংসের আক্রমন। গোটা জাতির ওপর লক্ষ্য ঠিক রেখেই আক্রমণটা করা হয়। যাতে বাঙালী জাতিকে নির্মূল করে ফেলা যায়। এর মোকাবিলায় আমাদের সশস্ত্র শক্তির পক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। এটা কোনো রাজনীতি নয়, এটা কোনো সাহিত্য চর্চা নয়। এই যুদ্ধ ছিল বেঁচে থাকার যুদ্ধ, এই যুদ্ধ ছিলো আমাদের প্রতিরোধ যুদ্ধ। এই প্রতিরোধ যুদ্ধের ধারাবাহিকতায় মুুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো।
তিনি বলেন, প্রতিরোধ যুদ্ধটি ছিল পুরোপুরিভাবে সামরিক যুদ্ধ। রাজনীতিবিদরা তখন সিদ্ধান্তহীন ছিলেন, আমরা গোটা জাতিই তখন সিদ্ধন্তহীন ও কিংকর্তব্যবিমুঢ় ছিলাম। সেদিনের ক্যাপ্টেন রফিক ইপিআর-এ তার কমান্ডারকে হত্যা করে এসে যুদ্ধে অংশ নিলেন। তিনি তার সিনিয়র হিসেবে মেজর জিয়াউর রহমানকে খুঁজে নিয়ে চট্টগ্রামে এ কে খান সাহেবের সঙ্গে বৈঠক করে বেঙ্গল রেজিমেন্টের তরফ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা দিলেন। এর মধ্য দিয়েই আসলো আমাদের সশস্ত্র যুদ্ধের প্রেরণা।
আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমরা গর্বিত আমাদের সেই বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, পুলিশ, আনসারের এর প্রতি। সেদিন তারা আমাদের যুদ্ধের পথ রচনা করেছেন, জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে গেছেন, প্রতিরোধ যুদ্ধ সৃষ্টি করেছেন। তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।