নিউইয়র্ক ০১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনে তোলপাড়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৬:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
  • / ৩৯ বার পঠিত

বিশ্বে প্রথমবারের মতো জীবন্ত কোনো মানুষের শরীরে শূকরের একটি কিডনি প্রতিস্থাপনের সফলতার খবরে তোলপাড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। শূকরের কিডনির জিনগত পরিবর্তন এনে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টনের জেনারেল হাসপাতালের ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টারের চিকিৎসকরা গত শনিবার মানুষের শরীরে সফলভাবে বসিয়েছেন। এ ঘটনাতেই যুক্তরাষ্ট্রের সাধারন মানুষের মাঝে পড়ে যায় হইচই।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যে ব্যক্তির শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে সে কিডনি রোগে ভুগছিলেন এবং অসুখের একেবারে শেষ পর্যায়ে ছিলেন। তবে কিডনিটি তার দেহে স্থাপন করার আগে জিনগত পরিবর্তন আনা হয়েছিল। ৬২ বছর বয়সী রিক স্লেম্যানের শরীরে শনিবার চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে ওই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়।

চিকিৎসকরা জানান, তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং শীঘ্রই হাসপাতাল থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে আশা করছেন। চিকিত্সকরা বৃহস্পতিবার আরও জানান, রিক স্লেম্যানের শরীরের নতুন কিডনিটি বছরের পর বছর টিকে থাকতে পারে। তবে এটিও স্বীকার করেছেন, প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে কোনো অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অনেক অজানা বিষয় থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতেও পারে।

ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল জানিয়েছে, বিশ্বে তাঁরাই প্রথমবারের মতো শূকরের কিডনি জীবিত মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করেছে। তবে এর কয়েক বছর আগেও শূকরের একটি কিডনি একজন ‘ব্রেইন-ডেড বা ক্লিনিক্যালি ডেড’ নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। চিকিৎসকেরা ‘ব্রেইন ডেড’ ওই নারীর শরীরের বাইরে এক জোড়া বড় রক্তনালির সঙ্গে শূকরের কিডনি সংযুক্ত করে দিয়েছিলেন।

এ ছাড়াও শূকরের হৃদযন্ত্রে জিনগত পরিবর্তন এনে দুজন পুরুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিস্থাপনের কয়েক মাসের মধ্যেই ওই দুই ব্যক্তি মারা যান। রোগী রিক স্লেম্যান ম্যাসাচুসেটস ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টেশনের একজন ম্যানেজার। হাসপাতালের দেওয়া একটি লিখিত বিবৃতিতে স্লেম্যান জানান, তিনি ১১ বছর ধরে হাসপাতালের ট্রান্সপ্লান্ট প্রোগ্রামের রোগী ছিলেন। বহু বছর ধরে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত তিনি। এর আগে ২০১৮ সালে একজন মানব দাতার কাছ থেকে একটি কিডনি পেয়েছিলেন। সেই কিডনি পাঁচ বছর পর্যন্ত কাজ করলেও পরে সমস্যা দেখা দেয় এবং ২০২৩ সালে তিনি আবার ডায়ালাইসিস শুরু করেন। তিনি যখন কিডনি রোগের শেষ পর্যায়ে ছিলেন, তখন তাঁর চিকিৎসক তাকে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন।

স্লেম্যান বলেন, আমি এটাকে কেবল আমার নিজের উপকার হিসেবে দেখছি না। বরং এটা হাজার হাজার মানুষের মাঝে আশা জাগিয়েছে, যাদের বেঁচে থাকার জন্য কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন। মানুষের শরীরের ইমিউন সিস্টেম অন্য প্রাণীর টিস্যু ধ্বংস করে ফেলে। তাই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নেওয়ার আগে জিনগত পরিবর্তন এনে শূকরের জন্ম দেওয়া হয়। যাতে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মতো হয়। শূকরের শরীরের কোষে বিশেষ এক ধরনের সুগার রয়েছে। সেই সুগার ফেলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাতে আক্রান্ত না হয় সে জন্য শূকরের জিন সম্পাদনা করা হয় প্রতিস্থাপনের আগে। সূত্র : সমকাল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনে তোলপাড়

প্রকাশের সময় : ১০:৪৬:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

বিশ্বে প্রথমবারের মতো জীবন্ত কোনো মানুষের শরীরে শূকরের একটি কিডনি প্রতিস্থাপনের সফলতার খবরে তোলপাড় শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। শূকরের কিডনির জিনগত পরিবর্তন এনে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টনের জেনারেল হাসপাতালের ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টারের চিকিৎসকরা গত শনিবার মানুষের শরীরে সফলভাবে বসিয়েছেন। এ ঘটনাতেই যুক্তরাষ্ট্রের সাধারন মানুষের মাঝে পড়ে যায় হইচই।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যে ব্যক্তির শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে সে কিডনি রোগে ভুগছিলেন এবং অসুখের একেবারে শেষ পর্যায়ে ছিলেন। তবে কিডনিটি তার দেহে স্থাপন করার আগে জিনগত পরিবর্তন আনা হয়েছিল। ৬২ বছর বয়সী রিক স্লেম্যানের শরীরে শনিবার চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে ওই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়।

চিকিৎসকরা জানান, তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং শীঘ্রই হাসপাতাল থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে আশা করছেন। চিকিত্সকরা বৃহস্পতিবার আরও জানান, রিক স্লেম্যানের শরীরের নতুন কিডনিটি বছরের পর বছর টিকে থাকতে পারে। তবে এটিও স্বীকার করেছেন, প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে কোনো অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অনেক অজানা বিষয় থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতেও পারে।

ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল জানিয়েছে, বিশ্বে তাঁরাই প্রথমবারের মতো শূকরের কিডনি জীবিত মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করেছে। তবে এর কয়েক বছর আগেও শূকরের একটি কিডনি একজন ‘ব্রেইন-ডেড বা ক্লিনিক্যালি ডেড’ নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। চিকিৎসকেরা ‘ব্রেইন ডেড’ ওই নারীর শরীরের বাইরে এক জোড়া বড় রক্তনালির সঙ্গে শূকরের কিডনি সংযুক্ত করে দিয়েছিলেন।

এ ছাড়াও শূকরের হৃদযন্ত্রে জিনগত পরিবর্তন এনে দুজন পুরুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিস্থাপনের কয়েক মাসের মধ্যেই ওই দুই ব্যক্তি মারা যান। রোগী রিক স্লেম্যান ম্যাসাচুসেটস ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টেশনের একজন ম্যানেজার। হাসপাতালের দেওয়া একটি লিখিত বিবৃতিতে স্লেম্যান জানান, তিনি ১১ বছর ধরে হাসপাতালের ট্রান্সপ্লান্ট প্রোগ্রামের রোগী ছিলেন। বহু বছর ধরে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত তিনি। এর আগে ২০১৮ সালে একজন মানব দাতার কাছ থেকে একটি কিডনি পেয়েছিলেন। সেই কিডনি পাঁচ বছর পর্যন্ত কাজ করলেও পরে সমস্যা দেখা দেয় এবং ২০২৩ সালে তিনি আবার ডায়ালাইসিস শুরু করেন। তিনি যখন কিডনি রোগের শেষ পর্যায়ে ছিলেন, তখন তাঁর চিকিৎসক তাকে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন।

স্লেম্যান বলেন, আমি এটাকে কেবল আমার নিজের উপকার হিসেবে দেখছি না। বরং এটা হাজার হাজার মানুষের মাঝে আশা জাগিয়েছে, যাদের বেঁচে থাকার জন্য কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন। মানুষের শরীরের ইমিউন সিস্টেম অন্য প্রাণীর টিস্যু ধ্বংস করে ফেলে। তাই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নেওয়ার আগে জিনগত পরিবর্তন এনে শূকরের জন্ম দেওয়া হয়। যাতে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মতো হয়। শূকরের শরীরের কোষে বিশেষ এক ধরনের সুগার রয়েছে। সেই সুগার ফেলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাতে আক্রান্ত না হয় সে জন্য শূকরের জিন সম্পাদনা করা হয় প্রতিস্থাপনের আগে। সূত্র : সমকাল।