নিউইয়র্ক ১২:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

উৎপাদনকারীরাই সবচেয়ে বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৩৬:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪
  • / ৮০ বার পঠিত

যারা খাদ্য উৎপাদন করেন, তারাই রয়েছেন সবচেয়ে বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়। অন্য যে কোনো পেশার চেয়ে কৃষিজীবী পরিবারগুলোতেই এ সমস্যা বেশি। কৃষিকাজের মাধ্যমে খাদ্যশস্য উৎপাদন করে– এমন ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ পরিবার মাঝারি বা তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া খাদ্যের চরম সংকট বা তীব্র নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে প্রায় ১ শতাংশ কৃষিজীবী পরিবার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খাদ্য নিরাপত্তা-সংক্রান্ত এক জরিপের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। খাদ্য নিরাপত্তা পরিসংখ্যান-২০২৩ নামের এ প্রতিবেদনটি শুক্রবার সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয় ১৫ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত সময়ে। দেশে খাদ্য নিরাপত্তা-সংক্রান্ত এ ধরনের জরিপ এটিই প্রথম। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য জাতীয় অগ্রাধিকারভিত্তিক নীতি প্রণয়নে প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যানভিত্তিক উপাত্ত প্রস্তুতের উদ্দেশ্যে এ জরিপটি পরিচালনা করা হয়। মাঠ পর্যায়ে মোট ২৯ হাজার ৭৬০ খানা থেকে সরাসরি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

বিবিএসের জনশুমারি ও গৃহগণনার চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। সে হিসাবে, ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর চরম নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে রয়েছেন ১৭ লাখ মানুষ। বিবিএসের খানা আয় ও ব্যয় জরিপের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে পরিবারের সংখ্যা এখন ৪ কোটি ১০ লাখ।
প্রতিবেদনে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বলতে খাদ্য গ্রহণ কমানোর উচ্চ আশঙ্কাকে বোঝানো হয়েছে। এটি ক্ষুধাসহ পুষ্টিহীনতার মতো গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে। অন্যদিকে মাঝারি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বলতে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর, সুষম খাবার গ্রহণের অক্ষমতাকে বোঝানো হয়েছে। দেশে উৎপাদিত খাদ্যপণ্যের প্রায় সবটাই আসে গ্রাম থেকে। অথচ সেখানেই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বিবিএসের জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রামের ২৪ দশমিক ১২ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। যেখানে শহর এলাকায় এ হার ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আবার গ্রামের যেসব পরিবারের আয় আসে কৃষি থেকে, সেসব পরিবারে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেশি। এমন ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ পরিবারে তীব্র বা মাঝারি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে। তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হারও এ ধরনের পরিবারে বেশি। এ হার শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ। তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি সবচেয়ে কম শিল্প খাতের সঙ্গে সম্পর্কিতদের। মাত্র শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ।

জরিপে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার খাদ্য ঘাটতি পূরণে ঋণ করে থাকে। শহরের চেয়ে গ্রামে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেশি থাকার কারণে খাদ্যপণ্য কিনতে সেখানে ঋণ গ্রহণের হারও বেশি। প্রতিবেদন বলছে, গ্রামের ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার ঋণ গ্রহণ করে থাকে। শহরে এ হার ২৩ দশমিক ৬ এবং সিটি করপোরশেন এলাকায় ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

খাদ্যপণ্য বাবদ পরিবারের মাসিক ব্যয়ের হিসাবও তুলে আনা হয়েছে বিবিএসের জরিপে। এতে দেখা যায়, জাতীয় পর্যায়ে খাদ্যসামগ্রীর পেছনে পরিবারপ্রতি মাসে গড় ব্যয় ১২ হাজার ৫৩ টাকা। গ্রামে এটি ১১ হাজার ৭১৮ টাকা। শহরে ১১ হাজার ৮৯০ টাকা। তবে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৪ হাজার ১২৫ টাকা। জরিপে প্রধান খাদ্য চাল ও মাছ কেনার খরচের তথ্যও তুলে আনা হয়। এতে দেখা যায়, খাদ্যপণ্যে গ্রামের মানুষের যে খরচ হয়, তার ২৪ শতাংশই যায় চাল কিনতে। এ জাতীয় ব্যয়ের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। আবার গ্রামে চাল বাবদ ব্যয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকার চেয়ে বেশি। গ্রামে পরিবারপ্রতি মাসে চাল কেনা বাবদ খরচ হয় ২ হাজার ৮২২ টাকা। শহরে লাগে ২ হাজার ৫৪০ টাকা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ২ হাজার ২২১ টাকা। সূত্র : সমকাল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

উৎপাদনকারীরাই সবচেয়ে বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৬:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

যারা খাদ্য উৎপাদন করেন, তারাই রয়েছেন সবচেয়ে বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়। অন্য যে কোনো পেশার চেয়ে কৃষিজীবী পরিবারগুলোতেই এ সমস্যা বেশি। কৃষিকাজের মাধ্যমে খাদ্যশস্য উৎপাদন করে– এমন ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ পরিবার মাঝারি বা তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া খাদ্যের চরম সংকট বা তীব্র নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে প্রায় ১ শতাংশ কৃষিজীবী পরিবার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খাদ্য নিরাপত্তা-সংক্রান্ত এক জরিপের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। খাদ্য নিরাপত্তা পরিসংখ্যান-২০২৩ নামের এ প্রতিবেদনটি শুক্রবার সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয় ১৫ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত সময়ে। দেশে খাদ্য নিরাপত্তা-সংক্রান্ত এ ধরনের জরিপ এটিই প্রথম। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য জাতীয় অগ্রাধিকারভিত্তিক নীতি প্রণয়নে প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যানভিত্তিক উপাত্ত প্রস্তুতের উদ্দেশ্যে এ জরিপটি পরিচালনা করা হয়। মাঠ পর্যায়ে মোট ২৯ হাজার ৭৬০ খানা থেকে সরাসরি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

বিবিএসের জনশুমারি ও গৃহগণনার চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। সে হিসাবে, ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর চরম নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে রয়েছেন ১৭ লাখ মানুষ। বিবিএসের খানা আয় ও ব্যয় জরিপের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে পরিবারের সংখ্যা এখন ৪ কোটি ১০ লাখ।
প্রতিবেদনে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বলতে খাদ্য গ্রহণ কমানোর উচ্চ আশঙ্কাকে বোঝানো হয়েছে। এটি ক্ষুধাসহ পুষ্টিহীনতার মতো গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে। অন্যদিকে মাঝারি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বলতে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর, সুষম খাবার গ্রহণের অক্ষমতাকে বোঝানো হয়েছে। দেশে উৎপাদিত খাদ্যপণ্যের প্রায় সবটাই আসে গ্রাম থেকে। অথচ সেখানেই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বিবিএসের জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রামের ২৪ দশমিক ১২ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। যেখানে শহর এলাকায় এ হার ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আবার গ্রামের যেসব পরিবারের আয় আসে কৃষি থেকে, সেসব পরিবারে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেশি। এমন ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ পরিবারে তীব্র বা মাঝারি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে। তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হারও এ ধরনের পরিবারে বেশি। এ হার শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ। তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি সবচেয়ে কম শিল্প খাতের সঙ্গে সম্পর্কিতদের। মাত্র শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ।

জরিপে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার খাদ্য ঘাটতি পূরণে ঋণ করে থাকে। শহরের চেয়ে গ্রামে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেশি থাকার কারণে খাদ্যপণ্য কিনতে সেখানে ঋণ গ্রহণের হারও বেশি। প্রতিবেদন বলছে, গ্রামের ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার ঋণ গ্রহণ করে থাকে। শহরে এ হার ২৩ দশমিক ৬ এবং সিটি করপোরশেন এলাকায় ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

খাদ্যপণ্য বাবদ পরিবারের মাসিক ব্যয়ের হিসাবও তুলে আনা হয়েছে বিবিএসের জরিপে। এতে দেখা যায়, জাতীয় পর্যায়ে খাদ্যসামগ্রীর পেছনে পরিবারপ্রতি মাসে গড় ব্যয় ১২ হাজার ৫৩ টাকা। গ্রামে এটি ১১ হাজার ৭১৮ টাকা। শহরে ১১ হাজার ৮৯০ টাকা। তবে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৪ হাজার ১২৫ টাকা। জরিপে প্রধান খাদ্য চাল ও মাছ কেনার খরচের তথ্যও তুলে আনা হয়। এতে দেখা যায়, খাদ্যপণ্যে গ্রামের মানুষের যে খরচ হয়, তার ২৪ শতাংশই যায় চাল কিনতে। এ জাতীয় ব্যয়ের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। আবার গ্রামে চাল বাবদ ব্যয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকার চেয়ে বেশি। গ্রামে পরিবারপ্রতি মাসে চাল কেনা বাবদ খরচ হয় ২ হাজার ৮২২ টাকা। শহরে লাগে ২ হাজার ৫৪০ টাকা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ২ হাজার ২২১ টাকা। সূত্র : সমকাল।