সুপার টিউসডে এবং রিপাবলিকান প্রাইমারি ভোট কী
- প্রকাশের সময় : ১১:০৭:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪
- / ৯১ বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন ‘সুপার টিউসডে’। ৫ মার্চের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ১৫টি অঙ্গরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের অঞ্চলের প্রতিনিধিরা তাঁদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাই করবেন। মঙ্গলবারের এই ভোটাভুটিতে পরিষ্কার হয়ে যাবে, সামনের নির্বাচনে নিকি হ্যালিকে হারিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হচ্ছেন কি না।
অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ডেমোক্র্যাট শিবিরের প্রার্থী অবশ্য জো বাইডেনের মনোনয়ন নিশ্চিত হয়ে গেছে। তাই রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত হলে এই বছরের শেষে নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মুখোমুখি হবেন।
দুই প্রধান রাজনৈতিক দল কোনটি?
জো বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পার্টি এই মুহূর্তে হোয়াইট হাউসে ক্ষমতায়, আর বিরোধী প্রতিপক্ষ হলো রিপাবলিকান। ডেমোক্র্যাটরা সামাজিকভাবে একটু উদারপন্থী এবং বড় ধরনের সরকারি অর্থ বিনিয়োগ করার পক্ষে। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা সামাজিকভাবে একটু রক্ষণশীল এবং সাধারণত কম সরকারি অর্থ খরচের কথা বলে ও যুক্তরাষ্ট্রকে পুরনো দিনে ফেরত নিতে চায়।
রিপাবলিকানদের মনোনয়নে কেমন সময় লাগে?
প্রার্থীরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শুরুর অন্তত এক বছরেরও বেশি সময় আগে নিজেদের প্রার্থিতার জানান দিতে থাকে। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জয়ের পর থেকেই ট্রাম্প রিপাবলিকানদের শীর্ষ নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তবে তিনি ডেমোক্র্যাট বাইডেনের কাছে ২০২০ সালে পরাজয় বরণ করেন। ২০২৪ সালের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য রিপাবলিকানদের একজন প্রার্থী খুঁজে নিতে হবে, যে পদ্ধতিকে বলে প্রাইমারিস।
প্রাইমারিস কী?
প্রাইমারিস হলো একের পর এক বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের নির্বাচন ও এরপর জাতীয় সম্মেলন। প্রার্থী হিসেবে তারা কাকে চায় সে সিদ্ধান্ত নিতে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে একটা ভোট হয়। এতে সব মিলে যিনি জয়ী হন, তাঁকেই রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে (আরএনসি) প্রার্থী ঘোষণা করা হয়, যা আসছে জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রাইমারি নির্বাচন কিভাবে হয়ে থাকে?
একটা অঙ্গরাজ্য তাদের পছন্দের প্রার্থীকে দুটি ভিন্ন উপায়ে বেছে নিতে পারে। প্রায় সবকটি রাজ্যই জাতীয় নির্বাচনের মতো প্রাইমারি নির্বাচনও গোপন ভোটে হয়ে থাকে। তবে অল্প কিছু অঙ্গরাজ্যে ককাস অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সব কর্মী একসঙ্গে হয়ে মাথা গুনে বা হাত তুলে সিদ্ধান্ত নেন। কারা ভোট দিতে পারবেন তা নিয়ে একেক রাজ্যে একেক আইন। সাধারণত রিপাবলিকান পার্টির সদস্যরাই সুযোগ পেয়ে থাকেন। কে কত ভোটে জিতছেন তার ওপর নির্ভর করে প্রতিটি প্রার্থীকে একটা নির্দিষ্টসংখ্যক প্রতিনিধি দেওয়া হয় জুলাইয়ের জাতীয় কনভেনশনে তাঁকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য।
ভোটগ্রহণ কখন শুরু হয়?
জানুয়ারিতে আইওয়া ককাস দিয়ে ভোট শুরু হয়। এর পরপরই অনুষ্ঠিত হয় নিউ হ্যাম্পশায়ারের প্রাইমারি। সুপার টিউসডে ছাড়াও মার্চে সাউথ ক্যারোলাইনা প্রাইমারি ও মিশিগান প্রাইমারি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া নেভাদা ও ভার্জিন আইল্যান্ডে আছে ককাস।
সুপার টিউসডে কী?
সুপার টিউসডে, ৫ মার্চ, ভোটের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিন ১৫টি অঙ্গরাজ্যে একসঙ্গে রিপাবলিকান পার্টির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যার মধ্যে আছে সবচেয়ে জনবহুল ক্যালিফোর্নিয়া ও টেক্সাস। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত মার্কিন সামোয়াতেও ভোট অনুষ্ঠিত হবে এদিন। মোট দুই হাজার ৪২৯ জন প্রতিনিধির মধ্যে এই এক দিনেই ঠিক হয় ৮৭৪ জন প্রতিনিধি। তাই মনে করা হয় সুপার টিউসডেতে যার জয় হয়, তিনিই প্রেসিডেন্ট মনোনয়নে এগিয়ে যান অনেকখানি।
তবে এরই মধ্যে নিকি হ্যালির ২৪ জন প্রতিনিধির বিপরীতে ১২২ জন প্রতিনিধি নিয়ে অনেক এগিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন তাই অনেকটা শুধু কাগজে-কলমে হ্যালির মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা টিকে আছে। তার পরও যদি তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার না করেন তাহলে আগামী জুন পর্যন্ত ভোটাভুটি চলবে।
রিপাবলিকান প্রাইমারিতে কি ট্রাম্পই জিততে যাচ্ছেন?
এখন পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পই সম্ভাব্য বিজয়ী। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ছয়টি প্রাইমারিতেই তিনি জয়লাভ করেছেন। তবে জরিপ অনুযায়ী, তিনি নিউ হ্যাম্পশায়ারে ২০ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে থাকতে ব্যর্থ হয়েছেন।ট্রাম্পের একেকটা জয় আসলে যুক্তরাষ্ট্রকে আরেকবার সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের লড়াইয়ের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে।
আগামী কয়েক মাস ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করতে হবে ট্রাম্পকে। একদিকে হোয়াইট হাউসের জন্য প্রস্তুতি, অন্যদিকে আদালতেও লড়তে হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগে, যার মধ্যে আছে ২০২০ সালে নির্বাচনী ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা। সূত্র : বিবিসি