নিউইয়র্ক ০৬:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘চুমুক’ থেকেই আগুন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:২৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
  • / ৬৫ বার পঠিত

‘হককথা ডেস্ক : গ্রিন কোজি কটেজ’ ভবনের নিচতলার ‘চুমুক’ নামের কফিশপ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। টানা দুই মিনিট ধরে দাউ দাউ করে ওই দোকানে আগুন জ্বলছিল। ‘চুমুক’র আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার আগে নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন আশপাশের মানুষজন। তবে কোনোভাবেই যেন সম্ভব হচ্ছিল না। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে ওপরের দিকে উঠতে শুরু করে। একে একে দ্বিতীয় তলার কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টসহ ওপরের ফ্লোরগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিভীষিকাময় এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আটকে পড়া মানুষের গগনবিদারী আর্তনাদের কাছে অসহায় ছিলেন উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে আসা একটি ভিডিও ফুটেজেও স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।

ফায়ার এক্সপার্ট এবং স্থাপত্যবিদরা বলছেন, কেবল চিঠি ইস্যু করে দায় মুক্তি খোঁজার কারণেই বারবার এমন ঘটনা ঘটছে। অনুমোদন নেওয়া হয় একরকম আর বাস্তব চিত্র থাকছে উল্টো। বেইলি রোডের ভবনটিতেও আলাদা ইমারজেন্সি এক্সিট ‘সিঁড়ি’ ছিল না। আর এ কারণেই ঝরেছে এতগুলো তাজা প্রাণ। গতকাল সকালে আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবন পরিদর্শনের পর ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটিতে কোনো অগ্নি নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে ভবন কর্তৃপক্ষকে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ ভবনটি বেইলি রোডের সবচেয়ে জমজমাট ভবন। সাত তলা ভবনটির অধিকাংশ ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট রয়েছে। ভবনটির ডান এবং বাম দিকের ফাঁকা জায়গায় রাখা বড় বড় গ্যাস সিলিন্ডার থেকে রেস্টুরেন্টের কিচেনের চুলায় গ্যাস সংযোগ নেওয়া হতো। মাত্র এক মাস আগে ভবনটির নিচতলায় ‘চুমুক’ নামের রেস্টুরেন্টটি যাত্রা শুরু করে। আগুন নেভানোর পর ভবনটির নিচতলার ‘চুমুক’ লাগোয়া বাইরের ডান দিকে তিনটি গ্যাস সংযোগের জন্য প্লাস্টিকের পাইপ পাওয়া গেছে। সে সময় পর্যন্ত একটি বড় গ্যাস সিলিন্ডারও সেখানে দেখা গেছে। কিছু সময় পর বাম দিকে গিয়ে আরও ১২টি প্লাস্টিকের পাইপ লাইন দেখা যায়। তবে ওই সময়ের মধ্যে নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে সেখান থেকে গ্যাস সিলিন্ডারগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আবার প্রতিটি ফ্লোরের সিঁড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিল। আগুনের কারণে সেগুলো পুড়েছে। কয়েকটি সিলিন্ডার ব্রাস্টও হয়েছে। আগুন নেভার পর সেগুলোও কৌশলে বাইরে নিয়ে আসা হয়। চুমুক থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলছিলেন মো. নাবিল নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, আমার বাসা শান্তিনগরে। প্রায় প্রতিদিন আসা হয় বেইলি রোডে। গতকাল রাতে আমি এখানে পাঞ্জাবি কিনতে আসি। রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে দেখি চায়ের চুমুক নামে রেস্টুরেন্টের এক কর্মচারী চুলায় যেন কী করছেন। পরে হঠাৎ দেখি গ্যাসের চুলায় আগুন লেগে যায়। তখন নিচে থাকা অনেকে আগুন নেভাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। দ্রুত আগুন সারা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। দুলাল হোসেন নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, প্রথমে এসে দেখি নিচে চায়ের চুমুকে ছোট একটি আগুন লেগেছে। তখন রেস্টুরেন্টটির কর্মচারীরা এবং একজন পুলিশ সদস্য আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা কোনোভাবেই আগুন নেভাতে পারেননি। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়ে। চায়ের চুমুক রেস্টুরেন্টটি মাত্র এক মাস আগে যাত্রা শুরু করে। ফায়ার সার্ভিস ও ভবনটির রেস্টুরেন্টগুলোতে বিভিন্ন সময়ে খেতে যাওয়া অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবনটিতে প্রবেশ করার রাস্তা ছিল মাত্র একটি। সেটি নিচতলার চায়ের চুমুক নামে একটি রেস্টুরেন্টের পাশ দিয়ে। ওপরের ফ্লোরগুলোতে ওঠার জন্য রয়েছে কেবল মাত্র একটি সরু সিঁড়ি এবং দুটি লিফট। আর সিঁড়িটি এত সরু যে, তা দিয়ে দুজনের বেশি লোক ওঠানামা করতে পারেন না। গত বৃহস্পতিবার লিপইয়ার থাকার কারণে রাজধানীর অনেকগুলো খাবারের দোকানে বিশেষ অফার ছিল। এ কারণে ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ এ থাকা খাবারের দোকানে অন্য দিনের তুলনায় ভিড় ছিল কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে। কারণ ওই রেস্টুরেন্টে ২৫ শতাংশ ছাড় ছিল। যদিও অন্য ছুটির এবং বৃহস্পতিবার রাতে মানুষের যাতায়াত অনেক বেশি।

ফ্লোরে ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট : ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ, একটি জুস বার (ফলের রস বিক্রির দোকান) ও একটি চা-কফি বিক্রির দোকান ছিল। ছিল মুঠোফোন ও ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম এবং পোশাক বিক্রির দোকানও। ভবনের প্রথম তলায় চায়ের চুমুক রেস্টুরেন্ট ছিল। এ ছাড়া ছিল গেজেট অ্যান্ড গিয়ার, স্যামসাং, শেখ হোলিক ও ওয়াফে বে নামে চারটি শোরুম। দ্বিতীয় তলার পুরোটাজুড়ে ছিল কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট। তৃতীয় তলায় ইলিয়ানের পাঞ্জাবির শোরুম। চতুর্থ তলায় খানাস নামে একটি রেস্টুরেন্ট, পঞ্চম তলায় পিৎজা হাট, ষষ্ঠ তলায় স্টিট ওভেন ও জেস্টি নামে দুটি রেস্টুরেন্ট এবং সপ্তম তলায় ফোকুস ও হাক্কা ডাক্কা নামে দুটি রেস্টুরেন্ট ছিল। এ ছাড়া ভবনটির ছাদেও অ্যাম্বোশিয়া নামে একটি রেস্টুরেন্ট ছিল। গতকাল বিকালে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না। নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জন জীবন দিয়েছিল। তারপর কী হয়েছিল? টনক কি নড়েছিল? নড়েনি। কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর একে পর এক অগ্নিদুর্ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে আমরা এখনো অন্ধকার যুগে বসবাস করছি। ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাত তলা ভবনের একটি মাত্র সিঁড়ি, আবার কোনো ফায়ার এক্সিট ছিল না। যেই একটি মাত্র সিঁড়ি ছিল সেখানে আবার গ্যাসের সিলিন্ডারে রাখা ছিল। এগুলো অত্যন্ত ভয়ংকর ব্যাপার। এরকম একটা অবস্থায় আপনি কীভাবে অগ্নিনির্বাপণ করবেন। এসব ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের অবশ্যই দায় আছে। বিশেষ করে যেসব বাণিজ্যিক ভবনে এরকম অবস্থা, সেখানে ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব ছিল। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

‘চুমুক’ থেকেই আগুন

প্রকাশের সময় : ০৪:২৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

‘হককথা ডেস্ক : গ্রিন কোজি কটেজ’ ভবনের নিচতলার ‘চুমুক’ নামের কফিশপ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। টানা দুই মিনিট ধরে দাউ দাউ করে ওই দোকানে আগুন জ্বলছিল। ‘চুমুক’র আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার আগে নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন আশপাশের মানুষজন। তবে কোনোভাবেই যেন সম্ভব হচ্ছিল না। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে ওপরের দিকে উঠতে শুরু করে। একে একে দ্বিতীয় তলার কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টসহ ওপরের ফ্লোরগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিভীষিকাময় এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আটকে পড়া মানুষের গগনবিদারী আর্তনাদের কাছে অসহায় ছিলেন উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে আসা একটি ভিডিও ফুটেজেও স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।

ফায়ার এক্সপার্ট এবং স্থাপত্যবিদরা বলছেন, কেবল চিঠি ইস্যু করে দায় মুক্তি খোঁজার কারণেই বারবার এমন ঘটনা ঘটছে। অনুমোদন নেওয়া হয় একরকম আর বাস্তব চিত্র থাকছে উল্টো। বেইলি রোডের ভবনটিতেও আলাদা ইমারজেন্সি এক্সিট ‘সিঁড়ি’ ছিল না। আর এ কারণেই ঝরেছে এতগুলো তাজা প্রাণ। গতকাল সকালে আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবন পরিদর্শনের পর ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটিতে কোনো অগ্নি নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে ভবন কর্তৃপক্ষকে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ ভবনটি বেইলি রোডের সবচেয়ে জমজমাট ভবন। সাত তলা ভবনটির অধিকাংশ ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট রয়েছে। ভবনটির ডান এবং বাম দিকের ফাঁকা জায়গায় রাখা বড় বড় গ্যাস সিলিন্ডার থেকে রেস্টুরেন্টের কিচেনের চুলায় গ্যাস সংযোগ নেওয়া হতো। মাত্র এক মাস আগে ভবনটির নিচতলায় ‘চুমুক’ নামের রেস্টুরেন্টটি যাত্রা শুরু করে। আগুন নেভানোর পর ভবনটির নিচতলার ‘চুমুক’ লাগোয়া বাইরের ডান দিকে তিনটি গ্যাস সংযোগের জন্য প্লাস্টিকের পাইপ পাওয়া গেছে। সে সময় পর্যন্ত একটি বড় গ্যাস সিলিন্ডারও সেখানে দেখা গেছে। কিছু সময় পর বাম দিকে গিয়ে আরও ১২টি প্লাস্টিকের পাইপ লাইন দেখা যায়। তবে ওই সময়ের মধ্যে নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে সেখান থেকে গ্যাস সিলিন্ডারগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আবার প্রতিটি ফ্লোরের সিঁড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিল। আগুনের কারণে সেগুলো পুড়েছে। কয়েকটি সিলিন্ডার ব্রাস্টও হয়েছে। আগুন নেভার পর সেগুলোও কৌশলে বাইরে নিয়ে আসা হয়। চুমুক থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলছিলেন মো. নাবিল নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, আমার বাসা শান্তিনগরে। প্রায় প্রতিদিন আসা হয় বেইলি রোডে। গতকাল রাতে আমি এখানে পাঞ্জাবি কিনতে আসি। রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে দেখি চায়ের চুমুক নামে রেস্টুরেন্টের এক কর্মচারী চুলায় যেন কী করছেন। পরে হঠাৎ দেখি গ্যাসের চুলায় আগুন লেগে যায়। তখন নিচে থাকা অনেকে আগুন নেভাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। দ্রুত আগুন সারা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। দুলাল হোসেন নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, প্রথমে এসে দেখি নিচে চায়ের চুমুকে ছোট একটি আগুন লেগেছে। তখন রেস্টুরেন্টটির কর্মচারীরা এবং একজন পুলিশ সদস্য আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা কোনোভাবেই আগুন নেভাতে পারেননি। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়ে। চায়ের চুমুক রেস্টুরেন্টটি মাত্র এক মাস আগে যাত্রা শুরু করে। ফায়ার সার্ভিস ও ভবনটির রেস্টুরেন্টগুলোতে বিভিন্ন সময়ে খেতে যাওয়া অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবনটিতে প্রবেশ করার রাস্তা ছিল মাত্র একটি। সেটি নিচতলার চায়ের চুমুক নামে একটি রেস্টুরেন্টের পাশ দিয়ে। ওপরের ফ্লোরগুলোতে ওঠার জন্য রয়েছে কেবল মাত্র একটি সরু সিঁড়ি এবং দুটি লিফট। আর সিঁড়িটি এত সরু যে, তা দিয়ে দুজনের বেশি লোক ওঠানামা করতে পারেন না। গত বৃহস্পতিবার লিপইয়ার থাকার কারণে রাজধানীর অনেকগুলো খাবারের দোকানে বিশেষ অফার ছিল। এ কারণে ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ এ থাকা খাবারের দোকানে অন্য দিনের তুলনায় ভিড় ছিল কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে। কারণ ওই রেস্টুরেন্টে ২৫ শতাংশ ছাড় ছিল। যদিও অন্য ছুটির এবং বৃহস্পতিবার রাতে মানুষের যাতায়াত অনেক বেশি।

ফ্লোরে ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট : ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ, একটি জুস বার (ফলের রস বিক্রির দোকান) ও একটি চা-কফি বিক্রির দোকান ছিল। ছিল মুঠোফোন ও ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম এবং পোশাক বিক্রির দোকানও। ভবনের প্রথম তলায় চায়ের চুমুক রেস্টুরেন্ট ছিল। এ ছাড়া ছিল গেজেট অ্যান্ড গিয়ার, স্যামসাং, শেখ হোলিক ও ওয়াফে বে নামে চারটি শোরুম। দ্বিতীয় তলার পুরোটাজুড়ে ছিল কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট। তৃতীয় তলায় ইলিয়ানের পাঞ্জাবির শোরুম। চতুর্থ তলায় খানাস নামে একটি রেস্টুরেন্ট, পঞ্চম তলায় পিৎজা হাট, ষষ্ঠ তলায় স্টিট ওভেন ও জেস্টি নামে দুটি রেস্টুরেন্ট এবং সপ্তম তলায় ফোকুস ও হাক্কা ডাক্কা নামে দুটি রেস্টুরেন্ট ছিল। এ ছাড়া ভবনটির ছাদেও অ্যাম্বোশিয়া নামে একটি রেস্টুরেন্ট ছিল। গতকাল বিকালে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না। নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জন জীবন দিয়েছিল। তারপর কী হয়েছিল? টনক কি নড়েছিল? নড়েনি। কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর একে পর এক অগ্নিদুর্ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে আমরা এখনো অন্ধকার যুগে বসবাস করছি। ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাত তলা ভবনের একটি মাত্র সিঁড়ি, আবার কোনো ফায়ার এক্সিট ছিল না। যেই একটি মাত্র সিঁড়ি ছিল সেখানে আবার গ্যাসের সিলিন্ডারে রাখা ছিল। এগুলো অত্যন্ত ভয়ংকর ব্যাপার। এরকম একটা অবস্থায় আপনি কীভাবে অগ্নিনির্বাপণ করবেন। এসব ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের অবশ্যই দায় আছে। বিশেষ করে যেসব বাণিজ্যিক ভবনে এরকম অবস্থা, সেখানে ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব ছিল। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

হককথা/নাছরিন