দীর্ঘ ১৫ বছর নিজ বাড়িতে ফিরলেন সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী
- প্রকাশের সময় : ০৬:৩৪:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ১০৪ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থাইল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী তাওই সসং জানিয়েছিলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী থাকসিন সিনাওয়াত্রা শিগগির মুক্তি পাবেন। সে সময় তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সপ্তাহ খানিকের মধ্যেই থাকসিনকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে। তাঁর সেই কথাই সত্যি হতে যাচ্ছে।
তাওই সসং সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘প্রায় ৯৩০ জন কারাবন্দীর সাজা মওকুফ করা হবে। থাকসিন সিনাওয়াত্রাও সেই তালিকায় আছেন। মূলত যাঁরা খুবই সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন বা যাদের বয়স ৭০ বছরের ওপরে, তাঁদেরই মুক্তি দেওয়া হবে। ছয় মাস পর স্বাভাবিকভাবেই তিনি মুক্তি পেতেন।’
এরপর দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন ও স্বল্পকালীন কারাদণ্ড ভোগ শেষে রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) নিজ বাসায় ফিরেছেন থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। বার্তা সংস্থা এএফপি ও রয়টার্সের ব্যাংকক প্রতিনিধিরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। থাকসিনের মেয়ে পায়েটংটার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে একটি গাড়িতে করে নিজ বাসভবনে ফেরেন থাকসিন।
এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, স্থানীয় সময় সকাল ৬টার একটু পর থাকসিন কারামুক্ত হন। পরে নিজের মেয়ের সঙ্গে বাড়িতে ফেরেন। ৬ মাস আগে থাকসিন সিনাওয়াত্রা ১৫ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরেন। এর পর থেকেই কারাগারে ছিলেন তিনি।
এর আগে, গতকাল শনিবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে থাই প্রধানমন্ত্রী সেরেথা থাভাইসিন; থাকসিনেরমুক্তির দিনক্ষণ নিশ্চিত করে বলেন, ‘দেশের আইন অনুসারে, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি (অর্থাৎ রোববার) মুক্তি দেওয়া হবে।’
এদিক, মুক্তির সুখবর পাওয়ার সপ্তাহ দুয়েক আগেই থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্র নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে অভিযুক্ত করে পুলিশ। প্রায় এক দশক আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় এক সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
পুলিশ জানায়, ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানের সময় একটি সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্রের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন থাকসিন। থাকসিনের বিরুদ্ধে এমন সময়ে এই অভিযোগ আনা হলো, যখন আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরেই তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার কথা আছে। তবে মামলাটি এগিয়ে যাবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কারাগারে বন্দী এই বিলিয়নিয়ার দেশটির কঠোর আইনের অধীনে বিচারের মুখোমুখি হওয়া সর্বশেষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ আগস্ট সিঙ্গাপুরে ১৫ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষে ব্যক্তিগত বিমানে করে থাইল্যান্ডের ডন মুয়াং বিমানবন্দরে অবতরণ করেন থাকসিন। পরে বিমানবন্দর থেকে আগের দণ্ডাদেশ থাকায় আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে নেয়া হয়। কারাগারে নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই থাকসিনকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
টেলিকম ব্যবসার মাধ্যমে দেশটির শীর্ষ ধনকুবের বনে যান থাকসিন সিনাওয়াত্রা। ২০০১ সালে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। পরে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ২০০৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ক্ষমতাচ্যুত হন। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই তিনি দেশের বাইরে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন।
এরই মধ্যে থাকসিনের অনুপস্থিতিতেই সুপ্রিম কোর্ট তাকে চারটি মামলায় ১২ বছরের কারাদণ্ড দেন। পরে আদালতের রায়ের ওপর থাইল্যান্ডের রাজা থাকসিনকে দণ্ড অর্ধেক করে দেন।
হককথা/নাছরিন