জয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সাদী-জ্যাকবের যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন বিভাগের সাথেও প্রতারণা
- প্রকাশের সময় : ১০:৩৫:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জুন ২০১৬
- / ৬৭৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: ইসরাইলে ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি সাফাদির সাথে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বৈঠকের আজগুবি তথ্য আবিস্কারক বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা জাহিদ এফ সর্দার সাদী এবং নিউইয়র্কস্থ একটি মিডিয়ার ‘টক শো’ হোস্ট জ্যাকব মিল্টন সম্পর্কে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করলেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নূরনবী।
গত ২ জুন বৃহস্পতিবার রাতে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘সাদী এবং জ্যাকবের বাড়ি বরিশালে। তারা উভয়ে মুসলিম পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদনে নিজেদেরকে খ্রিস্টান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যদিও দেড় যুগের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও অভিবাসন দফতর তাদের আবেদন মঞ্জুর করেনি।’ কমান্ডার নূরনবী আরো উল্লেখ করেন, ‘এরা দু’জন এতই দুষ্ট প্রকৃতির যে, এমন কোন কাজ নেই যা তারা করতে পিছপা হন।’ ‘বহু প্রবাসীর সহায়-সম্পদ এরা হাতিয়ে নেয় প্রতারণামূলকভাবে। ৬ কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জালিয়াতির মত জঘন্য অপকর্মের ঘটনা ফাঁস হবার পরও এরা সংযত হননি।’
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সাংবাদিক সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাসিব মামুন। সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দেন যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক ড. এম এ বাতেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য সরাফ সরকার এবং শামসুল আবদীন, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক রুহেল চৌধুরী প্রমুখ।
সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বলেন ‘একাত্তরের ঘাতক এবং সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক দৃর্বৃত্তায়নের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে পারদর্শী তারেক রহমানের পারপাস সার্ভ করার মিশন নিয়ে এই দু’জন বেশ ক’মাস যাবত মাঠে নেমেছেন’-উল্লেখ করেন নূরনবী কমান্ডার। এরা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মতলবে সাফাদীকে ভাড়া করেছিল। এক্ষেত্রেও মোটা অর্থ লেনদেন হয়েছে। জয় যখন সাফাদী’র কাছে জানতে চেয়েছেন যে, ‘কখন, কোথায় তার সাথে সাক্ষাৎ ঘটেছে-সেটি জানানো হউক’, এরপরই আর কোন সাড়া শব্দ নেই কথিত ঐ সাফাদি কিংবা তার দোসরদের।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয় যে, ‘জাহিদ এফ সরদার সাদী এবং জ্যাকব মিল্টন এখনও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের বৈধতা না পাওয়ায় তারা বাংলাদেশের পাসপোর্ট বহন করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জঘন্যতম অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। এদের যাবতীয় তথ্য যুক্তরাষ্ট্র ইমিগ্রেশন বিভাগে জানানো উচিত, যাতে তাদেরকে দ্রুত বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।’
জয়ের বিরুদ্ধে সাফাদীর সাথে বৈঠকের কল্প-কাহিনীর প্রতিবাদ এবং এহেন অপকর্মে লিপ্তদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে এর আগে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ব্যানারে আরো দুটি সভা হয়েছে। এদিকে, জয়ের চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে সাফাদীর বক্তব্য জানার জন্যে বেশ কয়েকদফা চেষ্টা করা হয় গত রোববার (২৯ মে) থেকে। সাফাদীর সেলফোন, টেক্সট মেসেজ, ই-মেইল এবং ফেসবুকের মাধ্যমে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২ জুন) রাত পর্যন্ত কোন জবাব পাওয়া যায়নি। এরফলে জয়ের সাথে সাফাদীর সাক্ষাৎ অথবা বৈঠকের যে ভিডিও সাদী আর জ্যাকবেরা প্রচার করেছে, সেটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কম্যুনিটিতে নানা প্রশ্নের উদ্রেক ঘটেছে। সারা আমেরিকায় বাংলাদেশীদের মধ্যে এ নিয়েই আলোচনা চলছে।