বিদেশের সঙ্গে লেনদেনে অস্বস্তি কমছে
- প্রকাশের সময় : ০৩:৪৮:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ১৪২ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবে স্বস্তি আসার পর পণ্য বাণিজ্য, আর্থিক হিসাব এবং সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি কমতে শুরু করেছে। সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ১৭ কোটি ডলার। আর্থিক হিসাবে ঘাটতি কমেছে ৮ কোটি ডলার। আর সার্বিক ভারসাম্যে ঘাটতি কমেছে ১২২ কোটি ডলার। একই সময়ে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত বেড়েছে ১৪৬ কোটি ডলার। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আমদানি ব্যয় কমে আসা ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি নিম্নমুখী রয়েছে। সেই সঙ্গে প্রবাসী আয়ে ভর করে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্তের পরিমাণ বাড়ছে। আর ডিসেম্বর মাসে আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে ১২০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ সহায়তা এসেছে। ফলে আগের ঋণ পরিশোধের চাপ থাকার পরও আর্থিক হিসাব ঘাটতি কিছুটা কমেছে। এর প্রভাবে সার্বিক ভারসাম্যে ঘাটতির পরিমাণ কমেছে। অর্থাৎ দেরিতে হলেও সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। এই স্বস্তি আগামী দিনে বজায় রাখতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো ও নতুন ঋণ পাওয়ার ওপর জোর দিতে হবে। এ ছাড়া রপ্তানি বৃদ্ধি ও রেমিট্যান্স বাড়ানোরও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, কড়াকড়ি আরোপসহ নানা পদক্ষেপের ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) আমদানি ব্যয় কমেছে ১৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। এ সময়ে বাংলাদেশের আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৫৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে একই সময়ে আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল ৩ হাজার ৮১৩ কোটি ডলার। অন্যদিকে প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি
আয় বেড়েছে দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৫৯৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছিল ২ হাজার ৫৮২ কোটি ডলার। এতে বিদেশের সঙ্গে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১ হাজার ২৩১ কোটি ডলার। আর নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪৭৬ কোটি ডলার। ফলে ডিসেম্বর মাসে বাণিজ্য ঘাটতি নতুন করে না বেড়ে উল্টো কমেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ে ব্যবধান কমার সঙ্গে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে প্রথম ছয় মাসে চলতি হিসাবে ১৯২ কোটি ৭০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত বজায় রয়েছে। নভেম্বর পর্যন্ত এই হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল ৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ে চলতি হিসাবে রেকর্ড প্রায় ৪৯২ কোটি ২০ লাখ ডলারের ঘাটতি ছিল।
সাধারণভাবে কোনো দেশের নিয়মিত বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতি বোঝা যায় চলতি হিসাবের মাধ্যমে। আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য নিয়মিত আয়-ব্যয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এখানে উদ্বৃত্ত হলে চলতি লেনদেনের জন্য দেশকে কোনো ঋণ করতে হয় না। তবে ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে ঋণ নিতে হয়।
আর্থিক হিসাবে ঘাটতি সামান্য কমেছে : দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক হিসাবে বাড়তে থাকা ঘাটতি ডিসেম্বরে এসে সামান্য কমেছে। সব মিলে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আর্থিক হিসাবে ৫৩৯ কোটি ডলারের ঘাটতি রয়েছে, যা নভেম্বর পর্যন্ত ছিল ৫৪৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার। তবে গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এ হিসাবে ১৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল। আর্থিক হিসাবে ঘাটতি বৃদ্ধির পেছনে বিদেশি বিনিয়োগ ও নতুন ঋণ কমে যাওয়া ও আগের ঋণ পরিশোধের চাপ বৃদ্ধিকে দায়ী করা হচ্ছে।
সার্বিক ভারসাম্যে ঘাটতি কমছে : সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যেও ঘাটতি কমছে বাংলাদেশের। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সার্বিক ঘাটতি কমে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৬৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪৮৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার। আর গত অর্বছরে একই সময়ে এই হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৬৪৫ কোটি ৩০ লাভ ডলার। সূত্র : আমাদের সময়
হককথা/নাছরিন