১৩৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাসের
- প্রকাশের সময় : ০১:৫৪:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ৫১ বার পঠিত
কাতারের আমির এবং প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ছবি: রয়টার্স
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় সাড়ে চার মাসের (১৩৫ দিন) যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। চুক্তি অনুযায়ী সময়ের মধ্যে সমস্ত জিম্মিকে মুক্ত করার প্রস্তাবও করেছে তারা। এছাড়ও প্রস্তাব অনুযায়ী এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েল গাজা উপত্যকা থেকে তার সৈন্য প্রত্যাহার করা ও যুদ্ধ শেষ করার চুক্তিতে যাওয়ার বিষয়ও প্রাধান্য পেয়েছে। খবর রয়টার্স।
ইসরায়েলের সরকারের মুখপাত্র বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলনে থাকায় ইসরায়েল প্রস্তাবটি গভীরভাবে অধ্যয়ন করছে। ইসরায়েলের চ্যানেল ১৩ টিভি একজন অজ্ঞাত কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, কিছু দিক গ্রহণযোগ্য নয় এবং কর্মকর্তারা প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করবেন বা পরিবর্তন চাইবেন কিনা তা নিয়ে বিতর্ক চলছে।
হামাসের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের ও ইসরায়েলের গুপ্তচর প্রধানদের তৈরি করা। এছাড়াও গত সপ্তাহে হামাসের কাছে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা যে প্রস্তাব রেখেছিল এটি তারই একটি প্রতিক্রিয়া বলে জানিয়েছে রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন কাতার ও মিসরের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর ইসরায়েলে পৌঁছে নেতানিয়াহুর সঙ্গে প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করেছেন। উভয় দেশই চলমান সংঘাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে।
দুই পক্ষের মধ্যে বড় ফাঁক রয়ে গেছে। ইসরায়েল এর আগে বলেছে, হামাস নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত তারা গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করবে না বা যুদ্ধ থামাবে না। তবে সূত্রগুলো বলেছে, হামাস যুদ্ধ শেষ করার জন্য তার দীর্ঘ দিনের দাবিতে নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। এখন এটিকে যুদ্ধবিরতির পূর্বশর্তের পরিবর্তে ভবিষ্যতের আলোচনায় সমাধানের একটি সমস্যা হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।
আলোচনার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, হামাসের পাল্টা প্রস্তাবের জন্য শুরুতে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির গ্যারান্টি প্রয়োজন ছিল না, তবে চূড়ান্ত জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আগে যুদ্ধের অবসানে সম্মত হতে হবে। আরেক সূত্র জানিয়েছে, হামাস এখনও কাতার, মিসর ও অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে যুদ্ধবিরতি বহাল থাকার গ্যারান্টি চায়। একইসঙ্গে এটাও চায় যে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার সঙ্গে সেঙ্গ যেন যুদ্ধবিরতি ভেঙে না পড়ে।
ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র আভি হাইম্যান সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা একটি আপডেট পেয়েছি, আমরা কাতারের আলোচকদের কাছ থেকে বিজ্ঞপ্তি পেয়েছি। আমরা তাদের দিকে তাকিয়ে আছি। মোসাদ আমাদের কাছে যা পেশ করা হয়েছে তা গভীরভাবে দেখা হচ্ছে।’
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত এল-রেশিক বলেছেন, এই গোষ্ঠীর লক্ষ্য ছিল ‘আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ করা এবং একটি সম্পূর্ণ ও দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ত্রাণ, সাহায্য, আশ্রয় ও পুনর্গঠন প্রদান করা।’
রয়টার্সের দেখা ও সূত্র দ্বারা নিশ্চিত হওয়া প্রস্তাবের নথি অনুসারে, প্রথম ৪৫ দিনের পর্বে ইসরায়েলি জেলে বন্দী ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের বিনিময়ে সমস্ত ইসরায়েলি নারী জিম্মি, ১৯ বছরের কম বয়সী পুরুষ এবং বয়স্ক ও অসুস্থদের মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েল গাজার জনবহুল এলাকা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করবে।
যতক্ষণ না উভয় পক্ষ পারস্পরিক সামরিক অভিযান শেষ করতে ও সম্পূর্ণ শান্ত অবস্থায় ফিরে আসার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে পরোক্ষ আলোচনা শেষ না করে ততক্ষণ দ্বিতীয় পর্যায়ের বাস্তবায়ন শুরু হবে না।
দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি পুরুষ জিম্মিদের মুক্তি ও সমগ্র গাজা থেকে ইসরায়েলিদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তৃতীয় পর্বে মৃতদের দেহাবশেষ বিনিময় করা হবে।
হককথা/নাছরিন