নিউইয়র্ক ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘নির্বাচনী প্রিমিয়ার লিগে’ একাই খেলছেন পুতিন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২৪:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১১৫ বার পঠিত

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনফাইল ছবি : রয়টার্স

হককথা ডেস্ক : ভ্লাদিমির পুতিন রুশ রাষ্ট্রীয় দপ্তর ক্রেমলিনের উল্টো দিকে প্রদর্শনী হলের মঞ্চে ঢুকলেন। তিনি ঢোকামাত্রই সমবেত দর্শক করতালি দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন। স্বাগত জানালেন পুতিনকে।

দৃশ্যটা একেবারেই বিস্ময়কর নয় বলে মনে করেন বিবিসির রাশিয়া সম্পাদক স্টিভ রোজেনবার্গ। তিনি বলছেন, এই প্রদর্শনীতে আমন্ত্রিত অতিথিদের বেশির ভাগই রাশিয়ার তারকা। তাঁরা মার্চ মাসে অনুষ্ঠেয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিনের প্রার্থিতাকে সমর্থন করছেন। ক্রেমলিনে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পুতিন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা ও পঞ্চমবারের মতো নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে দেশটির জনমত তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন বিবিসির রাশিয়া সম্পাদক স্টিভ রোজেনবার্গ।

প্রতিবেদনে ওই প্রদর্শনীর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন রোজেনবার্গ। সেখানে রুশ চলচ্চিত্র নির্মাতা আন্দ্রেই কনচালভস্কি বলেন, পুতিন একজন অসাধারণ নেতা। তিনি সবচেয়ে সাহসী ও জ্ঞানী ব্যক্তি। রুশ গায়িকা নাদেজহদা বাবকিনা বলেছেন, রাশিয়ার জনগণ তাঁদের প্রেসিডেন্টের সমর্থনে কখনো এতটা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন না। কেউ এটি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে ব্যর্থ হবেন।

এই প্রদর্শনী থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট। আর তা হলো, এই প্রদর্শনী এটাই বোঝাতে চায় যে পুতিনের প্রিমিয়ার লিগে একাই খেলছেন পুতিন। পুতিন নিজেই এই লিগ তৈরি করেছেন এবং তিনিই এর প্রধান। রাশিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থা পুতিনেরই রাজনৈতিক ব্যবস্থা। রাজনৈতিক খেলার সব নিয়মই তাঁর। নির্বাচনও তাঁর একার।

পুতিনের কট্টর সমালোচকেরা দীর্ঘকাল ধরে নির্বাসিত। তাঁরা হয় নির্বাসনে, না হয় কারাগারে।

রোজেনবার্গ বলছেন, পরিস্থিতি যখন এ রকম, তখন এই নির্বাচনে কী ঘটতে চলেছে, তা বলাটা খুব সহজ। তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে, ৩০ বছর আগে মস্কোয় কোনো একটি রুশ টেলিভিশন চ্যানেলে নির্বাচনের ফল ঘোষণা দেখছিলাম। ওই নির্বাচনে কে জিততে চলেছেন, সে সম্পর্কে কারও কোনো ধারণা ছিল না। কারণ, সে সময়ে রুশরা গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও তাঁদের দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল। নির্বাচনের ফল কী হতে চলেছে, তা জানতে জ্যোতিষীর কাছেও যেতেন অনেকে।’

তবে এখন নির্বাচনের ফল জানতে রাশিয়ায় কোনো জ্যোতিষীর প্রয়োজন নেই বলছেন রোজেনবার্গ। তিনি বলেন, ‘এ বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভ্লাদিমির পুতিন নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবেন, এটা আমি আপনাদের বলে দিতে পারি।’

পুতিনের জয় নিয়ে কেন এত আত্মবিশ্বাস

পুতিনের নিশ্চিত জয়ের কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন রোজেনবার্গ। প্রথমত, যদিও পুতিন নির্বাচনে একমাত্র প্রার্থী নন। তবে পুতিনের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী কারাবন্দী বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। পুতিন বনাম নাভালনি? পুতিন প্রিমিয়ার লিগে কখনই পুতিন বনাম নাভালনি খেলবেন না।

ক্রেমলিন–সমালোচক বরিস নাদেজদিন নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। তিনি নাভালনির মতো স্পষ্টভাষী নন। তিনি পুতিনের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে বেশ সতর্ক। পুতিনের প্রশাসনের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, রাশিয়ায় সরকার টেলিভিশন নিয়ন্ত্রণ করে। টিভিতে পুতিন প্রচুর কাভারেজ পান। টিভিতে পুতিনের কর্মকাণ্ড বেশি প্রশংসিত হয়। সমালোচনা কম হয়। পুতিনের ইতিবাচক ভূমিকার পেছনে এটি একটি কারণ।

বছরের শেষ সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ান টিভির তরুণ প্রতিবেদক আলেক্সান্দার বলেন, ‘আমরা সবাই আপনার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি। কারণ, আপনি অনেক দিন ক্ষমতায়।’

রোজেনবার্গ বলছেন, তিনি আলেক্সান্দারের মতো অনেক রুশ নাগরিকের সঙ্গে দেখা করেছেন, যাঁরা ক্রেমলিনে অন্য কাউকে কল্পনা করতে পারেন না। তাঁরা পুতিনকে আদর্শ মনে করেন না। কিন্তু তাঁরা কোনো বিকল্প পান না। তিনি বলেন, ‘আমি প্রায়ই মানুষকে বলতে শুনেছি, পুতিন না হলে অন্য আর কে? ক্রেমলিন কৌশলগতভাবে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্মূল করার মাধ্যমে এই ব্যবস্থা পোক্ত করেছে।’

রোজেনবার্গ আরও বলেন, ‘আমি যখন মস্কো থেকে ১৪০ মাইল দূরে রেজেভ শহরের মানুষের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের প্রত্যাশার কথা শুনি, তখন মনে হয়, অনেকেই পরিবর্তন চান। কিন্তু নেতার পরিবর্তন চান না।’

ইলিয়া নামের এক তরুণ বলেছেন, ‘আপনি যদি নতুন কাউকে নির্বাচিত করেন, তাহলে তিনি হয়তো দায়িত্ব সামলাতে পারবেন না। আমরা এখন যে কঠিন পরিস্থিতিতে আছি, তাতে পুতিনের মতো অভিজ্ঞ কেউই পারে দেশের উন্নতি করতে।’

সরকারি অবসর ভাতা পান লিদিয়া। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমার অনেক আশা আছে। আমি আশা করি, যুদ্ধ শেষ হবে এবং অর্থনীতির উন্নতি হবে। তবে আমি পুতিনকে সম্মান করি।’ লিদিয়ার কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, পুতিনের মতো আর কেউ আছেন কি না। উত্তরে লিদিয়া বলেন, ‘এখনো না। সম্ভবত পুতিন পরে কাউকে খুঁজে পাবেন। কিন্তু আমি মনে করি, তিনি দীর্ঘ সময়ের জন্য ক্ষমতায় থাকবেন।’

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ এবং রুশ সামরিক ক্ষয়ক্ষতিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও কমান্ডার ইন চিফের মধ্যে কোনো হতাশার জন্ম দিয়েছে বলে মনে করেন না রোজেনবার্গ। পুতিন বড় হামলা শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাশিয়ার নাগরিকেরা মনে করেন, যুদ্ধের সময় তাঁদের নেতাকে সমর্থন করা কর্তব্য। অন্যেরা বিশ্বাস করেন, যুদ্ধ শুরু করার জন্য পশ্চিমারা দায়ী, রাশিয়া নয়।

রোজেনবার্গ বলেন, তিনি রেজনভে ইয়েক্যাৎরিনা দান্তসোভা নামের এক নারীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি সাবেক টিভি সাংবাদিক ও আঞ্চলিক আইনপ্রণেতা। তিনি নিজেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। ইউক্রেনে শান্তি ও রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কাগজপত্রে ভুল থাকায় দান্তসোভাকে মনোনয়ন দেয়নি। তিনি নতুন একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করছেন।

রোজেনবার্গ বলেন, ‘পুতিনের প্রচারণা অনুষ্ঠান থেকে ফিরে আমি রাশিয়ার গণমাধ্যম আরটি-এর প্রধান সম্পাদক মার্গারিটা সিমোনিয়ানের সঙ্গে কথা বলি। তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এক শতাব্দীর এক–চতুর্থাংশের বেশি সময় ধরে একজনের ক্ষমতায় থাকা কি বিপজ্জনক নয়? উত্তরে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন একজন ক্ষমতায় থাকা মানেই নেতিবাচক কিছু নয়।’

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

‘নির্বাচনী প্রিমিয়ার লিগে’ একাই খেলছেন পুতিন

প্রকাশের সময় : ০৮:২৪:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

হককথা ডেস্ক : ভ্লাদিমির পুতিন রুশ রাষ্ট্রীয় দপ্তর ক্রেমলিনের উল্টো দিকে প্রদর্শনী হলের মঞ্চে ঢুকলেন। তিনি ঢোকামাত্রই সমবেত দর্শক করতালি দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন। স্বাগত জানালেন পুতিনকে।

দৃশ্যটা একেবারেই বিস্ময়কর নয় বলে মনে করেন বিবিসির রাশিয়া সম্পাদক স্টিভ রোজেনবার্গ। তিনি বলছেন, এই প্রদর্শনীতে আমন্ত্রিত অতিথিদের বেশির ভাগই রাশিয়ার তারকা। তাঁরা মার্চ মাসে অনুষ্ঠেয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিনের প্রার্থিতাকে সমর্থন করছেন। ক্রেমলিনে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পুতিন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা ও পঞ্চমবারের মতো নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে দেশটির জনমত তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন বিবিসির রাশিয়া সম্পাদক স্টিভ রোজেনবার্গ।

প্রতিবেদনে ওই প্রদর্শনীর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন রোজেনবার্গ। সেখানে রুশ চলচ্চিত্র নির্মাতা আন্দ্রেই কনচালভস্কি বলেন, পুতিন একজন অসাধারণ নেতা। তিনি সবচেয়ে সাহসী ও জ্ঞানী ব্যক্তি। রুশ গায়িকা নাদেজহদা বাবকিনা বলেছেন, রাশিয়ার জনগণ তাঁদের প্রেসিডেন্টের সমর্থনে কখনো এতটা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন না। কেউ এটি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে ব্যর্থ হবেন।

এই প্রদর্শনী থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট। আর তা হলো, এই প্রদর্শনী এটাই বোঝাতে চায় যে পুতিনের প্রিমিয়ার লিগে একাই খেলছেন পুতিন। পুতিন নিজেই এই লিগ তৈরি করেছেন এবং তিনিই এর প্রধান। রাশিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থা পুতিনেরই রাজনৈতিক ব্যবস্থা। রাজনৈতিক খেলার সব নিয়মই তাঁর। নির্বাচনও তাঁর একার।

পুতিনের কট্টর সমালোচকেরা দীর্ঘকাল ধরে নির্বাসিত। তাঁরা হয় নির্বাসনে, না হয় কারাগারে।

রোজেনবার্গ বলছেন, পরিস্থিতি যখন এ রকম, তখন এই নির্বাচনে কী ঘটতে চলেছে, তা বলাটা খুব সহজ। তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে, ৩০ বছর আগে মস্কোয় কোনো একটি রুশ টেলিভিশন চ্যানেলে নির্বাচনের ফল ঘোষণা দেখছিলাম। ওই নির্বাচনে কে জিততে চলেছেন, সে সম্পর্কে কারও কোনো ধারণা ছিল না। কারণ, সে সময়ে রুশরা গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও তাঁদের দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল। নির্বাচনের ফল কী হতে চলেছে, তা জানতে জ্যোতিষীর কাছেও যেতেন অনেকে।’

তবে এখন নির্বাচনের ফল জানতে রাশিয়ায় কোনো জ্যোতিষীর প্রয়োজন নেই বলছেন রোজেনবার্গ। তিনি বলেন, ‘এ বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভ্লাদিমির পুতিন নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবেন, এটা আমি আপনাদের বলে দিতে পারি।’

পুতিনের জয় নিয়ে কেন এত আত্মবিশ্বাস

পুতিনের নিশ্চিত জয়ের কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন রোজেনবার্গ। প্রথমত, যদিও পুতিন নির্বাচনে একমাত্র প্রার্থী নন। তবে পুতিনের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী কারাবন্দী বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। পুতিন বনাম নাভালনি? পুতিন প্রিমিয়ার লিগে কখনই পুতিন বনাম নাভালনি খেলবেন না।

ক্রেমলিন–সমালোচক বরিস নাদেজদিন নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। তিনি নাভালনির মতো স্পষ্টভাষী নন। তিনি পুতিনের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে বেশ সতর্ক। পুতিনের প্রশাসনের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, রাশিয়ায় সরকার টেলিভিশন নিয়ন্ত্রণ করে। টিভিতে পুতিন প্রচুর কাভারেজ পান। টিভিতে পুতিনের কর্মকাণ্ড বেশি প্রশংসিত হয়। সমালোচনা কম হয়। পুতিনের ইতিবাচক ভূমিকার পেছনে এটি একটি কারণ।

বছরের শেষ সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ান টিভির তরুণ প্রতিবেদক আলেক্সান্দার বলেন, ‘আমরা সবাই আপনার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি। কারণ, আপনি অনেক দিন ক্ষমতায়।’

রোজেনবার্গ বলছেন, তিনি আলেক্সান্দারের মতো অনেক রুশ নাগরিকের সঙ্গে দেখা করেছেন, যাঁরা ক্রেমলিনে অন্য কাউকে কল্পনা করতে পারেন না। তাঁরা পুতিনকে আদর্শ মনে করেন না। কিন্তু তাঁরা কোনো বিকল্প পান না। তিনি বলেন, ‘আমি প্রায়ই মানুষকে বলতে শুনেছি, পুতিন না হলে অন্য আর কে? ক্রেমলিন কৌশলগতভাবে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্মূল করার মাধ্যমে এই ব্যবস্থা পোক্ত করেছে।’

রোজেনবার্গ আরও বলেন, ‘আমি যখন মস্কো থেকে ১৪০ মাইল দূরে রেজেভ শহরের মানুষের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের প্রত্যাশার কথা শুনি, তখন মনে হয়, অনেকেই পরিবর্তন চান। কিন্তু নেতার পরিবর্তন চান না।’

ইলিয়া নামের এক তরুণ বলেছেন, ‘আপনি যদি নতুন কাউকে নির্বাচিত করেন, তাহলে তিনি হয়তো দায়িত্ব সামলাতে পারবেন না। আমরা এখন যে কঠিন পরিস্থিতিতে আছি, তাতে পুতিনের মতো অভিজ্ঞ কেউই পারে দেশের উন্নতি করতে।’

সরকারি অবসর ভাতা পান লিদিয়া। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমার অনেক আশা আছে। আমি আশা করি, যুদ্ধ শেষ হবে এবং অর্থনীতির উন্নতি হবে। তবে আমি পুতিনকে সম্মান করি।’ লিদিয়ার কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, পুতিনের মতো আর কেউ আছেন কি না। উত্তরে লিদিয়া বলেন, ‘এখনো না। সম্ভবত পুতিন পরে কাউকে খুঁজে পাবেন। কিন্তু আমি মনে করি, তিনি দীর্ঘ সময়ের জন্য ক্ষমতায় থাকবেন।’

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ এবং রুশ সামরিক ক্ষয়ক্ষতিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও কমান্ডার ইন চিফের মধ্যে কোনো হতাশার জন্ম দিয়েছে বলে মনে করেন না রোজেনবার্গ। পুতিন বড় হামলা শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাশিয়ার নাগরিকেরা মনে করেন, যুদ্ধের সময় তাঁদের নেতাকে সমর্থন করা কর্তব্য। অন্যেরা বিশ্বাস করেন, যুদ্ধ শুরু করার জন্য পশ্চিমারা দায়ী, রাশিয়া নয়।

রোজেনবার্গ বলেন, তিনি রেজনভে ইয়েক্যাৎরিনা দান্তসোভা নামের এক নারীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি সাবেক টিভি সাংবাদিক ও আঞ্চলিক আইনপ্রণেতা। তিনি নিজেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। ইউক্রেনে শান্তি ও রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কাগজপত্রে ভুল থাকায় দান্তসোভাকে মনোনয়ন দেয়নি। তিনি নতুন একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করছেন।

রোজেনবার্গ বলেন, ‘পুতিনের প্রচারণা অনুষ্ঠান থেকে ফিরে আমি রাশিয়ার গণমাধ্যম আরটি-এর প্রধান সম্পাদক মার্গারিটা সিমোনিয়ানের সঙ্গে কথা বলি। তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এক শতাব্দীর এক–চতুর্থাংশের বেশি সময় ধরে একজনের ক্ষমতায় থাকা কি বিপজ্জনক নয়? উত্তরে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন একজন ক্ষমতায় থাকা মানেই নেতিবাচক কিছু নয়।’

হককথা/নাছরিন