নিউইয়র্ক ০৬:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

খাতভিত্তিক সুষম বণ্টন পাচ্ছে না মন্ত্রণালয়গুলো

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:০৪:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ১৯৭ বার পঠিত

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রক্ষেপণ অনুযায়ী বরাদ্দ পাচ্ছে না মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। কয়েকটি খাতে প্রক্ষেপণের তুলনায় কম বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আবার কয়েকটি খাতে প্রক্ষেপণের তুলনায় বরাদ্দের পরিমাণ অনেক বেশি। পরিকল্পনা কমিশনের সভার কার্যপত্রে এসব বিষয় উঠে এসেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলনকেন্দ্রে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বার্ষিক প্রক্ষেপণের তুলনায় এডিপিতে (২০২৩-২৪) প্রকৃত বরাদ্দ যেসব খাতে অনেক কম—স্বাস্থ্য খাতে ১১.১ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ৬.১৬ শতাংশ; কৃষি খাতে ১১.৫ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ৪.০৭ শতাংশ; শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে ১৬.৫ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ১৩.৩৮ শতাংশ; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১২.১ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ৭.১৮ শতাংশ এবং সামাজিক সুরক্ষা ৩.৫ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ১.২৬ শতাংশ।

এ ছাড়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বার্ষিক প্রক্ষেপণের তুলনায় এডিপিতে (২০২৩-২৪) প্রকৃত বরাদ্দ অনেক বেশি যেসব খাতে তার মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১৪.৮ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ১৬.৮৮ শতাংশ; পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ১৭.৪ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ২৮.৮৮ শতাংশ; গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাদি খাতে ২.৩ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ১০.২৮ শতাংশ। পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ খাতে ০.৫ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ৩.৪২ শতাংশ।

জানা গেছে, কমিশন সভায় প্রধানমন্ত্রীকে এসব বিষয় জানানো হয়। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত না থাকলে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন ব্যাহত হতে পারে। যেসব সেক্টরে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রক্ষেপণ ও এডিপি বরাদ্দের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা রয়েছে, সেসব সেক্টরের অধীন মন্ত্রণালয়কে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতি রেখে নতুন প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, ১৫ বছরে দেশজ সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার লক্ষ্যে সরকারি বিনিয়োগ ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে সার্বিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে সরকার কৃচ্ছ্রসাধন নীতি অনুসরণ করছে। এর প্রতিফলন সরকারি বিনিয়োগেও দেখা যাচ্ছে। চলতি বছরের বাজেটে সরকারি বিনিয়োগ পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে।

এ ছাড়া উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তা মোকাবেলা করে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সরকারি বিনিয়োগের বর্তমান গতিধারা অব্যাহত রাখার বিষয়েও আলোচনা করেছে কমিশন। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ব্যয়ে সরকারি অংশ ও বৈদেশিক ঋণ বা অনুদানের অনুপাত পর্যালোচনায় দেখা যায়, জিওবি খাতের ব্যয় এবং বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের অনুপাত ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ৬০:৪০, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৫:৩৫-এ দাঁড়িয়েছে।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের অংশ কমবেশি একই পর্যায়ে রয়েছে। সহজ শর্তের ঋণপ্রাপ্তির সম্ভাবনা বজায় থাকা পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান দেশীয় উেসর ঋণের চেয়ে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। ফলে সহজ শর্তের বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান সংগ্রহের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে বলেছে কমিশন। এ ছাড়া এডিপিতে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের বরাদ্দ এবং প্রকৃত ব্যবহারের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে মূল বরাদ্দের ৬৪.১ শতাংশ ব্যবহার করা হয়েছিল, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান ব্যবহারের হার ছিল ৭২.৪ শতাংশ। বরাদ্দ ও প্রকৃত ব্যবহারের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৮ শতাংশ পার্থক্য রয়েছে। বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান ব্যবহারে আরো যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম বলেন, অনেক মন্ত্রণালয় বরাদ্দ কম পাচ্ছে, আবার কেউ বেশি পাচ্ছে। বিষয়টির সমন্বয় দরকার। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা একটি পরিকল্পনা করছি, সেটা ফাইনাল হলে জানানো হবে। সূত্র : কালের কণ্ঠ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

খাতভিত্তিক সুষম বণ্টন পাচ্ছে না মন্ত্রণালয়গুলো

প্রকাশের সময় : ০৪:০৪:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রক্ষেপণ অনুযায়ী বরাদ্দ পাচ্ছে না মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। কয়েকটি খাতে প্রক্ষেপণের তুলনায় কম বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আবার কয়েকটি খাতে প্রক্ষেপণের তুলনায় বরাদ্দের পরিমাণ অনেক বেশি। পরিকল্পনা কমিশনের সভার কার্যপত্রে এসব বিষয় উঠে এসেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলনকেন্দ্রে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বার্ষিক প্রক্ষেপণের তুলনায় এডিপিতে (২০২৩-২৪) প্রকৃত বরাদ্দ যেসব খাতে অনেক কম—স্বাস্থ্য খাতে ১১.১ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ৬.১৬ শতাংশ; কৃষি খাতে ১১.৫ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ৪.০৭ শতাংশ; শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে ১৬.৫ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ১৩.৩৮ শতাংশ; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১২.১ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ৭.১৮ শতাংশ এবং সামাজিক সুরক্ষা ৩.৫ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ১.২৬ শতাংশ।

এ ছাড়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বার্ষিক প্রক্ষেপণের তুলনায় এডিপিতে (২০২৩-২৪) প্রকৃত বরাদ্দ অনেক বেশি যেসব খাতে তার মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১৪.৮ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ১৬.৮৮ শতাংশ; পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ১৭.৪ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ২৮.৮৮ শতাংশ; গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাদি খাতে ২.৩ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ১০.২৮ শতাংশ। পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ খাতে ০.৫ শতাংশ প্রক্ষেপণের বিপরীতে এডিপিতে প্রকৃত বরাদ্দ ৩.৪২ শতাংশ।

জানা গেছে, কমিশন সভায় প্রধানমন্ত্রীকে এসব বিষয় জানানো হয়। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত না থাকলে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন ব্যাহত হতে পারে। যেসব সেক্টরে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রক্ষেপণ ও এডিপি বরাদ্দের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা রয়েছে, সেসব সেক্টরের অধীন মন্ত্রণালয়কে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতি রেখে নতুন প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, ১৫ বছরে দেশজ সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার লক্ষ্যে সরকারি বিনিয়োগ ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে সার্বিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে সরকার কৃচ্ছ্রসাধন নীতি অনুসরণ করছে। এর প্রতিফলন সরকারি বিনিয়োগেও দেখা যাচ্ছে। চলতি বছরের বাজেটে সরকারি বিনিয়োগ পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে।

এ ছাড়া উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তা মোকাবেলা করে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সরকারি বিনিয়োগের বর্তমান গতিধারা অব্যাহত রাখার বিষয়েও আলোচনা করেছে কমিশন। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ব্যয়ে সরকারি অংশ ও বৈদেশিক ঋণ বা অনুদানের অনুপাত পর্যালোচনায় দেখা যায়, জিওবি খাতের ব্যয় এবং বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের অনুপাত ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ৬০:৪০, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৫:৩৫-এ দাঁড়িয়েছে।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের অংশ কমবেশি একই পর্যায়ে রয়েছে। সহজ শর্তের ঋণপ্রাপ্তির সম্ভাবনা বজায় থাকা পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান দেশীয় উেসর ঋণের চেয়ে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। ফলে সহজ শর্তের বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান সংগ্রহের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে বলেছে কমিশন। এ ছাড়া এডিপিতে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের বরাদ্দ এবং প্রকৃত ব্যবহারের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে মূল বরাদ্দের ৬৪.১ শতাংশ ব্যবহার করা হয়েছিল, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান ব্যবহারের হার ছিল ৭২.৪ শতাংশ। বরাদ্দ ও প্রকৃত ব্যবহারের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৮ শতাংশ পার্থক্য রয়েছে। বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান ব্যবহারে আরো যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম বলেন, অনেক মন্ত্রণালয় বরাদ্দ কম পাচ্ছে, আবার কেউ বেশি পাচ্ছে। বিষয়টির সমন্বয় দরকার। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা একটি পরিকল্পনা করছি, সেটা ফাইনাল হলে জানানো হবে। সূত্র : কালের কণ্ঠ।